সৌদি আরবে কোনোভাবেই নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না মিডল ইস্ট রেস্পিরেটরি সিনড্রোম (মার্স) ভাইরাস। গত ২৪ ঘণ্টায় আরো ১০ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে সৌদি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এ নিয়ে মার্স ভাইরাসে দুই বাংলাদেশিসহ সৌদি আরবে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ১০২ জনে। এদের মধ্যে চলতি মাসেই মারা গেছেন ৩৯ জন, যা মোট মৃতের এক-তৃতীয়াংশ। বর্তমানে এই রোগে আক্রান্তের সংখ্যা মোট ৩৩৯ জনে দাঁড়িয়েছে এবং গত ২৪ ঘণ্টায় এই ভাইরাসে ১৬ জন নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন। ফলে সৌদি সরকার এবং মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো বর্তমানে বেশ উদ্বিগ্ন সময় পার করছে।

মার্স ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে নয় মাস বয়সী এক শিশুও রয়েছে।

আক্রান্তদের মধ্যে হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স এবং কর্মচারীরাও রয়েছেন। সদ্য শনাক্ত রোগীদের মধ্যে চারজন পেশায় চিকিৎসক (একজন সৌদি, একজন বাংলাদেশি, একজন মিসরীয় ও একজন সিরীয়) এবং ছয়জন ফিলিপিনো নার্স।

মার্স ভাইরাসটি উট থেকে ছড়াচ্ছে বলে প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হওয়া গেছে। এখনো পর্যন্ত মার্সের কোনো টিকা বা প্রতিষেধক আবিষ্কৃত হয়নি। তাই সবার সচেতনতাই এই ভাইরাস থেকে রক্ষা পাওয়ার এখন পর্যন্ত একমাত্র উপায়।

এদিকে সদ্য সৌদিফেরত এক মিসরীয় নাগরিকও মার্স ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানিয়েছে মিসরের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। ২৭ বছর বয়সী ওই রোগীকে কায়রোর একটি হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তার অবস্থা অপরিবর্তিত বলে জানানো হয়েছে।

সৌদিতে মার্স ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ক্রমেই বেড়ে যাওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করে এ ব্যাপারে পর্যাপ্ত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।

এই ভাইরাস মানুষের ঘনবসতি এলাকায়, কাছাকাছি সংস্পর্শ, হাঁচি-কাশি ইত্যাদির মাধ্যমে ছড়ায়। রোগের প্রধান লক্ষণ হচ্ছে একটানা সাত-আট দিনের জ্বর, কাশি, কফ ও শ্বাসকষ্ট। ভ্রমণকালীন কিংবা ফিরে এসে দুই সপ্তাহের মধ্যে এই উপসর্গগুলো দেখা দিলে দেরি না করে দ্রুত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

এই রোগের সংক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে জনসমাগমে সব সময় মাস্ক ব্যবহার করতে হবে, বাইরে থেকে এসে সাবান দিয়ে হাত ধুতে হবে, অপরিষ্কার হাত দিয়ে চোখ, নাক, মুখের ভেতরে স্পর্শ করা যাবে না। কারণ, জীবাণু হাত থেকে নাক, মুখ  ও চোখের মাধ্যমে শরীরে প্রবেশ করার সম্ভাবনা থাকে, অসুস্থ রোগীর খুব কাছে বেশিক্ষণ থাকা পরিহার করতে হবে।

এক বিবৃতিতে সৌদি আরবের ভারপ্রাপ্ত স্বাস্থ্যমন্ত্রী আবদেল ফকিহ জানান, মার্স ভাইরাতে আক্রান্তদের চিকিৎসাসেবা দিতে রিয়াদ, জেদ্দা ও পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশে তিনটি মেডিকেল সেন্টার খোলা হয়েছে।