সেমিফাইনালে জার্মানি, ফ্রান্সের বিদায়

ইউরোপীয় গৃহযুদ্ধে জার্মান আক্রমণের সামনে বাধা হতে পারলো না ফরাসি দেয়াল। ফের সৌরভ ছড়ানো হলো না ‘মার্সিডিজ বেঞ্জ’ রূপে ছুটতে থাকা করিম বেনজেমার।

মারকানায় ফুটবলের বিশ্বযুদ্ধে হিটলারের দেশের হাতে পতন হলো নেপোলিয়ন বোনাপার্টের জন্মভূমির। শুক্রবার শেষ আটের মহারণে ‘লেস ব্লুজ’রা অর্থাৎ, নীলরা- বেদনায় নীল হয়ে ব্রাজিল বিশ্বকাপের কোয়ার্টারেই থেমে গেল। এদিন ম্যাট হিউমেলসের একটি হেডই ফরাসিদের স্বপ্ন চুরি হয়। ১-০ গোলে হেরে ফুটবলযজ্ঞ থেকে বিদায় নেয় করিম বেনজেমা-প্যাট্রিক এভরারা। ফলে সেমিফাইনালের দুয়ারে পৌঁছে যায় তিনবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন জার্মানি।

ফ্রান্স আর জার্মানির মধ্যে ৪৫১ কিলোমিটারের সীমানা প্রাচীর রয়েছে। যার প্রত্যেক মিটারেই রয়েছে দুই দেশের রক্ত ঝরা বৈরিতা ও দ্বন্দ্বের আলাদা আলাদা ইতিহাস। তাছাড়া এই দুটি দেশের ঐতিহ্য বিনির্মাণেও রয়েছে অনেক উত্তেজক গল্প। সেজন্য মহারণের আগে ফ্রান্স অধিনায়ক হুগো লরিসকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, ‘চিন্তা হচ্ছে না, ইতিহাসের এমন ভার নিয়ে মাঠে নামতে হবে বলে? হুগো লরিস তো ফ্রান্স দলের অধিনায়কও। একটা গোটা দেশের স্বপ্নের বাহকের মতোই উত্তর দিলেন তিনি। জানালেন, ‘পুরনো পাতা দিয়ে কী হবে, শুক্রবার তো ইতিহাসের নতুন পাতা লিখব আমরা।’ তার পাশে বসা দিদিয়ের দেশম। পরিসংখ্যানের বিচারে ব্রাজিল বিশ্বকাপের সফলতম কোচ। তিনি অধিনায়কের কথায় ঘাড় নাড়িযে যেন অনুমোদন করলেন!

কিন্তু মাঠের বাইরের এই আত্মবিশ্বাস ময়দানি লড়াইয়ে পারফরম্যান্স রূপে অনূদিত করতে পারলেন না করিম বেনজেমা, অ্যান্টোনিও গ্রিজম্যান ও পল পগবারা। বরং এদিন খেলার শুরুতেই ম্যাচের লাগাম নিজেদের হাতে তুলে নেয় আলজেরিয়া ম্যাচের পর সমালোচনায় জেরবার হওয়া জার্মান যন্ত্ররা। খেলার ১২ মিনিটে ম্যাট হিউমেলসের গোলে শেষ চারের স্বপ্ন সোপান পায় ফিলিপ লাম বাহিনী। আর জয়সূচক সেই গোলটিও হয় দেখার মতো। ফ্রান্সের বক্সের সামনে ফ্রি-কিক পায় জার্মানি। বায়ার্ন মিউনিখের হটসসেশন টনি ক্রস ওই বলটিকেই থালায় সাজিয়ে দেয়ার মতো করে হিউমেলসের মাথায় ফেলেন। না, সুযোগ কাজে লাগাতে কোনো ভুল করেননি হালকা শুশ্রুমণ্ডিত বরুশিয়া ডিফেন্ডার। জোরালো হেডারে ফ্রান্স গোলকিপার হুগো লরিসকে ফাঁকি দিয়ে জাল কাঁপিয়ে দেন তিনি। ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে যায় জার্মানি। শেষ পর্যন্ত এই গোলটি দুই দলের ভাগ্যরেখা লিখে দেয়। জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে জার্মানি। অন্যদিকে গ্রুপ পর্ব ও দ্বিতীয় রাউন্ডে মনোমুগ্ধকর ফুটবল উপহার দিয়েও শেষ আট থেকেই দেশের বিমানে উঠতে হয় ফরাসিদের।



মন্তব্য চালু নেই