সেই সবকিছুই অস্বীকার করলেন জয়া!

দুই বাংলার জনপ্রিয় অভিনেত্রী জয়া আহসান। কলকাতার গুণী নির্মাতা সৃজিত মুখার্জি নির্মিত রাজকাহিনী চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন এ অভিনেত্রী। এ চলচ্চিত্রে জয়া পতিতার চরিত্রে অভিনয় করেছেন। সম্প্রতি মুক্তি পেয়েছে সিনেমাটি। মুক্তির পরই শুরু হয় যত বিপত্তি।

কলকাতার অভিনেতা ইন্দ্রনীল রায়ের সঙ্গে এ সিনেমার একটি দৃশ্যে জয়া সংলাপে যোনি, স্তন ইত্যাদি শব্দগুলো উচ্চারণ করেন। এ নিয়ে বাংলাদেশে গুজব রটে জয়াকে দেশ ছাড়ার ফতোয়া দিয়েছে উগ্রপন্থীরা। শোনা যায় এ সিনেমার পরিচালক সৃজিত জয়াকে বিয়ের প্রস্তাবও দিয়েছেন। এমন নানা কথা বাতাসে উড়লেও তখন এ বিষয়ে জয়ার কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। এমনকি পরেও না।

সম্প্রতি এ অভিনেত্রী ভারতের ‘আনন্দবাজার’ পত্রিকায় একটি সাক্ষাৎকার দিয়েছেন। সেখানে এ বিষয়ে খোলামেলা বলেছেন। অস্বীকার করেছেন বেশ কিছু অভিযোগ। তিনি স্পষ্ট বলেছেন, শিল্প হৃদয়ে লালন করেই সিনেমায় কাজ করেছেন। বিতর্কিত সংলাপযুক্ত দৃশ্য প্রসঙ্গে জয়া বলেন, ‘সংলাপটি ভীষণ পাওয়ারফুল। তবে আমি মনের দিক থেকে পরিস্কার ছিলাম। এ দৃশ্যের স্ক্রিপ্ট অনেকবার পড়েছিলাম। রিহার্সেলও করেছিলাম। আমি মনে করি, এ দৃশ্যটির প্রতি ফুল জাস্টিস করতে পেরেছি। এখানে আমি সৃজিতকেও কৃতিত্ব দেব। যেভাবে ও পুরো দৃশ্যের সংলাপগুলো লিখেছিল।’

তিনি আরো বলেন, ‘যারা এটা দেখে এত আপত্তি তুলছেন, তারা যদি পুরো সিনেমাটা দেখতেন তাহলে হয়তো এই দৃশ্যের মাহাত্ম্য বুঝতে পারতেন। তবে এর পাশাপাশি এটাও বলছি, বাংলাদেশে বহু মানুষ কিন্তু ওই দৃশ্যের জন্য আমাকে যথেষ্ট বাহবাও দিয়েছেন। সমালোচনার পাশাপাশি আমার কাছে সেটাও গুরুত্বপূর্ণ। আবারও বলছি, ওই দৃশ্যটা নিয়ে আমার কোনো অপরাধবোধ নেই।’

সিনেমাটি মুক্তির পর শুরু হয় বিতর্ক। এ নিয়ে জয়াকে অনেকে হুমকি দিয়েছিলেন। তার নামে কুৎসা রটিয়ে ইউটিউবে কিছু ভিডিও আপলোড করা হয়েছিল। জয়া এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘হ্যাঁ, তা আমি জানি। আজকে খোলাখুলি সব বলতে চাই। আমার নামে কোনো ফতোয়া জারি হয়নি। ওটা ভুল খবর ছিল। তবে প্রচুর বেনামী চিঠি, মেইল আর এসএমএস-এ হুমকি এসেছিল। আমি ভয়ও পেয়েছিলাম। বুঝতে পারছিলাম না কাকে বলব। তারপর বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে আমাকে প্রোটেকশন দেওয়া হয়। তার জন্য আমি কৃতজ্ঞ।’

যে দিন আপনাকে এ ধরণের হুমকি দিয়ে এসএমএস পাঠানো হয় সে দিন বিকেলেই ঢাকাতে একজন ব্লগারকে খুন করা হয়। এমন অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে জয়া বলেন, ‘ওই সময় সরকার আমাকে প্রোটেকশন দিয়েছিল বলে অনেকটা নিশ্চিন্ত ছিলাম। তবে এ কাজটা যারা করেন তারা কিন্তু একটা ক্ষুদ্র অংশ। আমার বক্তব্য হলো, কোনো জিনিস কারো পছন্দ না-ই হতে পারে কিন্তু সেটা নিয়ে তো আলোচনা করা যায়। আমরা তো স্বাধীন, গণতান্ত্রিক দেশে থাকি। যেখানে সব রকম মানুষ বাস করেন। সবার মত যে মিলতে হবে, তা তো নয়। ইউনিটি ইন ডাইভার্সিটি-টাই তো মূলমন্ত্র। বাকি জিনিসগুলো কী খুব প্রয়োজন?’

‘রাজকাহিনী’ সিনেমায় অভিনয় করে যথেষ্ট সমালোচিত হয়েছেন আপনি। কিন্তু এ সিনেমার কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেছেন ‍ঋতুপর্ণা। সব ক্রেডিট নিলেন ঋতুপর্ণা। মাঝখান থেকে যত বিতর্কিত হলেন আপনি। এমন প্রশ্নের উত্তরে জয়া বলেন, ‘আমার কপালে কী জুটবে, সেটা তো আমি ছবি বানানোর আগে বুঝিনি। সত্যি বুঝিনি। আমি একটা মাল্টি-স্টার ছবিতে কাজ করেছি। ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে ছিল। তিনি তো লাইমলাইটটা পাবেন তাতে সন্দেহের কিছু নাই। চ্যালেঞ্জটা অভিনেত্রী হিসেবে তখনই আসবে যখন ছোট রোলেও দর্শক আপনাকে মনে রাখবে। সে দিক থেকে আমি খুব লাকি।’

নির্মাতা সৃজিত জয়াকে বিয়ে করতে চান এমন খবরেও মুখরিত ছিল মিডিয়া অঙ্গন। সত্যি তিনি বিয়ে করতে চান কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে জয়া বলেন, ‘আমাকে বিয়ে করতে চেয়েছিল কি না তা জানি না। তবে ও জিজ্ঞেস করেছিল, কবে আমি বিয়ে করব? বিয়ে নিয়ে আমার মত কী? এই আর কী…।’



মন্তব্য চালু নেই