সিম কার্ডের দিন শেষ, আসছে ই-সিম

স্মার্টফোন প্রযুক্তির নতুন নতুন উদ্ভাবনে একে একে হারিয়ে গেছে অনেক কিছুই। হার্ডওয়্যারের আধুনিকায়নে দীর্ঘাকৃতির হ্যান্ডসেট এখন সহজেই হাতের মুঠোয়। আর সর্বশেষ আধুনিকায়নের পরিকল্পনা ঝুঁকিতে ফেলেছে হ্যান্ডসেটের ‘প্রাণ’।

প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সিম কার্ডের দিন বুঝি শেষ হতে যাচ্ছে। কারণ বিকল্প হিসেবে ই-সিম বা ইলেক্ট্রনিক সিম কার্ডের বিষয়ে কাজ শুরু করেছে হ্যান্ডসেট প্রস্তুতকারী জায়ান্ট কোম্পানিগুলো। আর এতে সিম কার্ড ‘কফিনে’ ঢুকতে যাচ্ছে বলেই ধারণা তাদের।

হ্যান্ডসেটের মধ্যে সরাসরি সিম কার্ড ব্যবহার না করে এতে ই-সিম ব্যবহারের বিষয় ইতোমধ্যে জিএসএমএ’র (গ্রুপ স্পেশাল মোবাইল অ্যাসোসিয়েশন) সঙ্গে আলোচনা করেছে প্রযুক্তি জায়ান্ট অ্যাপল ও স্যামসাং।

এতে গ্রাহকরা কোনো ধরনের ঝামেলা ছাড়া সহজেই অপারেটর পরিবর্তন করতে পারবেন বলে মনে করছে মোবাইল টেলিকম ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিত্বকারী জিএসএমএ।

হ্যান্ডসেটের জন্য স্ট্যান্ডার্ড সিম (সাবস্ক্রাইবার আইডেন্টি মডিউল) তৈরিতে চুক্তির বিষয়টি এখন ঘোষণা মাত্র বলে জানিয়েছেন জিএসএমএ’র প্রধান নির্বাহী ‍অ্যানি বোভার্তো।

প্রযুক্তি বিষয় সাইট টেকস্পট’র এক প্রতিবেদনে বলা হয়, স্মার্টফোন বা ট্যাবলেটে ই-সিম সংযুক্ত করা থাকবে। এক্ষেত্রে হ্যান্ডসেট প্রস্তুতকারকদের সিম কার্ডের জন্য আলাদা কোনো স্লট দিতে হবে না।

এ সংক্রান্ত কারিগরি সহযোগিতার বিষয়ে এখন পর্যন্ত চূড়ান্ত কোনো আলোচনা না হলেও, আগামী প্রজন্মের ফোন হবে ই-সিমের সে বিষয়ে নিশ্চিত করে বলা যায়।

মোবাইল ইন্ডাস্ট্রিতে প্রায় ২৫ বছর আগে আমূল পরিবতর্ন এনেছে সিম কার্ড। সে সময়ের দীর্ঘাকৃতির হ্যান্ডসেটের আকার এখন অনেক ছোট হয়ে আসলেও তেমন কোনো পরিবর্তন আসেনি সিম কার্ডের আকারে।

তবে বহু আগে ই-সিমের ধারণ ‍দিয়েছিলেন ক্যামব্রিজ বিশ্ববিল্যায়ের ড. মার্কাস কুন। তিনি বলেছিলেন, শিগগিরই মোবাইল নেটওয়ার্কে সিম কার্ডের পরিবর্তে পাসওয়ার্ড বা কিউআর কোড কিংবা থ্রিডিবার কোড স্থান করে নেবে।

এক্ষেত্রে পাসওয়ার্ড বা উন্নত সফটওয়্যার ব্যবহারকারীদের জন্য সহজ হবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

১৯৯১ সালে জার্মানির স্মার্ট-কার্ড মেকার জিসিক্কি অ্যান্ড ডেভ্রিয়েন্ট সর্বপ্রথম ফিনিশ অপারেটর রেডিওলিঞ্জার কাছে তিনশ’টি সিম বিক্রি করে। প্রথম সিম কার্ড ক্রেটিড কার্ড আকৃতির হলেও পরে তার ছোট হয়ে আসে।

বর্তমানে হ্যান্ডসেটগুলোতে মাইক্রো সিম ব্যবহৃত হলেও অ্যাপলসহ কয়েকটি কোম্পানির হ্যান্ডসেটে ন্যানো সিম ব্যবহৃত হচ্ছে। যা শিগগিরই দখল করে নিচ্ছে ই-সিম।



মন্তব্য চালু নেই