সিটি নির্বাচন আ.লীগের অস্তিত্ব রক্ষার

ঢাকা ও চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনকে আওয়ামী লীগের অস্তিত্ব রক্ষার নির্বাচন হিসেবে অভিহিত করেছেন দলের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ এমপি।

মঙ্গলবার বিকেলে নগরীর একটি কমিউনিটি সেন্টারে আয়োজিত চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামীলীগের যৌথ বর্ধিত সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। চট্টগ্রামে আওয়ামী লীগ সমর্থিত মেয়র প্রার্থী আ জ ম নাছির উদ্দিনের সমর্থনে এ সভার আয়োজন করা হয়।

হাছান মাহমুদ বলেন, ‘চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন এবং ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচন স্থানীয় সরকার নির্বাচন হলেও এতে জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু থাকবে। তাই আমরা লক্ষ্য স্থির করেছি। এই তিনটি স্থানীয় সরকার নির্বাচনে আমাদের প্রার্থী বিজয়ী হলে শেখ হাসিনা তাঁর শান্তি, সমৃদ্ধি এবং জঙ্গীবাদমুক্ত বাংলাদেশ করতে একধাপ এগিয়ে যেতে সহায়ক হবে। তাই এই নির্বাচনকে আমাদেরকে অস্তিত্ব রক্ষার চ্যালেঞ্জ হিসেবে গ্রহণ করতে হবে।’

সভার প্রধান অতিথি আওয়ামীলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে শেখ হাসিনার মনোনীত প্রার্থী আ জ ম নাছির উদ্দিনকে বিজয়ী করতে আওয়ামীলীগের সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে ভোটারদের ঘরে ঘরে গিয়ে ভোট চাইতে হবে। মহিউদ্দিন চৌধুরী চট্টগ্রাম মহানগরীর যে বৈপ্লবিক উন্নয়নের ধারা সূচনা করেছিলেন এবং শিক্ষা, স্বাস্থ্য, যোগাযোগসহ বিভিন্ন সেবামূলক কাজে নজিরবিহীন সাফল্য অর্জন করেছিলেন বিগত ৫ বছরে সেই উন্নয়ন ও সাফল্যের ধারা বিলীন হয়ে গেছে। এই সাফল্য ও উন্নয়নের ধারাকে পুন:রুদ্ধার করতে নাছির কে জয়যুক্ত করতে হবে। চট্টগ্রমাকে মেগা সিটিতে পরিণত করার তার অঙ্গীকার বাস্তবায়িত হলে চট্টগ্রাম সিঙ্গাপুর ও মালেয়শিয়ার সমতুল্য হবে।’

সভাপতি বক্তব্যে মহিউদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘আমিও প্রার্থী হতে চেয়েছিলাম। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা আমার স্নেহভাজন রাজনৈতিক সহকর্মী আ জ ম নাছিরকে মেয়র পদে মনোনয়ন দেয়ায় আমি তার পক্ষে প্রার্থীতা প্রত্যাহার করে নিয়েছি। তাকে বিজয়ী করার জন্য আমার সামর্থ্য, ক্ষমতা ও মেধাকে কাজে লাগাতে আমি বদ্ধ পরিকর। নাছিরকে বিজয়ী করতে হলে আমাদের ঘরে বসে থাকলে চলবে না। প্রতিটি মুহূর্তকে কাজে লাগিয়ে ভোটারদের আমাদের পরিকল্পনা ও কর্মসূচীর সাথে সম্পৃক্ত করতে হবে।’

তিনি আরো বলেন, ‘আমি অত্যন্ত আশাবাদী আমি মেয়র থাকাকালীন যে কাজগুলো অপূর্ণ নাছির বিজয়ী হয়ে তার যোগ্যতা ও মেধাকে কাজে লাগিয়ে সেই অসম্পূর্ণ কাজ সম্পূর্ণ করবে। আজ আওয়ামীলীগে কোন বিভেদ ও দ্বন্দ্ব নেই। আমরা যেকোন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় ঐক্যবদ্ধ থেকে জননেত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করে জাতিকে সংশয় মুক্ত করব এবং যেকোন অপশক্তির মোকাবেলায় মহানগর আওয়ামীলীগ ঐক্যবদ্ধভাবে রাজপথে থাকবে।’

আওয়ামীলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য সাবেক গণপরিষদ ইসহাক মিয়া বলেন, ‘মহিউদ্দিন চৌধুরী উদারতার পরিচয় দিয়ে নাছিরকে মেয়র পদে বিজয়ী করার জন্য যে গুরু দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়েছেন তা একজন সফল রাজনীতিবিদ হিসেবে তিনি পরিচয় দিয়েছেন।’

মেয়র পদপ্রার্থী আ.জ.ম নাছির উদ্দিন বলেন, ‘আমি আওয়ামী পরিবার এবং এ নগরবাসীর কাছ থেকে যে ভালোবাসা পেয়েছি আজ আমি তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। আমি বিশ্বাস করি আমার রাজনৈতিক গুরু এবং সংগঠনের সভাপতি সাবেক ১৭ বছরের সফল সিটি মেয়র আলহাজ্ব এ.বি.এম মহিউদ্দিন চৌধুরী আমার পাশে দাঁড়ানোতে ইনশাল্লাহ নির্বাচনী সাফল্য আওয়ামীলীগের ঘরে উঠবে। আমি ভোটারদের রায় পেলে নগরবাসীর প্রধান সমস্যা জলবদ্ধতা নিরসনকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে তা সমাধান করব।’

তিনি বলেন, ‘এই নগরী নানাভাবে অবহেলিত। জননেত্রী শেখ হাসিনাকে চট্টগ্রামবাসী আশা-আকাঙ্খার কথা তুলে ধরে তাঁর মাধ্যমে এই নগরীকে অবশ্যই একটি মেগাসিটিতে পরিণত করব।’

চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমানের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও সাবেক রাষ্ট্রদূত আলহাজ্ব নূর আলম চৌধুরী, দক্ষিণ জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আলহাজ্ব মোছলেম উদ্দিন আহমেদ, আওয়ামীলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আমিনুল ইসলাম আমিন, সাবেক মন্ত্রী মহানগর আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি ডা. আফসারুল আমীন এম.পি, উত্তর জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদ প্রশাসক এম.এ.ছালাম, মহানগর আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি আলহাজ্ব নঈম উদ্দিন চৌধুরী, আলতাব হোসেন চৌধুরী বাচ্চু, দক্ষিণ জেলা আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি এস.এম আবুল কালাম, মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী, উত্তর জেলার সহ সভাপতি আলহাজ গিয়াস উদ্দিন, চট্টগ্রাম-১১ আসনের এম.পি আবদুল লতিফ, পটিয়া থেকে নির্বাচিত সাংসদ ছামসুল হক চৌধুরী, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আবদুস ছালাম।



মন্তব্য চালু নেই