সাহস দেখিয়ে ব্যাংকের ভেতর এক ডাকাতকে ঝাপটে ধরতেই গুলিতে ঝাঝরা পলাশ

সাহস দেখিয়ে ডাকাতদলের এক সদস্যকে জাপটে ধরাতেই তাদের গুলিতে প্রাণ হারালেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সময়ের তুখোর ছাত্রনেতা শাহাবুদ্দীন মোল্লা ওরফে পলাশ (৫২)। ক্যাম্পাসের প্রিয়মুখ হিসেবে যিনি ‘ছোট পলাশ’ নামে পরিচিত ছিলেন। মঙ্গলবার দুপুরে বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংকের আশুলিয়া শাখায় টাকা তুলতে গিয়ে ডাকাতের গুলিতে নিহত পলাশ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের ১৪তম ব্যাচের ছাত্র। তিনি মীর মশাররফ হোসেন হলের আবাসিক ছাত্র ছিলেন।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার দুপুরে সাভারে আশুলিয়ার ওই ব্যাংকে নিজের অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তুলতে যান পলাশ। এর কিছুক্ষণ পরই একদল ডাকাত গুলি করতে করতে ব্যাংকের ভেতরে প্রবেশ করে। গেটে নিরাপত্তাকর্মী বাধা দিলে তাকে গুলি করে ব্যাংকের ভেতরে প্রবেশ করে ডাকাতরা। ভেতরে ঢুকেই এলোপাতাড়ি গুলি চালায় তারা। এতে গুলিবিদ্ধ হয়ে মেঝেতে লুটিয়ে পড়েন শাখা ব্যবস্থাপক ও ক্যাশিয়ার। এ সময় অন্যরা এগিয়ে আসতে চাইলে ডাকাতরা গুলি ও বোমা মেরে লুটপাট শুরু করে। চোখের সামনে এসব সহ্য করতে না পেরে, স্বভাবসুলভ প্রত্যয়ে প্রতিবাদী হয়ে ওঠেন পলাশ। সর্বশক্তি দিয়ে জাপটে ধরেন এক ডাকাত সদস্যকে।

এ সময় তাকে খুব কাছ থেকে কয়েক রাউন্ড গুলি করে আরেক ডাকাত সদস্য। এতে তাৎক্ষণিকভাবে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন পলাশ।পরে আশপাশের লোকজন ও পুলিশ এসে তাকে উদ্ধার করে সাভার এনাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই সময়কার একজন ছাত্র জানান, পলাশ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র থাকাকালে ছাত্র সমাজের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। অসম্ভব সাহসী ছিলেন তিনি। চোখের সামনে কখনোই কোনো অন্যায় তিনি প্রশ্রয় দিতেন না। ঝাঁপিয়ে পড়তেন অন্যায়ের বিরুদ্ধে।

ওই ছাত্র আরো জানান, নিহত সাহাবুদ্দিন পলাশ কমার্স ব্যাংকের একজন গ্রাহক এবং স্থানীয় গ্লোরিয়াস প্রিন্টার্সের মালিক। তিনি সাহস করে এক ডাকাতকে জাপটে ধরেন। তখন ডাকাতরা তাকে গুলি করে।

সবশেষ খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এনাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে পলাশের লাশ নিয়ে পরিবারের সদস্যরা গ্রামের বাড়ি ঝিনাইদহ জেলার শৈলকুপা উপজেলার গাড়াগঞ্জ ইউনিয়নের লক্ষণদিয়ায় রওনা হয়েছে।



মন্তব্য চালু নেই