সাবধান! এবার লাইক বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়ে ফেসবুক হ্যাক

ফেসবুকে নিজে পোস্টের লাইক বাড়ানোর ফাঁদে পা দিয়ে প্রতারিত হচ্ছেন অনেকে। অনেকে হারাচ্ছেন তাদের নিজের আইডি। ইনবক্সে আসা লাইক বাড়ানোর লোভনীয় প্রস্তাব সম্বলিত লিংকটিতে ক্লিক করে হ্যাকের কবলে পড়ছেন ফেসবুক ব্যবহারকারীরা।

ফেসবুক একটি জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম। দিন দিন এর জনপ্রিয়তা বাড়ছে। অনেকে চান, নিজের পোস্ট করা স্ট্যাটাস বা ছবিতে বেশি বেশি লাইক ও কমেন্ট পড়ুক বা শেয়ার হোক। অনেকে আবার স্ট্যাটাস দিয়ে বা ছবি আপলোড করে লাইক-কমেন্ট চেয়ে বসেন। তা ছাড়া অনেকেই নিজের ছবি বা লিংক শেয়ার বা পোস্টের মাধ্যমে ফেসবুকে রেখে দেন। কিন্তু আইডি হ্যাক হয়ে গেলে স্মৃতি হারিয়ে বিষণ্ন হওয়া ছাড়া আর উপায় থাকে না।

হ্যাক হওয়া বা ইনবক্সে অটোলাইকের লিংক পাওয়া কয়েকজনের সঙ্গে এ প্রতিবেদেকের কথা হয়। তারা জানান, হ্যাকাররা বেশ পুরনো আইডি টার্গেট করেই লাইক বাড়ানোর লোভ দিয়ে একটি লিংক পাঠায়। ওই লিংকে ক্লিক করে কয়েকজন সংবাদকর্মীও হ্যাকের কবলে পড়েছেন।

তুহিন নামের এক সংবাদকর্মী জানান, তার ইনবক্সে লাইক বাড়ানোর জন্য প্রস্তাব নিয়ে একটি লিংক আসে। লিংকটা আসে তার ফ্রেন্ডলিস্টে থাকা আরেকজন সংবাদকর্মীর আইডি থেকে। তিনি বিষয়টি বোঝার জন্য ওই লিংকে ক্লিক করেন। এরপর লগইন করতে বলা হয়। লগইন করার পর আর আইডি খুঁজে পাননি। অনেকক্ষণ চেষ্টা করে আইডি খুঁজে না পেয়ে ধারনা করছেন আইডি হ্যাক হয়ে গেছে।

তুহিন বলেন, আইডিটা আমার অনেক পুরনো। অনেক ফ্রেন্ড ছিল, অনেক ডকুমেন্ট ছিল। অনেক প্রতিথযশা সাংবাদিক ও বিশিষ্ট ব্যক্তি ফেন্ডলিস্টে ছিলেন। হ্যাক হওয়ায় সব হারিয়ে ফেলেছি। পরে নতুন আইডি খুলেছি।

আরেক সাংবাদিক রবিউল ইসলাম রবি বলেন, আমার আইডিটাও একইভাবে হ্যাক হয়। আমি তাৎক্ষণিকভাবে অফিসের আইটি বিভাগকে জানালে তারা আইডিটি উদ্ধার করে দেয়।

তিনি জানান, তার ইনবক্সে যে লিংকটি এসেছিল, তা বন্ধুদের ইনবক্সেও চলে গেছে। যারা লিংকে ক্লিক করে লগইন করেছেন, তারাই আইডি হারিয়েছেন।

৪ ফেব্রুয়ারি জাতীয় প্রেসক্লাবে এ প্রতিবেদকের সঙ্গে দেখা হয় গাইবান্ধার স্থানীয় সাংবাদিক জিল্লুর রহমান পালাশের। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, ভাই ফেসবুক আইডিটা আর পাওয়া যাচ্ছে না।
পলাশের আইডি থেকে আগেই এই লিংকে প্রতিবেদকের ইনবক্সে আসে। সঙ্গে সঙ্গে ওই লিংকটি ডিলিট করে দেওয়া হয়। কারণ তখনই বোঝা গেছে, পলাশের আইডি হ্যাক হয়েছে। তার আগে তুহিন ও রবিউল ইসলাম রবির আইডি থেকে একই লিংক এ প্রতিবেদকের ইনবক্সে আসে। কিছুক্ষণ পর তুহিন ও রবিউলের কাছ থেকে জানা যায়, তাদের আইডি হ্যাক হয়েছে। রবিউলেরটা উদ্ধার করা গেলেও তুহিনের আইডি উদ্ধার করা যায়নি।

আরেক সাংবাদিক রেজাউল করিম হীরার ইনবক্সে একই লিংক আসে। তিনি ক্লিক না করে ডিলিট করে দিয়েছেন। ফলে তার আইডি হ্যাক হয়নি। তিনি ফেসবুক ব্যবহারকারীদের উদ্দেশে বলেন, ‘আপনার বন্ধুর ফেসবুক আইডি থেকে আপনার ইনবক্সে আসতে পারে অটোলাইক বাড়ানোর একটি লিংক। আপনি মনে করতে পারেন, বন্ধু পাঠিয়েছে, ক্লিক করে দেখি। ভুলেও ওই লিংকে ক্লিক করবেন না। কারণ আপনরা বন্ধুর আইডি কেউ হ্যাক করে আপনাকে ওই লিংকটি পাঠিয়েছে। আপনি ক্লিক করে লগইন করলেই আপনার আইডিও হ্যাক হবে।’



মন্তব্য চালু নেই