সাত খুন মামলার আপিল: অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পেপারবুক তৈরির নির্দেশ

নারায়ণগঞ্জের আলোচিত সাত খুন মামলার ঘটনায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের ডেথ রেফারেন্স ও আপিল শুনানির জন্য অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পেপারবুক তৈরির নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা। রবিবার (২৯ জানুয়ারি সকালে এ সংক্রান্ত নির্শেনায় প্রধান বিচারপতি স্বাক্ষর করেছেন বলে জানিয়েছেন, হাইকোর্ট বিভাগের অতিরিক্ত রেজিস্ট্রার (প্রশাসন ও বিচার) সাব্বির ফয়েজ।

এর আগে গত ২২ জানুয়ারি এই মামলার ডেথ রেফারেন্সের কপি হাইকোর্টে পৌঁছে। নারায়ণগঞ্জের জেলা ও দায়রা জজ আদালতের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রায়ের কপি, জুডিশিয়াল রেকর্ড, সিডিসহ বিভিন্ন নথিপত্র সংশ্লিষ্ট নথিপত্র হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় জমা দেন।

ডেথ রেফারেন্সের নথি হাইকোর্টে পৌঁছার পর সাব্বির ফয়েজ জানিয়েছিলেন, ১৬৩ পৃষ্ঠা করে পৃথক দুটি রায় ডেসপাস (আদান-প্রদান) শাখায় এসেছে। সেখান থেকে রেজিস্ট্রার জেনারেলের কার্যালয় হয়ে নথিপত্র ডেথ রেফারেন্স শাখায় যাবে।

আর অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম সাংবাদিকদের বলেন, এখন এটা ফৌজদারি শাখায় পাঠানো হবে। তারা এটা পরীক্ষা নীরিক্ষা করে পেপারবুক তৈরির জন্য পাঠাবেন। পেপারবুক তৈরি হওয়ার পর এ মামলা দ্রুত শুনানিতে আবেদন করা হবে।

রায় প্রকাশের পর সংবাদ সম্মেলনে নারায়ণগঞ্জের পাবলিক প্রসিকিউটর ওয়াজেদ আলী খোকন বলেন, রায়ের পর্যবেক্ষণে বলা হয়েছে, র‌্যাব একটি সুশৃঙ্খল বাহিনী, র‌্যাবের সুনাম ক্ষুণ্ণ হয়নি, র‌্যাব এখনো আগের মতই রয়েছে। জঙ্গি ও সন্ত্রাস দমন, মাদক নির্মূলে র‌্যাবের অনেক সুনাম রয়েছে। বাংলাদেশে র‌্যাবের গৌরবোজ্জ্বল ভুমিকা রয়েছে। জাতির ক্লান্তিলগ্নে র‌্যাব কাজ করেছে। কিন্তু র‌্যাবের ক’জন উচ্চাবিলাসী কর্মকর্তার কারণে এই সাত খুনের ঘটনা ঘটেছে, যা দুঃখজনক। ভবিষ্যতে যেন এ ধরনের উচ্চাবিলাসী সদস্য নিয়োগ করা না হয় এবং নিয়োগের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করা হয়।’

তিনি আরও বলেন, রায়ের পর্যালোচনায় নূর হোসেন ও নজরুল দুজনই সন্ত্রাসী। দুজনেরই বিশাল বাহিনী ছিল। তাদের মাঝে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে নানা বিরোধ ছিল। সেই বিরোধের কারণেই নজরুল ছিল নূর হোসেনের টার্গেট। আর তাদের এ কারণেই আরো ছয়জন নিরীহ মানুষকে হত্যা করা হয়। কিন্তু নজরুল ছিল নূর হোসেনের একক টার্গেট।

উল্লেখ্য, গত ১৬ জানুয়ারি নারায়ণগঞ্জের চাঞ্চল্যকর সাত খুনের মামলার রায় প্রদান করেন নারায়ণগঞ্জের জেলা ও দায়রা জজ সৈয়দ এনায়েত হোসেন। মামলার প্রধান আসামি নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের (নাসিক) সাবেক কাউন্সিলর নূর হোসেন ও র‌্যাবের বরখাস্তকৃত তিন কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কর্নেল তারেক সাঈদ মোহাম্মদ, মেজর আরিফ হোসেন, লেফটেন্যান্ট কমান্ডার মাসুদ রানাসহ ২৬ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেন আদালত। এ মামলার ৩৫ আসামির মধ্যে বাকি ৯ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

সাজাপ্রাপ্ত ৩৫ আসামির মধ্যে ১২ জন পলাতক। গ্রেফতারকৃত ২৩ জনের মধ্যে ১৮ জনকে নারায়ণগঞ্জ জেলা কারাগারে ও ৫ জন গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে রাখা হয়েছে।



মন্তব্য চালু নেই