সাতক্ষীরায় মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশন ও ড্রাইভিং লাইসেন্সের ফি জমা দিতে মোটরযান মালিকদের ভোগান্তি

আব্দুর রহমান, সাতক্ষীরা : সাতক্ষীরায় মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশন ও ড্রাইভিং লাইসেন্সের ফি জমা দিতে গিয়ে মোটরযান মালিকেরা ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি বিআরটিএ’র বিভিন্ন ফি সোস্যাল ইসলামী ব্যাংকে জমা দিতে চরম ভোগান্তি ও হয়রানী অভিযোগ উঠেছে। ফলে অনেকে মটর সাইকেলের লার্নার ও পরিবহন মালিকরা সময়মত কাগজপত্র নবায়ন করতে পারছেন না। সরকারও বঞ্চিত হচ্ছে অধিক রাজস্ব আদায় থেকে। ব্যাংকের অসাধু কর্মকর্তা ও দালাল চক্র দ্বারা বিকল্প পথে এসব টাকা জমা নিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

সূত্রে জানা গেছে, ‘সাতক্ষীরা বিআরটিএ’র টাকা (ফি) গ্রহনের জন্য সোস্যাল ইসলামী ব্যাংক সাতক্ষীরা শাখায় সপ্তাহে তিন দিন (সোম, মঙ্গল ও বুধবার) টাকা জমা দিতে গ্রাহকরা নানা ধরনের হয়রাণী ও ভোগান্তির স্বিকার হতে হচ্ছে। এছাড়া গ্রাহকদের অবজ্ঞা-অবহেলা ও অসৎ আচারণ করছে বলে অভিযোগ রয়েছে।’

গ্রাহকদের অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ‘ব্যাংকে বিআরটিএ’র টাকা জমা দিতে গেলেই বলা হয় সার্ভারে কাজ হচ্ছেনা, ইন্টারনেট স্প্রিড নেই। সকাল ১০টায় গেলেও বলা হয় সিরিয়্যাল শেষ, আজ পারবেন না। যারা স্লীপ গ্রহণ করতে পারেন তাদেরকেও অনেক দেরীতে একজন একজন করে ডেকে নিয়ে টাকা জমা নেয়া হয়। আবার অতিরিক্ত টাকা দিয়ে দালালদের মাধ্যমে বিকল্প পথে সহজে টাকা জমা হয়ে যাচ্ছে।’

সাতক্ষীরা সরকারি কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অনার্স চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী বসুদেব মন্ডল জানান, ‘সোস্যাল ইসলামী ব্যাংকে লার্নার করতে বিআরটিএ’র টাকা জমা দিতে গেলে তিনদিন ধরে কোন সিরিয়াল পাইনি। বুধবার সিরিয়াল পেলেও দীর্ঘ সময় দাড়িয়ে থেকেও ব্যাংক কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারণে টাকা জমা দিতে পারিনি। ব্যাংক কর্তৃপক্ষ বলেন ওটা ব্যাংকের কোন সিরিয়াল না। আপনাকে লাইনে দাড়িয়ে থেকে টাকা জমা দিতে হবে।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক গ্রাহক বলেন, ‘ব্যাংকের অসাধু কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় দালাল চক্র ভোর থেকে সিরিয়াল বিক্রি করে। তাই সিরিয়্যাল পেতে হলেও অতিরিক্ত টাকা দিতে হয়। বিআরটিএ’র টাকা জমা দিতে সোস্যাল ইসলামী ব্যাংকের কর্মকর্তাদের স্বজনপ্রীতিরও অভিযোগ উঠেছে। এছাড়া বিকাল ৩টার পর এসে ৫০-১০০ টাকা দিলে ফি জমা নেওয়া হয় বলে অভিযোগ রয়েছে।’

এ ব্যাপারে সাতক্ষীরা বাস-মিনিবাস মালিক সমিতি’র সভাপতি অধ্যক্ষ আবু আহমেদ বলেন, ‘সোস্যাল ইসলামী ব্যাংকে বিআরটিএ’র টাকা জমা দিতে পরিবহন মালিকেরাও ভোগান্তির স্বিকার হচ্ছে। আমি এর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং অবিলম্বে এ ভোগান্তি লাঘবে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করছি।’

এব্যাপারে বিআরটিএ সাতক্ষীরা সার্কেলে’র সহকারী পরিচালক প্রকৌশলী তানভীর আহমেদ চৌধুরী বলেন, ‘সোস্যাল ইসলামী ব্যাংকে বিআরটিএ’র টাকা জমা দিতে গিয়ে গ্রাহকরা যে হয়রাণী ও ভোগান্তির স্বিকার হচ্ছে সেটি আমিও শুনেছি। উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে বিষয়টি জানানো হবে এবং সমস্যার সমাধান করা হবে। এছাড়া দ্রুত জেলা প্রশাসনের কার্যালয়ে টাকা জমা দেওয়ার একটি বুথ খোলা হবে। তখন আর গ্রাহকদের ভোগান্তির স্বিকার হতে হবেনা।’



মন্তব্য চালু নেই