সাগরের যাদুর স্কুল, এক যুবক একাই আলো দেখাচ্ছেন হাজার মানুষকে!

আমরা একটা সংবাদ করেছিলাম “শাহবাগ মোড়ে যুবকের অবস্থান। পারিবারিক অশান্তির উৎস স্টার জলসা, স্টার প্লাস, জি বাংলা বন্ধ করা হোক!” এই শিরোনামে। আমাদের একজন পাঠক তার দুইটা ছবি পাঠিয়েছিলেন। চেহারা দেখে কলেজ পড়ুয়াই মনে হয়েছিল। বাংলাদেশের সংস্কৃতির বিশুদ্ধতা রক্ষা, পারিবারিক বন্ধন অটুট রেখে সামাজিক সম্প্রতীর ঐতিহ্য ধরে রাখতে তিনি একাই দাঁড়িয়েছেন প্ল্যাকার্ড হাতে অপসংস্কৃতির আগ্রাসন রুখতে।

আচ্ছা ভাবুন তো প্রতিদিন খাবারের সঙ্গে ফরমালিন খাচ্ছেন। সড়ক, লঞ্চ দূর্ঘটনায় প্রান যাচ্ছে কত মানুষের। সংবাদের পাতায় সেগুলো দেখে আপনার খারাপ লাগছে, মনে ক্ষোভ জন্মাচ্ছে। কি করেছেন আপনি? বড়জোর অফিসের বা পরিবারের আড্ডায় নিজের মতামত তুলে ধরেছেন, আইন প্রয়োগকারী সংস্থার চৌদ্দ গুষ্টি উদ্ধার করেছেন। প্রশাসনের সমালোচনা করেন সবসময়। বড়জোর ফেসবুকে একটা স্ট্যাটাস দিয়েছেন। কখনো পথে নেমেছেন এসব অনিয়মের প্রতিবাদে, প্রতিকারে?

একটা কলেজ ছাত্র কি করে আপনার পরিবারে? বা আপনি একজন কলেজ ছাত্র হলে কি করেন সাধারনত? এমন শত অনিয়ম দেখেন, কখনো নিজে শিকার হন বা কাউকে শিকারে পরিনত করেন। সারাদিন অনেক সময় চলে যায় আপনার আড্ডায়। মানুষের জন্য কি কোনই দায়িত্ব আপনার নেই? সব দায়িত্ব কেবল কর্তৃপক্ষের?

তাহলে দেখুন আপনার আমার এই মানসিকতার বাইরে গিয়ে এক কলেজ ছাত্র কি দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। আপনি স্তম্ভিত হয়ে যাবেন। বিনা স্বার্থে নিজের বিবেকের তাড়নায়, নিজের খরচের টাকা বাঁচিয়ে তিনি মানুষকে সচেতন করার চেষ্টা চালাচ্ছেন। পথে তাকে একা প্ল্যাকার্ড হাতে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে কেউ যদি অবহেলা করে হাসে তবে সেটা সেই ব্যক্তির দৈন্যতা। কাউকে না কাউকে তো এগিয়ে আসতে হবে। সমাজের সকল অনিয়ম দূর করার শুভারম্ভ একাই শুরু করেছেন একালের এই তরুন মুক্তিযোদ্ধা। তেঁজগাও কলেজের মাস্টার্স প্রথম বর্ষের ছাত্র মোকলেসুর রহমান সাগর (২৭) বিবেকের তাড়নায় পড়ে একাই এই কর্মসূচী পালন করেন।

ছেলেটির নাম সাগর। কিশোরগঞ্জের ভৈরবের জামালপুর টেকনিক্যাল স্কুল ও পরে মতিঝিল টি এন্ড টি কলেজে পড়েশুনা করে বর্তমানে তেজগাঁও কলেজের ছাত্র। তিনি নানাবিধ সামাজিক সচেতনতামূলক কর্মকান্ড চালান এবং কারো জন্য অপেক্ষা করেননি। একাই দাঁড়িয়ে গেছেন। কি শাহবাগ, কি টি এস সি, সদরঘাট থেকে গাবতলী সবখানে তিনি ছুটে গেছেন সামাজিক অসংগতি, অনিয়মের নানান বিষয় নিয়ে। ছবিতেই দেখে নিন তার কর্মকান্ড। সাগরের ফেসবুকঃ facebook.com/sagar.sagarika.9

বাংলাদেশের লাল সবুজ পতাকা মাথায় একালের এই মুক্তিযোদ্ধা নেমেছেন দেশকে, সমাজকে অনিয়ম, অপসংস্কৃতি থেকে মুক্ত করতে। শুধু এখানের সীমাবদ্ধ নেই সাগরের কর্মকান্ড। সাগর ২০১৩ সালের সেপ্টেম্বর মাস থেকে শুরু করেছেন সুবিধা বঞ্চিত শিশুদের পড়ানোর কার্যক্রম। সপ্তাহে ২ দিন সম্পূর্ণ বিনামুল্যে পরিচালিত হয় সাগরের এই স্কুল। পড়াশুনা শেষে প্রতিদিন সেখানে নিত্য নতুন যাদু দেখানো হয়। যাদু দেখানোর কারনে স্কুলের শিশুরা নিয়মিত ক্লাসে হাজির হয় ও পড়াশুনায় মনোযোগ দেয়।

jadur school 2

jadur school 3

jadur school 4

jadur school 5

আসুন আমরা যে প্রান্তে থাকি সাগরকে উৎসাহিত করি, সহযোগীতা করি। সাগর নিজ থেকে তার এতসব কর্মকান্ডের কোন প্রচারনা চালাননি কোনদিন। আওয়ার নিউজ প্রথম বারের মত সাগরকে সবার সামনে নিয়ে আসে। তুলে ধরে সমাজের জন্য তার একক সংগ্রামকে। সাগরের জন্য আওয়ার নিউজের পক্ষ থেকে শুভকামনা।



মন্তব্য চালু নেই