সাংগ্রাই উৎসবে মেতে উঠেছে পাহাড়িরা

বান্দরবান: জেলায় বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে চারদিন ব্যাপী পাহাড়িদের প্রানের উৎসব সাংগ্রাই। এ উপলক্ষে বৃহস্পতিবার (১৩ এপ্রিল) সকালে উৎসব উদযাপন পরিষদের আয়োজনে স্থানীয় রাজার মাঠ থেকে এক বর্ণাঢ্য র‌্যালী বেরা করা হয়।

এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বর্ণাঢ্য র‌্যালীর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রানালয়ের প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি। র‌্যালীতে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক দিলীপ কুমার বণীক, পুলিশ সুপার সঞ্জিত কুমার রায়সহ বিভিন্ন দপ্তরের ও প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ কর্মকর্তারা।

এ সময় মারমা, চাকমা-তঞ্চঙ্গ্যা, ম্রো, বম, ত্রিপুরাসহ বান্দরবানে বসবাসরত ১১টি পাহাড়ি সম্প্রদায়ের আদিবাসী নারী-পুরুষরা নিজস্ব বিভিন্ন পোশাক ও ঐতিহ্যবাহী পরিচ্ছদ নিয়ে র‌্যালীতে অংশগ্রহণ করে।

র‌্যালীটি শহরের প্রধান সড়ক পদক্ষীণ করে রাজার মাঠে এসে শেষ হয়। পরে সেখানে বয়স্ক পুজার আয়োজন করা হয়। নতুন বছরকে বরণ এবং পুরাতন বছর বিদায়কে ঘিরে পার্বত্য এলাকার ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র জাতি স্বত্বা সমুহ নিজস্ব সামাজিক ঐতিহ্য নিয়ে সমন্বিতভাবে সাংগ্রাই ( বৈসাবী ) উৎসব পালন করে থাকে।

মারমা সম্প্রদায় সাংগ্রাইং, ম্রো সম্প্রদায় চাংক্রান, খেয়াং সম্প্রদায় সাংগ্রান, চাকমা সম্প্রদায় বিঝু ও তঞ্চঙ্গ্যা সম্প্রদায় বিষু, এবং ত্রিপুরা সম্প্রদায় বৈসু, এবং বিভিন্ন সম্প্রদায়ের এই উৎসবকে সমষ্টিগত ভাবে বৈসাবি বলা হয়। বান্দরবানে মারমাদের সাংগ্রাই এর মূল আকর্ষন জলকেলি উৎসব।

সকল পাপাচার ও গ্লানী ধুয়ে মুছে নিতে তরুণ-তরুণীরা একে অপরের গায়ে পানি ছিটানো উৎসবে মেতে উঠে। পুরাতন বছরকে বিদায় এবং নতুন বছরকে বরণের জন্য মূলত এই উৎসব। পুরাতন বছরের সব গ্লানী, দুঃখ, বেদনা ধুয়ে মুছে নতুন বছর যাতে সুন্দর এবং স্বাচ্ছন্দময় হয় সে জন্যই এসব প্রয়াস।

এই উৎসব শুধু পাহাড়ীরা নয় বাঙ্গালীরাও নানা ভাবে পালন করে থাকে। সাংগ্রাই উৎসবটিকে দেখার জন্য বান্দরবান পার্বত্য জেলায় বহু দেশী বিদেশী পর্যটকের আগমন ঘটে।

এদিকে বান্দরবানের প্রধান পাহাড়ী জাতি স্বত্বা মারমা সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী সাংগ্রাই উৎসব উপলক্ষে চারদিন ব্যাপী কর্মসূচী গ্রহণ করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে সমবেত প্রার্থনা, দুইদিন ব্যাপী জলকেলি (পানি খেলা), পিঠা তৈরি, ঘিলা খেলা, বৌদ্ধ মূর্তি স্নান, হাজারো প্রদীপ প্রজ্জলন, বয়স্ক পূজা এবং আদিবাসী নিজস্ব ঐতিহ্যবাহী নৃত্য-গানসহ নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।



মন্তব্য চালু নেই