সহিংসতা সৃষ্টিকারীদের ধরিয়ে দিন

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সহিংসতায় জড়িতদের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে ধরিয়ে দিতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। রোববার মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয় পরিদর্শনে এসে তিনি এ আহ্বান জানান। শেখ হাসিনা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উপস্থিতিতে বক্তব্যে বলেন, ‘অবরোধের নামে ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।’

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তিনি নিজেই নিজেকে অবরোধবাসিনী করে দেশে অবরোধের ডাক দিয়েছেন।’

তিনি বলেন, ‘বেগম জিয়া সংসদেও নেই, বিরোধী দলেও নেই। তাই তিনি এমন করছেন।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘যারা স্বাধীনতায় বিশ্বাস করেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাস করেন তাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘যারা মানুষ খুন করে, পেট্রোল বোমা মারে, অগ্নিসংযোগ করে তাদের বিরুদ্ধে সবাইকে সোচ্চার হতে হবে। তাদের যেখানে পাওয়া যাবে, সেখানেই প্রতিহত করতে হবে।’

‘যারা স্বাধীনতায় বিশ্বাস করেন, স্বাধীনতার চেতনায় বিশ্বাস করেন, স্বাধীন জাতি হিসেবে বাংলাদেশ বিশ্ব দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়াক – যারা এই নীতিতে বিশ্বাস করেন তাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। যারা মানুষ খুন করে, পেট্রোল বোমা মারে, অগ্নিসংযোগ করে তাদের বিরুদ্ধে সবাইকে সোচ্চার হতে হবে এবং এদের ধরতে হবে।’

‘খালেদা জিয়া ও বিএনপি তাদের হাহাকারের আগুনে দেশ জ্বালিয়ে দিতে চান’ মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তারা সংসদেও নেই, বিরোধী দলেও নেই বলে তাদের মধ্যে হাহাকার। তারা তাদের হাহাকারের আগুনে দেশকে জ্বালিয়ে দিতে চায়। তাই তারা মানুষকে পুড়িয়ে মারছে। বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রী থেকে শুরু করে গর্ভবর্তী মহিলাও রেহাই পাচ্ছে না।’

বিএনপিকে ‘চিটিংবাজ’ দল আখ্যা দিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, ‘বিএনপি দেশের ভেতর মিথ্যাচার করতে করতে দেশের বাইরেও মিথ্যাচার করছে। এখন বিদেশিরাও পার পাচ্ছেন না। ৬ কংগ্রেসম্যানের সই নকল করে একটা বিবৃতি দিয়ে দিল। একটা রাজনৈতিক দল দ্বারা এটা হয়েছে। কিন্তু লজ্জাটাতো গোটা জাতির।’

‘দেশের মানুষ সর্ম্পকে তাদের ধারণা কী হলো, বোধহয় এখানে সবাই এরকম চিটিং করে। তাদের আমরা কীভাবে বোঝাবো সব মানুষ এরকম চিটিংবাজ না। সব সময় শুনি ভারতবিরোধী। আবার দেখি ভারতের বিজেপি নেতার টেলিফোন নিয়ে চালবাজি। এতে দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট হলো।’

বিএনপিকে জনমুখী হওয়ার পরামর্শ দিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘যদি তারা (বিএনপি) মনে করেন ভারতের এরা (বিজেপি) তাদের ক্ষমতায় বসাবে বা কংগ্রেসম্যানরা তাদের ক্ষমতায় বসাবে, আমাদের সরকারকে উৎখাত করে দেবে এ চিন্তা করে- এটা আমাদের দুর্ভাগ্য। আমাদের পরমুখাপেক্ষী হয়ে থাকতে হবে কেন? জনগণমুখী হতে হবে। জনগণের শক্তিতেই বলিয়ান হতে হবে। জনগণের সমর্থন আদায় করতে হবে। পরের দিকে মুখ করে থাকলে হবে না। আমরা সেটা চাইও না।’

‘বিএনপি নেত্রী তার নেতা-কর্মী সবার সঙ্গে দেখা করছেন, কথা বলছেন, কর্মসূচি দিচ্ছেন। তাহলে তিনি কীভাবে অবরুদ্ধ।’

‘দেশকে পিছিয়ে দেয়ার জন্যই অবৈধভাবে বিএনপির জন্ম হয়েছে’ মন্তব্য করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘আমরা যখন সব ক্ষেত্রে দেশকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি তখন কীসের আন্দোলন। আমাদের দুর্ভাগ্য যখনই মানুষ একটু সুখের মুখ দেখে তখনই একটা আঘাত আসে।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশের একটা শ্রেনী আছে যারা বিদেশিদের সঙ্গে দহরম মহরম করে ক্ষমতায় যাওয়ার কথা চিন্তা করে। মন্ত্রী হওয়ার কথা চিন্তা করে। কিন্তু তারা জনগণের কাছে যান না। অসাংবিধানিক সরকার আসলে তাদের লাভ হয়। তাদের পতাকা হয়। কিন্তু দেশের জন্য লাভ হয় না।’

এ সময় মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, ভারপ্রাপ্ত সচিব এম এম হান্নানসহ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।



মন্তব্য চালু নেই