মানব পাচার বন্ধ ও ভাসমান মানুষদের উদ্ধারের দাবীতে ইসলামী আন্দোলনের মানববন্ধন:

সমুদ্রে ভাসমানদের উদ্ধারে সরকারকে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে : ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা মহানগর সভাপতি অধ্যাপক হাফেজ মাওলানা এটিএম হেমায়েত বলেছেন, মানবপাচারের উৎসস্থল মায়ানমার। মায়ানমার সরকার সেখানের মুসলমানদের নাগরিকত্ব সহ্য করতে না পেরে মুসলমানদের পাচারের উদ্দেশ্যে সমুদ্রপথে সর্বপ্রথম পাচার কাজ শুরু করে। সেইসাথে বাংলাদেশের অসহায় মানুষগুলোকেও বিদেশ নিয়ে চাকুরীর প্রলোভনে সাগরপথে পাড়ি জমায় এবং সমুদ্রে নিয়ে নৌযানে তাদের ওপর অসহনীয় জুলুম-নির্যাতন শুরু করে। খাবারের জন্য কান্নাকাটি করলে এক পর্যায়ে তাদের সমুদ্রে ছুড়ে ফেলে দেয়। এভাবে হাজার হাজার মানুষকে মৃত্যুমুখে ঠেলে দেয়। ভাসমান অভিবাসীরা বাঁচার তাগিদে এদেশ-ওদেশ ভিড়তে চায় কিন্তু মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ড সরকার তাদের আশ্রয় না দিয়ে মৃত্যুমুখে পতিত করে।
তিনি বলেন, মানব পাচারকারী দালালদের জন্ম এ দেশেই। এখানকার অলিগলিতে এদের বসবাস। হাজার হাজার বাঙালি সমুদ্রে ভাসছে শোনে কোনো বিবেকবান মানুষের বিবেক নাড়া না দিয়ে পারে না। মানবপাচারকারীদের শিকড় মূলোৎপাটন করতে হবে। দেশের মানুষ রক্ষার দায়িত্ব সরকারের। তাই মানবপাচারের সব ছিদ্রবন্ধে সরকারকেই দায়িত্ব নিতে হবে। বৈধভাবে জনশক্তি রপ্তানী সহজলভ্য করার আহ্বান জানান তিনি।

মঙ্গলবার (১৯ মে) দুপুর ১২-১টা পর্যন্ত সমুদ্রে ভাসমানদের উদ্ধার এবং মানব পাচার বন্ধের দাবীতে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা মহানগরীর মানববন্ধন কর্মসূচিতে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এতে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় সহকারী মহাসচিব মাওলানা ইমতিয়াজ আলম, দপ্তর সম্পাদক মাওলানা লোকমান হোসাইন জাফরী, ঢাকা মহানগর সহ-সভাপতি আলহাজ্ব আলতাফ হোসেন, সেক্রেটারি মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূম, মু. হারুনুর রশিদ, অধ্যাপক ফজলুল হক মৃধা, মু. মোশাররফ হোসেন, ছাত্রনেতা মু. ইলিয়াস হোসাইন, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কাশেম, শ্রমিক নেতা মাওলানা ফখরুল ইসলাম, সৈয়দ ওমর ফারুক, এইচ এম সাইফুল ইসলাম, এডভোকেট সর্দার মানিক মিয়া, মাওলানা নাযির আহমদ শিবলী প্রমুখ।

মাওলানা ইমতিয়াজ আলম বলেন, অবৈধভাবে সমুদ্র পথে বিদেশগামী বাংলাদেশী ও মিয়ানমারের নাগরিকদের বহনকারী নৌযান মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া বা থাইল্যান্ডে ভিড়তে না দিয়ে তাদেরকে সমুদ্রে মৃত্যুমুখে ঠেলে দেয়ার ঘটনায় আমরা গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করছি। এ ধরণের বিপজ্জনক পথে মানব পাচার রোধে ব্যর্থতার মূল দায় অভিবাসীদের দেশের সরকারের। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ বা মিয়ানমার সরকার কোনোভাবেই দায় এড়াতে পারে না। অন্যদিকে মানবিক দিক বিবেচনায় বুভুক্ষু, মুমূর্ষু মানুষদের তীরে নামতে না দিয়ে কোনো দেশ তাদের মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিতে পারে না। যে দেশগুলো এধরণের কর্মকান্ড করেছে তারা অমানবিক কাজ করেছে। মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া ও থাইল্যান্ড সরকারের প্রতি বিশেষভাবে অনুরোধ করতে চাই যে, মানবিক দিক বিবেচনা করে সাগরে ভাসমান অনাহারী বিপদগ্রস্থ বাংলাদেশী ও মিয়ানমারের নাগরিকদের তীরে ভিড়তে দিন এবং তাদের বাঁচতে দিন। সাথে সাথে জাতিসংঘকে ভাসমানদের বাঁচাতে তড়িত ব্যবস্থা নিতে হবে। বাংলাদেশ সরকার ভাসমান বাংলাদেশীদের বাঁচাতে সবধরণের উদ্যোগ নিতে ব্যর্থ হলে গণমানুষের অধিকার আদায়ে ইসলামী আন্দোলন রাজপথে নেমে আসতে বাধ্য হবে।



মন্তব্য চালু নেই