সমস্যায় জর্জরিত ভোলার বক্ষব্যাধি হাসপাতাল

চিকিৎসক, নার্স ও প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি সংকটসহ নানা সমস্যায় জর্জরিত হয়ে পড়েছে ভোলার একমাত্র বক্ষব্যাধি ক্লিনিক ও হাসপাতাল। ফলে কাঙ্ক্ষিত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন রোগীরা।

প্রয়োজনীয় ওষুধ সরবরাহ থাকলেও যথাযথ সেবা না পাওয়ায় চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে দূর-দূরান্ত থেকে আসা রোগীদের। ফলে অনেকেই বাধ্য হয়ে জেলার বাইরে গিয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তবে দরিদ্র রোগীরা রয়েছেন চরম বিড়ম্বনায়।

হাসপাতাল সুত্র জানায়, স্বাধীনতা পরে ভোলা জেলা সদর হাসপাতালের পেছনের অংশে স্থাপিত হয় বক্ষব্যাধি ক্লিনিক ও হাসপাতাল। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই সুনামের সাথে এ অঞ্চলের যক্ষ্মা রোগীদের চিকিৎসা সেবা দিয়ে আসছে হাসপাতালটি। কিন্তু বর্তমানে নানা অব্যবস্থাপনা ও সংকটে সেবার মান ক্রমশ নেমে যাচ্ছে বলে অভিযোগ রোগীদের।

বর্তমানে প্রতিদিন গড়ে ১৫ থেকে ২০ জন রোগী হাসপাতালের বর্হিবিভাগে চিকিৎসা সেবা, ব্যবস্থাপত্র ও ওষুধ নিয়ে থাকেন।
এদিকে এ হাসপাতালে একটি জুনিয়র কনসালটেন্ট, একটি মেডিকেল টেকনোলজিস্ট, একটি রেডিওগ্রাফি, একটি টেকনোলজিস্ট ল্যাব, একটি ফার্মাসিস্ট, একটি নার্স ও দুইটি চতুর্থ শ্রেনীর পদ শুন্য রয়েছে।

চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের অভিযোগ, হাসপাতালে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা দেওয়া হচ্ছে না। সপ্তাহে পাঁচ দিন উপস্থিত থাকার কথা থাকলেও নার্স ও চিকিৎসকদের নিয়মিত পাওয়া যায়না। ফলে চিকিৎসা নিতে এসে প্রায়ই চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়।

তারা জানান, হাসপাতালে পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য অত্যাধুনিক মেশিন থাকলেও অপারেটরের অভাবে তা চালু করা হয়নি। ফলে সামান্য পরীক্ষার জন্য রোগীদের বিভিন্ন ডায়াগনস্টিকে যেতে হয়।

তবে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবায় কোনো ব্যাঘাত ঘটছে না বলে দাবি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের। কর্তৃপক্ষের দাবী, এ বক্ষব্যাধি ক্লিনিক ও হাসপাতালে ওষুধ এবং আধুনিক সরঞ্জাম থাকলেও জনবল সংকট রয়েছে। তবে এ জন্য চিকিৎসায় কোনো সমস্যা হচ্ছে না। বিগত বছরগুলোর তুলনায় যক্ষ্মা রোগীর প্রবণতা বেশী থাকালেও বর্তমানে রোগীর চাপ অনেক কমে এসেছে বলেও দাবি তাদের।

হাসপাতালের তথ্য মতে, জেলার ৭টি উপজেলায় মোট এক হাজার ২৫৩ জন যক্ষ্মা আক্রান্ত রোগী রয়েছেন। জেলা হাসপাতাল ছাড়াও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও ক্লিনিকগুলোতে এসব রোগীদের চিকিৎসার ব্যবস্থা রয়েছে।

এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে হাসপাতালের মেডিকেল টেকনোলজিস্ট মো. আবুল হাসান জানান, হাসপাতালে চিকিৎসা সেবায় তেমন সমস্যা নেই।
হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত জুনিয়র কনসালটেন্ট ডা. ডিএসএম জাকির হোসেন জানান, রোগীর চাপ কম থাকায় যে জনবল রয়েছে তা দিয়ে চিকিৎসা কার্যক্রম চলছে। আমরা যথাসাধ্য রোগীদের চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছি।

এ বিষয়ে ভোলার সিভিল সার্জন ডা. ফরিদ আহমেদ বলেন, চিকিৎসক সংকটের বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। শিগগিরই চিকিৎসক ও নার্স নিয়োগ করা হবে।



মন্তব্য চালু নেই