সবজি বিক্রেতাকে হত্যার দায়ে ৩ জনের ফাঁসি

বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে এক সবজি বিক্রেতাকে হত্যার দায়ে তিন জনের ফাঁসি ও এক জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

বৃহস্পতিবার দুপুরে রংপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত-২ এর বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামান এ আদেশ দেন।

দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- রংপুরের পীরগাছা উপজেলার ছোট কল্যানী গ্রামের আব্দুস সাত্তার, নূর মোহাম্মদ, আব্দুল ও ফরহাদ হোসেন।

মামলার বিবরণে জানা যায়, স্থানীয় হাট-বাজারে সবজি বিক্রি করে সংসার চালাতেন রংপুরের পীরগাছা উপজেলার ছোট কল্যানী গ্রামের আজিম উদ্দিনের ছেলে আবু বকর সিদ্দিক (৪০)।তার স্ত্রী রানু বেগম অন্যের বাড়িতে গৃহপরিচারিকার কাজ করতেন। একই গ্রামের আব্দুস সাত্তারের বাড়িতে কাজ করার সময় প্রায়ই রানু বেগমকে উত্ত্যক্ত এবং কুপ্রস্তাব দিতেন তিনি। বিষয়টি রানু তার স্বামীকে জানালে আসামি সাত্তারের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়। এ ঘটনায় আসামি আব্দুস সাত্তার তাকে দেখে নেবে বলে হুমকি দেন।

এর জের ধরে ১৯৯৩ সালের ২ অক্টোবর রাতে আবু বকর সিদ্দিককে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যান আব্দুস সাত্তার, নূর মোহাম্মদ, আব্দুল ও ফরহাদ হোসেন। পরদিন আবু বকর সিদ্দিকের মরদেহ বাড়ির পাশে একটি ধান ক্ষেত থেকে উদ্ধার করে পুলিশ।

এ ঘটনায় নিহত আবু বকর সিদ্দিকের বাবা আজিম উদ্দিন বাদী হয়ে পীরগাছা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পুলিশ মামলাটি তদন্ত করে কোনো সাক্ষ্য প্রমাণ না পাওয়ার কথা উল্লেখ করে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করে। পরে মামলার বাদী আজিম উদ্দিনের আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালত মামলাটি তদন্তের জন্য সিআইডিকে নির্দেশ দেন।

দীর্ঘ ১০ বছর তদন্ত শেষে ২০০৩ সালের ৯ আগস্ট সিআইডি চার আসামির নামে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে। এ মামলায় ১২ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালত বৃহস্পতিবার দুপুরে আসামি নূর মোহাম্মদ, আব্দুল ও ফরহাদ হোসেনকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার আদেশ দেন এবং অপর আসামি আব্দুস সাত্তারকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। তবে জরিমানা দিতে ব্যর্থ হলে তাকে আরও ছয় মাস সশ্রম কারাভোগ করতে হবে বলে রায়ে উল্লেখ করেন আদালত। রায় ঘোষণার সময় অভিযুক্ত আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট ফারুক মোহাম্মদ রেজাউল করিম জানান, বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে হত্যার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তিন আসামির ফাঁসি ও এক আসামির যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন বিচারক।

তবে আসামিপক্ষের আইনজীবী আব্দুর রহমান জানান, তারা ন্যায় বিচার পাননি। এ আদেশের বিরুদ্ধে তারা উচ্চ আদালতে আপিল করবেন।



মন্তব্য চালু নেই