সন্ধানীর সম্মেলনে এন্টিবায়োটিকের ব্যবহার শীর্ষক সেমিনার

বিধান মুখার্জী, গণ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি : সাভারের গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত গণস্বাস্থ্য সমাজভিত্তিক মেডিকেল কলেজে সন্ধানী ইউনিট কর্তৃক আয়োজিত দেশের অন্যতম স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সন্ধানীর গত ১৩ এপ্রিল বৃহস্পতিবার থেকে ১৫ এপ্রিল শনিবার পর্যন্ত টানা তিন দিনের ৩৬ তম কেন্দ্রীয় বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠানের শেষ দিনে বাংলাদেশে এন্টিবায়োটিকের যথার্থ ব্যবহার নিশ্চিত করার লক্ষে এবং এন্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স রোধকল্পে সন্ধানীর করণীয় সম্পর্কে বিশেষ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শনিবার (১৫ এপ্রিল) সকাল ১১ টায় গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের পি এইচ এ মিলনায়তনে দেশের বিভিন্ন সরকারী ও বেসরকারি মেডিকেল কলেজের সন্ধানীয়ানদের অংশগ্রহনে এই সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। এসময় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজের ফার্মাকোলজি বিভাগের অধ্যাপক ডাঃ সায়েদুর রহমান, বিশেষ অথিতি হিসেবে গনসবাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডাঃ জাফরুল্লাহ চৌধুরী, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের সমন্বয়ক ডা. মনজুর কাদির আহমেদ, গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ডাঃ লায়লা পারভিন বানুসহ বিশিষ্ট জনেরা উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডাঃ সায়েদুর রহমান এন্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য হুমকি স্বরূপ একথা উল্ল্যেখ করে বলেন, ‘ দেশের ৬০ টি জেলায় এন্টিবায়োটিক ব্যবহার ও কার্যকারিতার কোন রেকর্ড রাখা হয় না। দেশের শতভাগ ক্রেতা কোন ব্যবস্থাপত্র ছাড়াই ওষুধ কিনতে পারে।আইনের মাধ্যমে এই ভয়াবহতা রোধ করা সম্ভব নয়। তাই এন্টিবায়োটিকের যথার্থ ব্যবহার নিশ্চিত করতে ব্যবস্থাপত্রের মাধ্যমে এন্টিবায়োটিকের ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে’।

এছাড়াও সাধারণ মানুষকে সচেতন করে তোলার মধ্য দিয়ে এই ভয়াবহ পরিস্থিতির মোকাবেলা করা সম্ভব উল্ল্যখ করে তিনি বলেন, ‘ আমাদের দেশের স্কুল-কলেজ শিক্ষার্থীদের পাঠ্যসূচীতে এখপ্ন পর্যন্ত এন্টিবায়োটিকের ব্যবহারের সচেতনতা নিয়ে কোন লেখা নেই। এন্টিবায়োটিকের ক্ষতিকর প্রভাব ও প্রতিরোধ ব্যবস্থা সম্পর্কে আমাদের প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ে ধারনা দেবার ব্যবস্থা রাখতে হবে।এই শিক্ষার্থীরা জানলেই তারা বাবা-মায়ের ব্যবস্থাপত্র ছাড়া এন্টিবায়োটিক গ্রহনে বাধা দিতে পারবে’। নইলে এমন একদিন আসবে যেদিন এন্টিবায়োটিক কেজি হিসেবে খেলেও রোগ ভালো হবে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

প্রধান অতিথির বক্তব্য শেষে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডাঃ জাফ্রুল্লাহ চৌধুরী তার বক্তব্যে বলেন, ‘আমাদের চিকিৎসকদের সত্য দেখতে এবং বলতে হবে’। চিকিৎসকদের অসহযোগিতা এন্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্সের অন্যতম কারণ তাই চিকিৎসকদের এন্টিবায়োটিক ব্যবহার সম্পর্কে সচেতন হতে হবে এবং চিকিৎসকের কাউন্সিলিংই পারে রোগীর মানসিক অবস্থার পরিবর্তন করতে উল্ল্যেখ করে তিনি বলেন, ‘ দেশে এন্টিবায়োটিকের যথার্থ ব্যবহার এখনই নিশ্চিত করতে না পারলে এর ভহাবহতা যে কোন যুদ্ধের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণকেও ছাড়িয়ে যাবে’। তাই ব্যবসায়ীদের স্বার্থে নয় দেশের স্বার্থের কথা ভেবে এই ভয়াবহ পরিস্থিতি মোকাবেলায় চিকিৎসকদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।

এরপর সমাপনী বক্তব্যে দেশের একমাত্র মুক্তিযোদ্ধা উপাচার্য ডাঃ লায়লা পারভিন বানু উপস্থিত সন্ধানীয়ানদের এমন আয়োজনের জন্য শুভেচ্ছা এবং সাধুবাদ জানান। তিনি বলেন, ‘এই তরুণ সন্ধানীয়ানরা একদিন সুন্দর দেশ এবং জাতি নির্মাণে ভূমিকা রাখবে’।



মন্তব্য চালু নেই