সন্তান না হওয়া ও যৌতুকের দাবিতে সরকারি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে স্ত্রী নির্যাতনের অভিযোগ

সন্তান না হওয়া এবং যৌতুকের দাবিতে স্বামীর বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগ করেছেন মানিকগঞ্জের এক নারী (৩৬)। মঙ্গলবার দুপুরে মানিকগঞ্জ প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেছেন তিনি।

ওই নারী জানান, তাঁর স্বামী ড. সুমন কুমার পাণ্ডে (৩৯) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনস্ত বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষক ও কর্মচারী কল্যাণ ট্রাস্টের উপপরিচালক।

সুমনের বিরুদ্ধে মানিকগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে দুটি মামলা করেছেন তিনি। স্বামীর বাড়ি রাজশাহীর বাঘা উপজেলার চক নারায়ণপুর এলাকায়। ওই নারীর বাড়ি মানিকগঞ্জে।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য সাংবাদিকদের পড়ে শোনান নির্যাতনের শিকার ওই নারী। তিনি বলেন, ২০০১ সালে পারিবারিকভাবে নগদ দুই লাখ টাকা ও ১০ ভরি স্বর্ণালংকার যৌতুক দিয়ে সুমনের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। ওই সময় সুমন বেকার থাকায় বাবার বাড়ি থেকেই লেখাপড়াসহ সাংসারিক খরচ বহন করা হতো। এরপর বারবার চেষ্টা করেও সন্তান নিতে পারেননি তারা। এ জন্য স্বাস্থ্য পরীক্ষা প্রতিবেদনে সুমনের অযোগ্যতা নির্ণয় করেন চিকিৎসকরা। কিন্তু সুমন ও তাঁর পরিবার এই প্রতিবেদন মানতে নারাজ। উল্টো তাঁকে (নারী) দায়ী করে আত্মীয়স্বজন ও বন্ধুমহলে প্রচার করেছেন তাঁরা। দীর্ঘ ১৫ বছরের দাম্পত্য জীবনে সন্তান না হওয়া ও বিভিন্ন সময়ে দাবি করা যৌতুক না পেয়ে তাঁদের মধ্যে কলহের সৃষ্টি হয়। এই কলহে তাঁকে মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন করে আসছিলেন সুমন। একপর্যায়ে গত বছরের ২ নভেম্বর ঢাকার মিরপুর এলাকার ফ্ল্যাটে তাঁকে মারধর করে প্রাইভেটকারে বাবার বাড়ি পাঠিয়ে দেন তিনি। এর ১৬ দিন পর কুমিল্লায় বিয়ে করেন সুমন। এসব ঘটনায় তিনি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে লিখিত অভিযোগ করেছেন। আর মানিকগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে ১১(গ)/৩০ এবং তৎসহ ৩২৫/৪ ধারায় মামলা করেছেন তিনি। মামলাটির বর্তমানে তদন্ত চলছে। এরপর প্রথম স্ত্রীর অনুমতি ছাড়া দ্বিতীয় বিয়ে করার অপরাধে তিনি একই ট্রাইব্যুনালে আরেকটি মামলা করেছেন। এই মামলায় সুমনের বিরুদ্ধে সমন জারি করেছেন আদালত।

ওই নারী কেঁদে কেঁদে বলেন, সুমন কয়েক বছর ধরে দুর্নীতি করে লাখ লাখ টাকার মালিক হয়েছেন। এই টাকা ও সরকারি প্রভাব বিস্তার করে তিনি মামলা দুর্বল করার অপচেষ্টা চালাচ্ছেন। এ কারণে এই মামলা দুটিতে সুবিচার পাওয়ার দাবি করছেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে ওই নারীর বাবা জানান, তিনি অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক। ওই নারী তাঁর একমাত্র মেয়ে। মেয়ের ভবিষ্যতের কথা ভেবে ঢাকায় ফ্ল্যাট কেনার জন্য সুমনের সোনালী ব্যাংকে মানিকগঞ্জ শাখার সঞ্চয়ী হিসাবে বিভিন্ন সময়ে ১২ লাখ ৪২ হাজার টাকা জমা দেওয়া হয়েছে। এসব টাকা জমা দেওয়ার রসিদ রয়েছে বলেও জানান তিনি।

এ ব্যাপারে ড. সুমন কুমার পাণ্ডের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাঁকে পাওয়া যায়নি।



মন্তব্য চালু নেই