সন্তানের সুশিক্ষার দায়িত্ব পরিবারের

ট্রেন্ডটা অল্প দিনের হলেও আমরা বেশ কিছু বিষয়ে খুবই অভ্যস্ত। আর তা হল, ট্যাব বা মোবাইল ফোনে ভিডিও দেখিয়ে, গান শুনিয়ে বা গেম খেলতে দিয়ে শিশুদের খাওয়ানো এবং ব্যস্ত রাখা। অথচ এতে শিশুটির অসম্ভব ক্ষতি হচ্ছে। সন্তানের মানসিক স্বাস্থ্য এবং সামাজিক বিকাশ ব্যহত হচ্ছে। অথচ সন্তানের সুশিক্ষার দায়িত্ব নির্ভর করে পরিবারের ওপর।

বাবা-মা শিশুকে সময় দিলে, তার সঙ্গে গল্প করলে, বিনোদনের মধ্যে থাকলে যে বন্ধন গড়ে ওঠে, ফোন বা ট্যাবে ব্যস্ত রাখলে সেটা কখনই সম্ভব নয়। এতে করে ছোটবেলা থেকেই সে একা একা খেলা, কথা বলা, চিন্তা-ভাবনা করা শুরু করে। কোনো ঘটনা ঘটলেও তা বাবা-মায়ের কাছে না বলে চেপে রাখার অভ্যাস হয়ে যায় তার। তারপর ধীরে ধীরে একটা সময় অসামাজিক হয়ে পড়ে, তারপর মা-বাবা, পরিবারের কাছ থেকে দূরে সরে যায় সন্তানটি।

এসব দিকভ্রান্ত সন্তানদের কাছে স্কুল-কলেজের বন্ধু-বান্ধবই হয়ে ওঠে সব। অথবা পরবর্তীতে অন্য কোনো ব্যক্তি তাকে একটু স্নেহ, ভালোবাসা দিলে, ভালো কথা বললে, তার কথা শুনতে চাইলে, সেই ব্যক্তির জন্য জীবন বাজি রাখতেও প্রস্তুত হয়ে ওঠে ছেলেমেয়েরা। এমনকি সেই ব্যক্তির কথায় মানুষ খুন করতেও দ্বিধা করে না।

অনেক বাবা মা তাদের ছোট্ট সন্তানের জন্য ট্যাব কিনে দেন। অথচ এই সোনালী দিনগুলো হাস্যোজ্জ্বল রাখার দায়িত্ব বাবা মায়ের। সন্তানের এই বয়সটা বাবা-মায়ের ভালোবাসায় সিক্ত হওয়ার। এই বয়সে বাবা মা সন্তানের মনে জাগিয়ে রাখবেন নীতি নৈতিকতার আদর্শ চর্চা। সঠিক জীবন যাপনের পথ বেছে দেবেন।

উঠতি বয়স সব সময়ই চ্যালেঞ্জ নিতে পছন্দ করে। বাবা-মা বাদে অন্য কারো মাধ্যমে প্ররোচিত হয়ে কোনো সন্তান যদি এসব চ্যালেঞ্জের সুযোগ পায়, সামাজিক অঘটন ঘটানোর উপকরণ পায় তবে বেশিই আগ্রহ বোধ করে। বাবা-মা টের পাওয়ার আগেই হয়তো সন্তানটি মিশে যায় অন্ধকার জগতে। বড় কোনো ঘটনা ঘটার পর পরিবারের তখন কিছুই করার থাকে না। আর তাইতো শিশুরা আবেগহীন, অসামাজিক হয়ে ওঠার আগে তার মধ্যে যে আবেগ জাগিয়ে তুলতে পারেন একমাত্র মা-বাবাই।



মন্তব্য চালু নেই