সন্তানের প্রতি ভালোবাসা কী কখনও কমে?

সন্তানের প্রতি বাবা-মার ভালোবাসা কখনও কী কমে? আপনিও তো কারও বাবা-মা, আপনার দুটি সন্তান রয়েছে, বলুনতো কোন সন্তানটিকে বেশি ভলোবাসেন? বড়টিকে নাকি ছোট্ট সন্তানকে?

নিশ্চয় এমন উদ্ভট প্রশ্ন শুনে আপনি চিন্তায় পড়ে যাবেন! কিন্তু আপনি অবাক হলেও এটি সত্য, প্রায় সব বাবা-মা কখনও না কখনও এমন প্রশ্নের সম্মুখীন হন এবং নিজেদের অজান্তেই সন্তানদের প্রতি মাঝে মাঝে ভালোবাসার তারতম্য করে থাকেন!

এই যেমন: গত মঙ্গলবার ভারতের পুনের একটি মেয়ে সুইসাইড নোট লিখে আত্মহত্যা করেছে। সেখানে সে লিখেছে, বাবা-মা তাকে একদম পছন্দ করেন না।

পরে বিষয়টি তদন্ত করে কর্মকর্তা বলেছেন, ‘ওই শিশুটি মনে করেছে বাবা-মা তাকে উপেক্ষা করতেন এবং ছোট ভাইয়ের প্রতি তারা বেশি মনোযোগী ছিলেন। তার ব্যক্তিগত নোট থেকে এটাই প্রমাণ মেলে, যে সে তার বাবা-মায়ের দ্বারা অবহেলিত হয়েছিল।’ খবর টাইমস অব ইন্ডিয়ার।

বিশেষজ্ঞদের মতে, বেশিরভাগ বাবা সন্তানদের সমান নজরে দেখেন ও ভালোবাসার চেষ্টা করে থাকেন এবং এটাই ন্যায্য। কিন্তু কখনও কখনও এটা সমানভাবে থাকে না, একটু এদিক-সেদিক হয়ে যায়।

আর মায়ের ক্ষেত্রে দেখা যায়, ছোট সন্তানটিকে একটু বেশি সময় দিতে হয়। তার চাহিদা পূরণেও ব্যস্ত থাকেন তিনি। মা ছোটটির প্রতিটি বিষয়ে বেশি আকর্ষণ অনুভব করেন, সে সময় হয়তো ব্যস্ততার কারণে বড় সন্তানটির প্রতি খুব একটা নজর দেয়া হয় না। এতে বড় সন্তানের মনে ক্ষেভের সৃষ্টি হতে পারে।

আর এমন বিরক্তিকর পরিস্থিতির তখনি সৃষ্টি হয় যখন বাবা-মায়েরা তাদের দুটি সন্তানের সঙ্গে পারস্পরিক সম্পর্কের তারতম্যটা বুঝতে ব্যর্থ হন।

মনোবিজ্ঞানী, হিপনোথেরাপিস্ট অধ্যাপক ডা. অরুনা ব্রুটো বলেন, আমাদের সমাজে সব বিষয়ে বড় সন্তানটিকে বেশি চাপ দেয়া হয়। আমরা ধরেই নেই, বড় হওয়ায় তার বেশি দায়িত্ব নেয়া উচিত, আর ছোটটা তো শিশুই।

বাবা-মা সব সময় বড় সন্তানকে আপস করতে বলেন, ছোটটিকে কখনও এ ব্যাপারে চাপ দেয় না। এমন ধ্যান-ধারণা পরিবর্তন জরুরি। নইলে ভবিষ্যতে ভাইবোনদের মধ্যে দ্বন্দ্ব বাড়বে যা অপ্রিতীকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করতে পারে।



মন্তব্য চালু নেই