সন্তানকে যে কথা কখনও বলবেন না

মা-বাবার কাছে সন্তান হলো সব চেয়ে আদরের। সন্তানকে লালন-পালনে তারা সবসময় সর্তক থাকেন। কিন্তু তারপরও অনেক সময় ঠুনকো কিছু ভুল হয়েই যায়, তবে সেটা নিজের অবচেতন মনে।

এই ছোট ছোট বিষয়গুলো খেয়াল রাখতে হবে অভিভাবকদের কারণ বড়দের তুলনায় শিশুরা বেশি সংবেদনশীল হয়ে থাকে।

আপনি হয়তো সন্তানের ভালোর জন্য কোনও কারণে বকাঝকা করে শাসন করছেন, ভাবছেন একটু বকা দিলে জোরে কথা বললে কি হবে?

বিশেষজ্ঞদের মতে, শিশুদের কঠিক কথা বলে শাসক করা ঠিক নয়। কারণ আপনার ওই সাধারণ শাসন, শিশুর কাছে হতে পারে অনেক কঠিন। এটি তার আচরণে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। অনেক সময় আপনাকে ভুল বুঝে মন খারাপও করতে পারে শিশুটি।

বিশেষজ্ঞদের মতে বাবা-মাকে কোমলমতি শিশুর সামনে যেসব কথা কখনোই বলা উচিত নয়, তা নিম্নে আলোচনা করা হলো :

* সবাই সব কিছু করতে পারে না, যেমন : আপনার সন্তান অংক ভুল করেছে বা খেলায় হেরে গেছে এমন সময় আপনি বলে বসলেন, তোমাকে দিয়ে কিছু হবে না। শিশুকে এমনটা বলা ঠিক না। কারণ প্রতিটি মানুষের সীমাবদ্ধতা রয়েছে। আপনার সন্তানেও এর ব্যতিক্রম নয়। সব কাজ সে করতে পারবে এমন কোনও বাধ্যবাধকতা নেই। এসময় তাকে বকাঝকা না করে উৎসাহ দিন।

* জীবনে এমন একটা সময় আসে, যখন সবাই একা একা থাকতে চায়। কিন্তু তাই বলে সন্তানকে কখনও সরাসরি বলবেন না, আমাকে একা থাকতে দাও। এটি তাদের মধ্যে নিরপত্তাহীনতা সৃষ্টি করে করে।

* সন্তানকে তার বন্ধু, ভাই-বোন বা অন্য কারও সঙ্গে তুলনা করবেন না। প্রতিটি সন্তানই স্বতন্ত্র। আপনার এইরূপ তুলনা তার ব্যক্তিত্বে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।

* সন্তান পরীক্ষায় খারাপ করেছে বা অসাবধানতাবশত আপনার কোনও প্রিয় জিনিস ভেঙে ফেলেছে। এসময় তাকে একটি লাঠি হাতে তাড়া করলেন বা বলেই বসলেন তোকে ছাড়বো না!কোমলমতি শিশুর সঙ্গে এমনটা করা ঠিক নয়, কারণ এতে সে আতঙ্কিত হয়।

* থাম! না হলে মারব।এই কথাটি প্রায় সব বাবা মা সন্তানদের বলে থাকেন। আজ থেকে একথা বলা বন্ধ করুন, কারণ এ কথাটি তার মনে বিদ্রোহী মনোভাব সৃষ্টি করে।

* শিশুর ক্ষমতা সীমিত। তার পক্ষে সব কাজ নিখুঁতভাবে করা সম্ভব নয়। তাই তার কোনও কাজে সমস্যা দেখা দিলে, তোমার পক্ষে কিছু করা সম্ভব নয়, এটা না বলে তাকে কাজ শেখাতে উৎসাহিত করুন।

* কোনও শিশুকে তার স্বাস্থ্য নিয়ে কথা বলা উচিত নয়। এটি তার মধ্যে নিজের প্রতি ঘৃণা তৈরি করে।

* তুমি না জন্মালে ভাল হত, রাগ করে হোক অথবা অন্য যে কোন কারণেই হোক সন্তানকে এই ধরণের কথা বলবেন না। এ কথাটি আপনার প্রতি সন্তানের ঘৃণা তৈরির জন্য যথেষ্ট।

আমরা সবাই সন্তানকে খুব ভালোবাসি, কিন্তু অনেক সময় আমরা এমন সব কথা বলে ফেলি যা সন্তানের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। তাই সন্তানের সুষ্ঠু বিকাশে তাদের সঙ্গে একটু সাবধানে কথা বলুন। আপনাকে বুঝতে হবে, সে এখনও শিশু। তাকে শুধরে দেয়ার দায়িত্ব তো আপনারই।



মন্তব্য চালু নেই