সচিবালয় ও অধিদফতরে বৈষম্য: কর্মচারীদের মধ্যে ক্ষোভ

বৈষম্য চলছে সচিবালয়ের প্রধান সহকারী ও উচ্চমান সহকারীদের সঙ্গে বাইরের ৫৬টি সরকারি দফতর-অধিদফতরের কর্মচারীদের। এ নিয়ে বঞ্চিতরা নানা দেনদরবার করলেও সমস্যার সমাধান হচ্ছে না। অথচ এ জন্য সরকারের খরচও বাড়বে না।

জানা গেছে, সচিবালয়সহ দেশের ৫৬টি সরকারি অধিদফতরের প্রধান সহকারী ও উচ্চমান সহকারীরা তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারী ছিলেন। ১৯৯৫ সালের ১৯ মে তৎকালীন বিএনপি সরকার সচিবালয়ের প্রায় দুই হাজার প্রধান সহকারী, উচ্চমান সহকারী, বাজেট পরীক্ষক ও সাঁটলিপিকারকে দ্বিতীয় শ্রেণীর কর্মকর্তা পদে উন্নীত করে। অথচ সচিবালয়ের বাইরে থাকা কৃষি অধিদফতর, শিক্ষা অধিদফতর, পরিবার পরিকল্পনা অধিদফতর, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মতো দফতরগুলোতে একই পদে কাজ করা কর্মচারীদের পদোন্নতি দেওয়া হয়নি।

আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকারের প্রথম দিকে পুলিশের এএসআই, ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার, কানুনগো, ডিপ্লোমা নার্স, প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষকদেরও তৃতীয় শ্রেণী থেকে দ্বিতীয় শ্রেণীর মর্যাদা দেওয়া হয়। দফতর-অধিদফতরের কর্মচারীরা বঞ্চিতই থেকে যান। ২০১২ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি ভুক্তভোগী কর্মচারীদের সংগঠন সরকারি আন্তঃঅধিদফতর প্রধান সহকারী ও উচ্চমান সহকারী কল্যাণ সমিতি একটি স্মারকলিপি দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অবহিত করে। প্রধানমন্ত্রী এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দেন। এর পরই জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পদোন্নতি-সংক্রান্ত স্থায়ী কমিটি বৈঠকে বসে। ২০১২ সালের ১৩ আগস্টের বৈঠক থেকে পরিসংখ্যান ও গবেষণা সেলের কাছে ওই কর্মচারীদের সংখ্যা ও বেতন স্কেল চায় স্থায়ী কমিটি।

সেল থেকে জানানো হয়, এ ধরনের বঞ্চিত ভুক্তভোগী কর্মচারীর সংখ্যা ৪ হাজার ৯৯৩। তাদের মূল বেতন স্কেল ৫ হাজার ৫০০ টাকা। পদোন্নতি পেলে তাদের বেতন স্কেল ৮ হাজার টাকায় দাঁড়াবে। ইনক্রিমেন্ট পেয়ে তাদের প্রায় সবারই বেতন স্কেল ইতিমধ্যে ৮ হাজার টাকা ছুঁয়েছে। অনেকে অতিক্রমও করেছেন। কাজেই পদোন্নতি দিলে তাদের জন্য সরকারের অতিরিক্ত খরচও হবে না।

এরই মধ্যে পদোন্নতি-সংক্রান্ত স্থায়ী কমিটির সভাপতি নজমুল ইসলাম অবসরে গেলে সেখানে দায়িত্ব পান জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ইউনুসুর রহমান। ২০১৩ সালের ১৬ জানুয়ারি ইউনুসুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে আবারও একই তথ্য চাওয়া হয়। বলা হয়, সকল মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে প্রত্যেকটি দফতর-অধিদফতরে চিঠি দিয়ে তথ্য আনতে হবে। ইতিমধ্যে এক বছর পার হয়েছে। সেসব তথ্য এখনও পদোন্নতি-সংক্রান্ত স্থায়ী কমিটির হাতে পৌঁছেনি।



মন্তব্য চালু নেই