সকালে মুখোমুখি চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারত-পাকিস্তান

এশিয়া মহাদেশের ক্রিকেট বৈরিতায় সবচেয়ে রোমাঞ্চকর নাম ভারত-পাকিস্তান। ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ মানেই বাড়তি উত্তেজনা। প্রতিদ্বন্দ্বিতার বারুদে ঠাঁসা। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারত-পাকিস্তানের ম্যাচ মানেই বাড়তি কিছু। কিন্তু বিশ্বকাপে ভারত-পাকিস্তানের লড়াইয়ের ফল বরাবরই একতরফা!

এ পর্যন্ত পাঁচটি বিশ্বকাপের ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছে এশিয়ার ক্রিকেট পরাশক্তিদ্বয়। প্রতিবারই অবশ্য জিতেছে ভারত। এবার পাকিস্তানের অধিনায়ক মিসবাহ-উল-হকের সামনে সুযোগ রয়েছে একতরফা ফলে ভিন্নতা আনার। বিশ্বকাপে ভারতের বিপক্ষে জয় তুলে নিয়ে নজির স্থাপন করার। বিশ্বকাপের ‘বি’ গ্রুপে ভারত-পাকিস্তানের ম্যাচটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় সকাল সাড়ে নয়টায়। সরাসরি সম্প্রচার করবে গাজী টিভি, মাছরাঙা টিভি ও স্টার স্পোর্টস ১।

বিশ্বকাপের ভারতের বিপক্ষে পাকিস্তানের হারের (৫-০) বিষয়ে মিসবাহকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘যেকোনো মূহুর্তে যেকোনো ইতিহাস বদলে যেতে পারে। প্রত্যেকটি ম্যাচই সেই ইতিহাস বদলানোর সুযোগ।’

অন্যদিকে বিশ্বকাপে ৫-০ রেকর্ড সম্পর্কে ভারতের অধিনায়ক মাহেন্দ্র সিং ধোনি বলেন, ‘আসলে সত্যি বলতে কি, এ বিষয়ে আপনাকে অনেক প্রশ্নের জবাব দিতে হবে। সেটা এড়িয়ে বলতে গেলে বলতে হয়, ৫-০ কোনো ব্যাপার নয়!’

অস্ট্রেলিয়ার কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নিতে দুই মাস ধরে সেখানে অবস্থান করছে ভারত। বিশ্বকাপের আগে প্রস্তুতি ম্যাচে আফগানিস্তানের বিপক্ষের জয়টি বাদ দিলে ভারত কোনো জয় পায়নি। এ ছাড়া এশিয়ার বাইরের কোনো ওয়ানডে ম্যাচে গেল তিনমাসেও ভারতের কোনো জয়ের নজির নেই। এমন পরিস্থিতিতে বিশ্বকাপের মঞ্চে রোববার সকালে পাকিস্তানের মুখোমুখি হতে যাচ্ছে ভারত। সুযোগ-সন্ধানী পাকিস্তানের বিপক্ষে এই ম্যাচটি অনেকটা খোলা জানালার মতো। যেকোনো কিছু দৃশ্যমান হতে পারে।

বিশ্বকাপের আগে প্রস্তুতি ম্যাচে পাকিস্তান বাংলাদেশ ও ইংল্যান্ডের বিপক্ষে জয় পেয়েছে। তাই তারা বেশ খানিকটা ফুরফুরে মেজাজে রয়েছে। অবশ্য তার আগে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে বড় ব্যবধানে বেশ কয়েকটি ম্যাচ হেরেছে তারা।

উভয় দলের বোলিং স্কোয়াড বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, ভারতের মূল বোলার ইশান্ত শর্মা ইনজুরির কারণে দলে নেই। তার পরিবর্তে স্টুয়ার্ট বিনি রয়েছেন। আরেক বোলার ভুবনেশ্বর কুমারও এখনো শতভাগ ফিট নন। তিনি খেলতে না পারলে ধাওয়াল কুলকারনি মাঠে নামবেন। অন্যান্য বিশ্বকাপে ভারতের বোলিং সাইড যতোটা ভূগিয়েছে পাকিস্তানকে, এবার হয়তো ততোটা ভোগাতে পারবে না।

অন্যদিকে পাকিস্তান বোলার জুনাইদ খান নেই। কিন্তু তালিসম্যান মোহাম্মদ ইরফান রয়েছেন। যিনি বাংলাদেশের বিপক্ষে ৫ উইকেট নিয়েছেন। ভারতের লম্বা ব্যাটিং লাইনআপ রয়েছে। পাকিস্তানের ক্ষেত্রে সেটা অতোটা নেই। তবে কেউ উইকেটে থিতু হয়ে গেলে ভারতের বোলারদের ভোগাবে।

বিশ্বকাপের আগেই অ্যাডিলেটে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচ খেলে হেরেছে ভারত। তবে একই মাঠে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ৩৬৪ রান তুলে জয় পেয়েছে। তাই মাঠের কন্ডিশন সম্পর্কে ভারত আগেই অবগত রয়েছে। কিন্তু পাকিস্তান এই মাঠ সম্পর্কে অবগত নয়। অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে ভারত-পাকিস্তানের ম্যাচের ফল- ভারত ৪, পাকিস্তান ৩। কিন্তু গেল ১৫ বছরে অ্যাডিলেটে মুখোমুখি হয়নি ভারত-পাকিস্তান। এখন দেখার বিষয় ভারত তাদের জয়ের ধারা অব্যাহত রাখতে পারে কিনা। আর পাকিস্তান তাদের হারের বদনাম ঘোচাতে পারে কিনা।

তবে কঠিন হলেও সত্য, ভারত-পাকিস্তানের এই ক্রিকেটীয় উত্তেজনার পেছনে কাজ করছে দেশ দুটির রাজনৈতিক বৈরিতা! রাজনৈতিকভাবে তাদের মধ্যে দ্বন্দ্বমুখর সম্পর্র্ক না থাকলে হয়তো ক্রিকেট মাঠে অতোটা উত্তেজনা ছড়াত না। আর দশটা দেশের মতোই মুখোমুখি হত তারা।



মন্তব্য চালু নেই