সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ২ দিন ব্যাপী তাফসীরুল কুরআন মাহফিল সমাপ্ত

সকলকে ইসলামের সুশীতল ছায়াতলে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে : মুফতী ফয়জুল করীম

নায়েবে আমীরুল মুজাহিদীন (চরমোনাই’র মরহুম পীর সাহেব-এর সাহেবজাদা) মুফতী সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম বলেছেন, সমাজে চলমান অশান্তি দূর করতে গিয়ে মানুষ বিভিন্ন জাগতিক মতবাদ গ্রহণ করছে। কিন্তু এতে সমাজের অশান্তি না কমে বরং বেড়েই চলেছে। আসলে আল্লাহপ্রদত্ত জীবনব্যবস্থা ইসলামকে গ্রহণ না করলে কোনো সমস্যার স্থায়ী সমাধান সম্ভব নয়। একমাত্র ইসলামই পারে দুনিয়া ও আখেরাতের সমস্যা সমাধান করে দুনিয়াকে শান্তিময় বাসযোগ্য করে তুলতে।

দাওয়াতুন্নবী সা. উপলক্ষ্যে ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আয়োজিত দুই দিন ব্যাপী তাফসীরুল কুরআন মাহফিলে শেষ দিনে প্রধান অতিথির বয়ানে মুফতী ফয়জুল করীম এসব কথা বলেন।

মুফতী ফয়জুল করীম বলেন, ইসলাম শুধু ব্যক্তি জীবনে পালন করা কিছু আনুষ্ঠানিক ইবাদতের নাম নয়। মানুষের জৈবিক যত চাহিদা রয়েছে সবকিছুর দিকনির্দেশনা রয়েছে ইসলামে। অর্থনীতি, সমাজনীতি, রাজনীতিসহ সকল বিষয়ে অনুসরণীয় আদর্শের নাম হলো ইসলাম। কোনো মানুষ যদি পরিপূর্ণ ইসলামী জীবনাচার মেনে চলে, সে পরিণত হয় একজন আদর্শ মানুষে। তেমনি সমাজ ও রাষ্ট্র যদি ইসলাম অনুযায়ী পরিচালিত হয়, সেই রাষ্ট্রও হবে বিশ্বের মধ্যে মডেল। তিনি সূরা আসরের উদ্বৃতি দিয়ে বলেন, আল্লাহতায়ালা ঈমানদার, সালেহীন, সত্যবাদী ও ধৈর্য্যধারনকারী ছাড়া সকল মানুষকে ক্ষতিগ্রস্ত হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তাই তিনি সকলকে দেশ ও জাতির স্বার্থে ইসলামের সুমহান আদর্শের ছায়াতলে সমবেত হবার জন্য আহবান জানান।

তিনি আরো বলেন, প্রচলিত সমাজ ব্যবস্থা প্রকৃত মানুষ গড়ার কোনো উদ্যোগ নেই। মানুষ নৈতিকতা হারিয়ে অনৈতিক কর্মকান্ডের দিকে ধাবিত হচ্ছে। পহেলা বৈশাখে দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ ঢাবি ক্যাম্পাসে যে ঘটনাপ্রবাহের সৃষ্টি হলো তা কোনো বিবেকবান মানুষ মাত্রই বিচলিত ও বিহব্বল না হয়ে পারে না। কোথায় যাচ্ছে দেশের যুব সমাজ। এধরণের চরিত্রের লোক যদি রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পদে আসীন হয় তাহলে দেশের অবস্থা কোন দিকে যাবে? কেউ কী ভেবে দেখেছেন? তিনি সকলকে তওবা করে ইসলামের সুশীতল ছায়াতলে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার উদাত্ত আহ্বান জানান।

রবিবার (১৯ এপ্রিল) বাদ আছর থেকে মাহফিলের আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হয়। ধর্মীয় ও রাজনৈতিক জনতার দৃষ্টি ছিল সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের দিকে। রাজধানীর সকল এলাকা থেকে আছর নামাযের আগেই হাজার হাজার উৎসুক ইসলামপ্রিয় জনতা মাহফিলস্থলে পৌঁছতে থাকে। মাগরিবের নামাজের সময় জনতার উপচে পড়া ভীড় পরিলক্ষিত হয়। রাত ৯.৩০ মিনিটে যখন নায়েবে আমীরুল মুজাহিদীন মঞ্চে উঠেন তখন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে তিল ধারণের ঠাই ছিল না। বাংলাদেশের ইতিহাসের সাথে জড়িয়ে থাকা ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আল্লাহ আল্লাহ জিকিরে মুখরিত করে তোলেন লক্ষ লক্ষ ধর্মপ্রাণ মুসলমান।

দাওয়াতুন্নবী সা. মাহফিল বাস্তবায়ন কমিটির আহবায়ক হাফেজ মাওলানা এটিএম হেমায়েত উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত তাফসীর মাহফিলে আরো বয়ান পেশ করেন- খুলনার পীর সাহেব মাওলানা ইউনুছ আহমাদ, শায়খ জাকারিয়া রিসার্চ সেন্টার ঢাকা-এর মহাপরিচালক মুফতী মিযানুর রহমান সাঈদ, জাতীয় মসজিদ ব্য়াতুল মোকাররমের পেশ ইমাম মুফতী মুহিব্বুল্লিাহিল বাকী নদভী, জামিআ কারীমিয়া আরাবিয়ার মুহাদ্দিস মুফতী ওয়ালীউল্লাহ। মাহফিলে দেশবরেণ্য উলামায়ে কেরাম উপস্থিত ছিলেন। মাহফিল পরিচালনায় ছিলেন নগর সেক্রেটরি মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূম ও বাস্তবায়ন কমিটির সদস্য সচিব মাওলানা আব্দুর রাজ্জাক। সার্বিক তত্ত্ববধানে ছিলেন আলহাজ্ব আবদুল আলতাফ হোসেন ও মাওলানা এবিএম জাকারিয়া।



মন্তব্য চালু নেই