জ্যেষ্ঠ নেতাদের বেশিরভাগই উপস্থিত ছিলেন না

সংবাদ সম্মেলন নিয়ে সিনিয়ররা ক্ষুব্ধ!

দীর্ঘ ৫২ দিন পর নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে গণমাধ্যমে সামনে বক্তব্য রাখলেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। টানা দুই মাসের বেশি সময় ধরে চলা আন্দোলনের বিভিন্ন দিক ও পর্যালোচনা নিয়ে কথা বলেছেন তিনি।
খালেদা জিয়া চলমান আন্দোলনকে ‘আদর্শিক’ বলে আখ্যা দিয়েছেন। এর মাধ্যমে দিন পরিবর্তন হলে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়ানোর প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।
এছাড়া সঙ্কট নিরসনে কোনো যৌক্তিক পরিণতিতে না পৌঁছা পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়ে খালেদা জিয়া দলের নিস্ক্রিয় নেতাদের সক্রিয় হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি আশা প্রকাশ করেছেন, ক্ষমতসীনরা সঙ্কট নিরসনের উদ্যোগ নেবে এবং জাতি আসন্ন স্বাধীনতা দিবস ঐক্যবদ্ধভাবে পালন করতে পারবে।
তবে পূর্ব ঘোষিত এ সংবাদ সম্মেলনে নতুন কোনো দিক নির্দেশনা দেননি বিএনপি চেয়ারপারসন। গত ৫ জানুয়ারি তাৎক্ষণিকভাবে একক সিদ্ধান্তে অনির্দিষ্টকালের অবরোধ ডাকেন খালেদা জিয়া। পরবর্তীতে সেটা ২০ দলীয় জোটের আন্দোলন বলে চালানো হয়। এরপর সারা দেশে ব্যাপক সহিংসতার পরিস্থিতিতে এ কর্মসূচি নিয়ে তখন থেকেই দলের মধ্যে দ্বিমত ছিল।
শুক্রবারের সংবাদ সম্মেলনে ওই দ্বন্দ্বের কিছুটা ইঙ্গিত ছিল বলে অনেকে মনে করছেন। দলের প্রথম সারির বেশিরভাগ নেতাকে এসময় উপস্থিত থাকতে দেখা যায়নি।
স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, ভাইস চেয়ারম্যান বেগম সেলিমা রহমান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা এমএ কাইয়ুম এবং সহ মহিলা বিষয়ক সম্পাদক শিরিন সুলতানা এবং কয়েকজন কর্মকর্তা শুধু উপস্থিত ছিলেন। তারা বেগম খালেদা জিয়ার সাথে তার কার্যালয়ে দীর্ঘদিন ধরে অবস্থান করছেন।
কিন্তু দলের সিনিয়র নেতারা যারা বেগম খালেদা জিয়ার যেকোনো অনুষ্ঠানে সাধারণত সরব থাকেন তাদের মধ্যে স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আরএ গণি, ড. আব্দুল মঈন খান, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মাহাবুবুর রহমান, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, উপদেষ্টা সাবিহ উদ্দিন আহমেদ, মেজর জেনারেল (অব.) রুহুল আলম চৌধুরী, ব্যারিস্টার শাজাহান ওমর প্রমুখ নেতাদের কাউকে দেখা যায়নি।
দলের কয়েকটি সূত্রে জানা গেছে, চলমান আন্দোলনের কৌশল নিয়ে শীর্ষ নেতৃত্বের মধ্যে ভিন্নমত থাকায় জ্যেষ্ঠ নেতারা খালেদা জিয়ার সংবাদ সম্মেলনে আমন্ত্রণ পাননি। এ সংশ্লিষ্ট নেতাদের অনুসারীরা এতে বেশ ক্ষুব্ধ হয়েছেন।
বিএনপি চেয়ারপারসনের সংবাদ সম্মেলনে আপনিসহ সিনিয়র নেতাদের দেখা যায়নি। একটা খবর শোনা গেছে যে, সংবাদ সম্মেলনে আপনাদের আমন্ত্রণই জানানো হয়নি- এমন প্রশ্নের জবাবে স্থায়ী কমিটির সদস্য লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মাহাবুবুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি ঠিক বলতে পারবো না। এ কথা ঠিক যে আপনি চোখে দেখেননি আমাদের। তাহলে আপনারা কীভাবে বিশ্বাস করবেন আমরা গিয়েছি। ঠিকই আছে।’
অবশ্য অপর কয়েকটি সূত্র বলছে, খালেদা জিয়ার কার্যালয়ে অবস্থান করায় ওই সকল নেতা সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন। সিনিয়র নেতারা গ্রেফতার ও হয়রানি এড়াতে এবং কৌশলগত কারণে সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত হননি।
এদিকে দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন এবং সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরী কারাগারে এবং আ স ম হান্নান শাহ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।



মন্তব্য চালু নেই