ষোড়শীকে ৭ আইএস জঙ্গির বিয়ে!

এলাকা দখলের পর সেখানকার নারীদের ‘যৌনদাসী’ বানানোর খবর বেশ পুরনো।

মধ্যপ্রাচ্যভিক্তিক জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের (আইএস) সদস্যরা সিরিয়া ও ইরাকের নারীদের ওপর এ ধরনের বর্বরতা চালিয়ে আসছে।

তারই ধারাবাহিকতায় ১৬ বছরের এক তরুণীকে তুলে নিয়ে গিয়ে সাত-সাতজন জঙ্গি বিয়ে করে তার ওপর মির্মমতা চালিয়েছে। তিনি এখনও সিরিয়াতে বন্দি।

তার বড় বোন ফরিদাও (নাম পরিবর্তিত) এমন নির্মমতার শিকার হয়েছেন। দু’বোনকে তুলে নেয়ার আগে তাদের পাঁচ ভাইকে কুপিয়ে হত্যা করেছে জঙ্গিরা।

জঙ্গিদের হাত থেকে মুক্তি পাওয়া ফরিদার বর্ণনায় ওঠে এসেছে নারীদের ওপর আইএসের যৌন নির্যাতনের বর্ণনা।

ফরিদার বোন যখন সবে ১৬ বছরে পা দিয়েছে, ওরা তখনই তাকে তুলে নিয়ে যায়। ফরিদার বোন খুব সুন্দরী। তাই তাকে সাত-সাতজনের সঙ্গে বিয়ে দেয়া হয়েছে।

এখনও সিরিয়াতে বন্দি ফরিদার বোনকে প্রত্যেক রাতে সাত-সাতটি ‘স্বামী’র শয্যাসঙ্গী হতে হয়। কোনো কোনো রাতে একই সঙ্গে তাকে শয্যাসঙ্গী হতে হয় তিন বা চারটি ‘স্বামী’র।

ফরিদার বোনের ইচ্ছে-অনিচ্ছের ওপর কিছুই নির্ভর করে না। তার সাত ‘স্বামী’র যখন যেখানে যেমন ইচ্ছে হবে, ফরিদার বোনকে তখনই সেখানে সেই ‘দাবি’ তেমনভাবেই মেটাতে হবে।

ফরিদার কপাল একটু ভাল। সে ওই রোজ রাতের অত্যাচারের হাত থেকে রেহাই পেয়ে সবে ঘরে ফিরতে পেরেছে। তবে ফরিদার অভিজ্ঞতার ঝুলি ভরে একেবারে উপচে গিয়েছে!

ফরিদা চোখের সামনে দেখেছে, একটা লোক পরপর চারটি মেয়েকে টেনে-হিঁচড়ে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করল। একটি মেয়েকে পর পর দু’বার ধর্ষণ করল আধ ঘণ্টার মধ্যেই! আর একটি মেয়েকে ধর্ষণ করল তার ঘুম ভাঙিয়ে তুলে নিয়ে গিয়ে।

ফরিদা দেখেছে, মায়ের বুকের দুধ খাওয়া শিশুটিকে সরিয়ে নিয়ে গিয়ে ওই মেয়েটির ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ল একটি লোক। তারপর আরও তিনটি লোক ঝাঁপিয়ে পড়ল ওই মেয়েটির ওপর।

ফরিদার কথায়, ‘মেয়েটিকে ছিঁড়ে ওরা (আইএস জঙ্গি) ফালাফালা করে দিল।’

ফরিদার নিজের গল্পটাও কম মর্মান্তিক নয়। ফরিদাও দেখতে বেশ চটকদার ছিল। গায়ের রং ফেটে পড়ছে। যেমন চোখ, তেমনই তার ‘ক্লিভেজ’।

ফরিদাকে এ সবের ‘খেসারত’ দিতে হয়েছে নির্মমভাবে। ফরিদাকে বিয়ে করতে হয়েছিল পাঁচজনকে। আইএসের পাঁচ জঙ্গিকে বিয়ে করতে বাধ্য করা হয়েছিল ফরিদাকে।

ফরিদার কথায়, ‘একেকজন আমাকে কিনেছে। আমাকে নিয়ে যতটা পারে, ফুর্তি করেছে। রাতের পর রাত। আমাকে দিনেও ঘুমোতে দেয়নি ওদের প্রয়োজন মেটাতে। তার পর আমাকে অন্য আরেকজনের কাছে বেচে দিয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘আমার প্রথম ‘স্বামী’র এক বন্ধুর আমাকে দেখে ভাল লেগে গেল। সে আমাকে কিনে নিয়ে গিয়ে আমাকে নিয়ে ক’দিন ধরে খুব ফুর্তি করল। তারপর শখ ফুরোলে আমাকে তার আরেক বন্ধুর কাছে বেচে দিল। এইভাবে পাঁচজন আমাকে কিনেছে, চারজন বেচেছে।’

ফরিদা বলেন, ‘আমার পাঁচ-পাঁচটা ভাইকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে ওরা কুপিয়ে কুপিয়ে খুন করেছে। কিরকুকে আমার বাড়ি ভেঙে তছনছ করে দিয়েছে। যেভাবে আমার ভাইদের ওরা খুন করেছে একের পর এক, আমার বাড়ি তছনছ করেছে, তা আমি ১০০ বছরেও ভুলতে পারব না। আমি এখনও কাঁদি ওদের কথা ভেবে। আমার স্বামী এখনও বেঁচে রয়েছে। কিন্তু, তার কাছে মুখ দেখাব কী করে? আমি তো আর কখনওই সুখী করতে পারব না আমার আদত স্বামীকে!’

তথ্যসূত্র- ওয়াশিংটন পোস্ট, এনডিটিভি, আনন্দবাজার



মন্তব্য চালু নেই