শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের জয়

নিউজিল্যান্ডের লক্ষ্যটা খুব বেশি ছিল না। মাত্র ১৫২ রান। কিন্তু ১৪৬ রানের মধ্যে তাদের ৯ ব্যাটসম্যানকে ফিরিয়ে ম্যাচে টানটান উত্তেজনা সৃষ্টি করে অস্ট্রেলিয়া। তখন মনে হচ্ছিল, ম্যাচটা বুঝি অস্ট্রেলিয়াই জিততে যাচ্ছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত জয় হলো নিউজিল্যান্ডের। বিশ্বকাপের শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচে অস্ট্রেলিয়াকে ১ উইকেটে হারিয়েছে নিউজিল্যান্ড।

শনিবার অকল্যান্ডের ইডেন পার্কে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে ট্রেন্ট বোল্টের তোপে পড়ে ১৫১ রানে অলআউট হয় অস্ট্রেলিয়া। জবাবে ১ উইকেট ও ১৬১ বল হাতে রেখে জয় তুলে নেয় নিউজিল্যান্ড।

১৫২ রানের ছোট টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে নিউজিল্যান্ডকে উড়ন্ত সূচনা এনে দেন ওপেনার ব্রেন্ডন ম্যাককালাম। দলীয় ৪০ রানে অবশ্য আরেক ওপেনার মার্টিন গাপটিল বিদায় নেন ১১ রান করে। তবে মাত্র ২১ বলেই ঝড়ো ফিফটি তুলে নেন ম্যাককালাম।

ফিফটির পর ইনিংসকে আর বড় করতে পারেননি ম্যাককালাম। দলীয় ৭৮ রানে তিনি বিদায় নেন ৫০ রান করে। তার ২৪ বলের ইনিংসে ছিল ৭টি চার ও ৩টি ছক্কার মার।

এরপর দলীয় ৭৯ রানের মধ্যেই অবশ্য রস টেলর ও গ্র্যান্ট এলিয়টের উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে নিউজিল্যান্ড। স্কোর দাঁড়ায় ৪ উইকেটে ৭৯ রান। এই দুজনকেই বোল্ড করেন অসি পেসার মিচেল স্ট্যার্ক। তবে পঞ্চম উইকেটে দলের হাল ধরেন কেন উইলিয়ামসন ও কোরি অ্যান্ডারসন।

দলীয় ১৩১ রানে অ্যান্ডারসনকে (২৬) ফিরিয়ে তাদের ৫২ রানের জুটি ভাঙেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। অ্যান্ডারসনকে প্যাট কামিন্সের ক্যাচে পরিণত করেন তিনি। স্কোরবোর্ডে আর ৮ রান যোগ হতেই বিদায় নেন লুক রঞ্চি।

এরপর ১৩৯ থেকে ১৪৬, ৭ রানের ব্যবধানে আরো ৩ ব্যাটসম্যানকে হারায় নিউজিল্যান্ড। তখন নিউজিল্যান্ডের জয়ের জন্য প্রয়োজন পড়ে ৬ রান। আর অস্ট্রেলিয়ার ১ উইকেট। কিন্তু তখনো যে ক্রিজে ছিলেন কেন উইলিয়ামসন।

২৪তম ওভারে প্যাট কামিন্সের বলে ছক্কা হাঁকিয়ে দলকে ১ উইকেটের রুদ্ধশ্বাস জয় এনে দেন তিনি। ৪২ বলে ৪৫ রান করে অপরাজিত থাকেন উইলিয়ামসন। অন্যদিকে ২৮ রানে ৬ উইকেট নিয়েও হতাশা নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয় মিচেল স্টার্ককে।

এর আগে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে অস্ট্রেলিয়াকে আক্রমণাত্মক সূচনা এনে দেন অ্যারন ফিঞ্চ। তবে বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি তিনি। একটি করে চার ও ছক্কায় ৭ বলে ১৪ রান করে বিদায় নেন ফিঞ্চ। তাকে বোল্ড করেন নিউজিল্যান্ডের পেসার টিম সাউদি।

দ্বিতীয় উইকেটে দলের হাল ধরেন ডেভিড ওয়ার্নার ও শেন ওয়াটসন। তবে ওয়াটসনকে ফিরিয়ে তাদের ৫০ রানের জুটি ভাঙেন ড্যানিয়েল ভেট্টরি। ২৩ রান করা ওয়াটসনকে সাউদির ক্যাচে পরিণত করেন এই কিউই স্পিনার।

ওয়াটসনের বিদায়ের পরেই ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে অস্ট্রেলিয়া। ৮০ থেকে ৯৭, মাত্র ১৭ রানের মধ্যেই আরো ৪ ব্যাটসম্যানকে হারায় অসিরা। একে একে সাজঘরে ফেরেন ওয়ার্নার (৩৪), স্টিভেন স্মিথ (৪), গ্লেন ম্যাক্সওয়েল (১) ও মিচেল মার্শ (০)।

দলীয় ৮০ রানে ওয়ার্নারকে এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে ফেলেন সাউদি। দলীয় ৯৫ রানে ভেট্টরির বলে লুক রঞ্চির হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন স্মিথ। দলীয় ৯৬ ও ৯৭ রানে যথাক্রমে ম্যাক্সওয়েল ও মার্শকে বোল্ড করে বিদায় করেন ট্রেন্ট বোল্ট।

এরপর অস্ট্রেলিয়ার দলীয় ১০৪ রানে মাইকেল ক্লার্ককেও (১২) সাজঘরে ফেরান ওই ট্রেন্ট বোল্ট। অসি অধিনায়ককে কেন উইলিয়ামসনের ক্যাচে পরিণত করেন তিনি। ইনিংসের ২২তম ওভারের প্রথম বলে দলীয় ১০৬ রানে জনসনকে বিদায় করেন বোল্ট। তাকেও উইলিয়ামসনের ক্যাচ বানিয়ে সাজঘরে ফেরান তিনি। একই ওভারের শেষ বলে মিচেল স্টার্ক বিদায় নিলে অস্ট্রেলিয়ার স্কোর দাঁড়ায় ১০৬/৯!

সেখান থেকে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন ব্র্যাড হাডিন ও প্যাট কামিন্স। হাডিনের একার ব্যাটে ভর করেই রানের কোটা দেড়শ পার করে অস্ট্রেলিয়া। তবে দলীয় ১৫১ রানে হাডিনকে বিদায় করে অস্ট্রেলিয়ার ইনিংসের ইতি টানেন কোরি অ্যান্ডারসন। দলীয় সর্বোচ্চ ৪৩ রান করেন হাডিন।

২৭ রানে ৫ উইকেট নিয়ে নিউজিল্যান্ডের সেরা বোলার ট্রেন্ট বোল্ট। এ ছাড়া টিম সাউদি ও ড্যানিয়েল ভেট্টরির ঝুলিতে জমা পড়ে ২টি করে উইকেট।

ম্যাচ সেরার পুরস্কার জেতেন ট্রেন্ট বোল্ট।



মন্তব্য চালু নেই