শ্বাশুড়ির সাথে ভাল সম্পর্ক রাখতে বুঝে নিন তাঁর মনস্তত্ব

আমাদের মাঝে অনেকেই অভিযোগ করেন তাদের শ্বাশুড়িরা তাদের পছন্দ করেন না। মনে করাটা কিন্তু অযৌক্তিক নয়। মনোবিজ্ঞানের বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, বিষয়টা সত্যি। ছেলের বৌ এর ক্ষেত্রে নানান রকম জটিল ভাবনা বিরাজ করে মায়ের মনে। সব ভাবনা যে সচেতন মনে ভাবছেন তা নয়। অবচেতন মনেই তার এই ভাবনাগুলো জড়ো হয়ে তাঁকে দিয়ে করিয়ে এমন সব কাজ যা হয়ত ব্যহত করছে আপনার জীবন। কী তার সাইকোলজি, আসুন জেনে নিই-

ছেলের বউ হিসেবে আপনাকে চান নি তিনি
মায়েরা ছোটবেলা থেকে তাদের ছেলের জন্য একটা স্বপ্নের পৃথিবী সাজান। তারা নিজেরাই কল্পনা করে নেন কেমন হবে তার ছেলের বউ। সেই ‘কেমন হবে’ চেহারা থেকে শুরু করে তার শরীরের গঠন, সংসারের কাজকর্ম সব কিছুরই একটা ছক। সেই ছকমত না মিললে তার মন আর মেনে নিতে পারে না।

আপনি বেশী আকর্ষণীয়
শুনতে মোটেই ভাল লাগছে না কথাটা। কিন্তু সত্যি। আপনি যদি আপনার শ্বাশুড়ির তুলনায় বেশী আকর্ষণীয়, স্মার্ট, কাজে পারদর্শী হন তাহলে তিনি ঈর্ষাবশতই আপনাকে পছন্দ করবেন না। আপনি হয়ত এসেই সবার প্রশংসা কুড়াচ্ছেন। আপনার রান্না, ঘর গোছানো থেকে শুরু করে সবকিছুই মুগ্ধ করছে পরিবারের সবাইকে। বুদ্ধিতেও আপনি সেরা। আপনার শ্বাশুড়ির এটা ভাল না লাগাই স্বাভাবিক। কারণ গৃহকর্ত্রী হইসেবে এতদিন তার দখলেই ছিল সব প্রশংসা।

অনিরাপদ বোধ
নতুন একজন মানুষ পরিবারে চলে আসার পর তার সাথে তিনি সরাসরি মানিয়ে নিতে চান। কিন্তু মানুষটি একেবারে তার উত্তরাধিকারী অবস্থানে আসায় তিন অনিরাপদবোধ করে থাকেন। ছেলে দূরে সরে যাবে, তার হাত থেকে নিয়ন্ত্রণ চলে যাবে এই ভাবনা তাকে তটস্থ করে রাখে।

অর্থ-সম্পদ
আপনি যদি আপনার শ্বাশুড়ির তুলনায় অধিক ধনী পরিবারের হন এবং ভাল চাকরি করেন সেটাও তাকে মানসিকভাবে চাপে ফেলতে পারে। খেয়াল করে দেখুন, আমাদের দেশের মায়েরা কম শিক্ষিত গরীব পরিবারের মেয়েকে ঘরের বৌ করে আনতে চান। তারা মনে করেন এতে নিয়ন্ত্রণ করা সহজ হয়। কিন্তু এখন আর সেটা করা যায় না। ঘরে উচ্চ শিক্ষিত বউ থাকা সামাজিক মর্যাদার ব্যাপার। তাই উচ্চ শিক্ষিত মেয়েটিকে ছেলের বউ করে আনা তো হল, কিন্তু শিক্ষা তাকে দিয়েছে আত্মবিশ্বাস, স্বাধীনচেতা মনোভাব। যা ব্যহত করে শ্বাশুড়ির নিয়ন্ত্রণ মানসিকতাকে।

কীভাবে থাকবেন মিলেমিশে?
আপনার শ্বাশুড়ির আপনার প্রতি যে বিরূপ মনোভাব তা আসলে ছেলের প্রতি তার অগাধ ভালবাসার ফল। তিনি খারাপ মানুষ নন বা আপনার খারাপ চান এমনটাও নয়। তার প্রতিটি আচরণের রয়েছে সাইকোলজিকাল ব্যাখ্যা। তাই তাকে ভুল বুঝবেন না বা রাগ করে থাকবেন না। আপনি যা করতে পারেন –

১। শ্বাশুড়িকে ভিন্ন কোন সম্বোধন না করে আপনার স্বামীর করা সন্মোধনটি বেছে নিন।

২। তার সংসারে আপনি নতুন অতিথি। যে কোন কাজে তার পরামর্শ নিন।

৩। আপনার অধিকার আপনাকে বুঝে নিতেই হবে। আত্মসম্মানের জায়গায় কোন ছাড় দেবেন না। তবে শুরুতে তার বন্ধু হন। নিজের সম্পর্কে একটি ইতিবাচক জায়গা তৈরি করুন।



মন্তব্য চালু নেই