শেয়ার লেনদেনে তিন স্তরে করারোপ

বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) তালিকাভুক্ত সব কোম্পানির শেয়ার লেনদেনের ক্ষেত্রে তিন স্তরের করারোপ করা হয়েছে।

কর আরোপের ওই নির্দেশনা দিয়ে সম্প্রতি একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এনবিআরের একটি সূত্র  বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

তবে অভ্যন্তরিণ সম্পদ বিভাগের সচিব ও এনবিআর চেয়ারম্যান মো. নজিবুর রহমান স্বাক্ষরিত ওই প্রজ্ঞাপনে বিএসইসি তালিকাভুক্ত সরকারি কোম্পানির শেয়ার লেনদেনের ক্ষেত্রে কর হতে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

এনবিআর সূত্রে জানা যায়, ২০১৪ সালের ১৮ আগস্টে শেয়ার লেনদেন সংক্রান্ত জারিকৃত এসআরও-২১৭ রহিতক্রমে বিএসইসির তালিকাভুক্ত সব কোম্পানির শেয়ার লেনদেনের ওপর করারোপ করা হয়েছে।

জারি করা প্রজ্ঞাপনের প্রথম ধাপে আয়কর আইনের ২ নম্বর অধ্যায়ের ধারা (২০) এর অধীন কোম্পানি মর্যাদা ভুক্ত ও ধারা (৩২) এর অধীন ফার্ম মর্যাদাভুক্ত করদাতার শেয়ার লেনদেনের উদ্ভূত আয়ের ওপর ১০ শতাংশ হারে করারোপ করা হয়েছে।

অনুরূপভাবে প্রজ্ঞাপনের দ্বিতীয় ধাপে ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, মার্চেন্ট ব্যাংক, বীমা, লিজিং কোম্পানি, পোর্টফোলিও ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি, স্টক ডিলার বা স্টক ব্রোকার কোম্পানির স্পন্সর শেয়ার হোল্ডার বা শেয়ারহোল্ডার ডিরেক্টরদের শেয়ার লেনদেনের অর্জিত আয়ের ওপর পাঁচ শতাংশ হারে করারোপ করা হয়েছে।

করারোপের তৃতীয় স্তরে বলা হয়েছে, প্রথম স্তরে বর্ণিত কোম্পানি সমূহের স্পন্সর শেয়ার হোল্ডার বা শেয়ার হোল্ডার ডিরেক্টর ব্যতীত স্টক এক্সচেঞ্জের তালিকাভুক্ত অন্য কোন কোম্পানির শেয়ার হোল্ডার, যাদের সংশ্লিষ্ট আয় বৎসরের যে কোন সময়ের স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত কোন কোম্পানি বা কোম্পানি সমূহের পরিশোধিত মূলধনের ১০ শতাংশের অধিক পরিমান শেয়ার রয়েছে তাদের উক্ত কোম্পানি বা কোম্পানি সমূহের শেয়ার লেনদেনের অর্জিত আয়ের ওপর পাঁচ শতাংশ হারে কর প্রদান করতে হবে।

অন্যদিকে আয়কর আইনের অধ্যায় ৫৩ (এম) অনুযায়ী উপরে উল্লেখিত করদাতা ছাড়া অন্য সকল করদাতাদের স্টক এক্সচেঞ্জে তালিাকাভুক্ত কোম্পানির শেয়ার লেনদেনের অর্জিত আয়ের ওপর প্রদেয় আয়কর হতে অব্যাহতি প্রদান করা হয়েছে।

আয়কর অধ্যাদেশ ১৯৮৪ এর ৪৪ অধ্যায়ের ৪ উপ-অধ্যায়ের ধারা (বি) এর প্রদত্ত ক্ষমতা বলে এনবিআর শেয়ার লেনদেনের ক্ষেত্রে অর্জিত আয়ের ওপর ওই করারোপ করে। আর এনবিআরের এই আদেশ চলতি অর্থবছরের পহেলা জুলাই থেকে কার্যকর বলে ধরা হবে।

এ বিষয়ে এনবিআরের আয়কর বিভাগের এক উর্দ্ধতন কর্মকর্তা জানান, চলতি অর্থবছরে সরকার পুঁজিবাজারের জন্য সর্বোচ্চ সুবিধা নিশ্চিত করতে এই নির্দেশনা দিয়েছিল। তবে রাজস্ব আদায়ের বিষয়টি বিবেচনা করে সরকারের নির্দশনা অনুযায়ী এনবিআর শেয়ার লেনদেনের অর্জিত আয়ের ওপর সবচেয়ে কম হারে কর ধার্য্য করার চেষ্টা করেছে।

চলতি ২০১৫-১৬ অর্থবছরে এনবিআর রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ৭৬ হাজার ৩৭০ কোটি টাকা। যা মোট বাজেটের প্রায় ৬০ শতাংশের সমান।

এক্ষেত্রে রাজস্ব আদায়ে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে প্রত্যক্ষ কর বা আয়কর খাতকে। এখাতে রাজস্ব কর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৬৫ হাজার ৯৩২ কোটি টাকা।রাইজিংবিডি



মন্তব্য চালু নেই