শেষ পর্যন্ত স্বামী ও প্রেমিক কেউই পেলেন না আঁখিকে

এত ঘটনার পরও স্ত্রী তানিয়া আক্তার আঁখিকে ফিরে পেতে চান স্বামী জাকির হোসেন দীপু। এ কারণে তিনি অপহরণ মামলা দায়েরের পর স্ত্রীকে তার জিম্মায় দিতে আদালতে আবেদন জানিয়েছেন। তবে আদালতে তার আবেদনের শুনানি হয়নি। সিলেটের নারী ও শিশু ট্রাইব্যুনালে আগামী ১০ই মে শুনানি হবে।

তবে, দীপুর অপহরণ মামলার প্রেক্ষিতে রোববার তানিয়াকে উদ্ধার করে আদালতে হাজির করে পুলিশ। সিলেটের ওসমানী মেডিকেল কলোনি এলাকা থেকে দুপুরে তাকে উদ্ধারের পর আদালতে উঠায় পুলিশ। আদালত তার জবানবন্দি রেকর্ড করেছে। জবানবন্দি শেষে পিতার জিম্মায় চলে গেল সিলেটের বধূ তানিয়া আক্তার আঁখি। স্বামী কিংবা প্রেমিকের জিম্মায় গেল না। সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কর্মচারী আতাউর রহমানের মেয়ে তানিয়া।

বছর দেড়েক আগে তার বিয়ে হয় নগরীর সুবহানীঘাট এলাকার যুবক জাকির হোসেন দীপুর সঙ্গে। দীপুর ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলেন মেন্দিবাগ এলাকার জয়নাল আবেদীন অভি। বন্ধুত্বের সুবাদে যাওয়া আসার সুযোগে জয়নালের সঙ্গে গোপন সম্পর্ক গড়ে উঠে দীপুর স্ত্রী তানিয়া আক্তার আঁখির। তানিয়াও ক্রমশ দুর্বল হয়ে পড়ে জয়নালের প্রতি। একপর্যায়ে তাদের মধ্যে ঘটতে থাকে গোপন পরকীয়া, গোপন অভিসার। বিষয়টি টের পেয়ে প্রতিবাদ জানায় দীপু। পরে সামাজিক ও ঘরোয়াভাবে বিষয়টি শেষ করে স্বামীর সংসারে ফিরিয়ে নেয়া হয় তানিয়াকে। কিন্তু তাতেও শেষ হয়নি, তানিয়ার পিছু ছাড়েনি জয়নাল।

অবশেষে গত ২১ শে ফেব্রুয়ারি তানিয়া আক্তার আঁখিকে ফুসলিয়ে স্বামীর ঘর থেকে অপহরণ করে নিয়ে যায় জয়নাল আবেদীন অভি। এ সময় তাকে সহযোগিতা করে তার কয়েক বন্ধু। এ ঘটনার পর তানিয়া ও জয়নালকে সিলেট নগরীর দরগাহ গেটস্থ একটি হোটেলে পাওয়া যায়। সেখানে তারা রাত যাপন করে বলে হোটেলের রেজিস্টার খাতা সূত্রে জানা গেছে। এ ঘটনার পর দীপু সিলেটের নারী ও শিশু ট্রাইব্যুনালে তানিয়াকে অপহরণ মামলা করেন।

ওই মামলায় দীপু জানিয়েছেন, জয়নালের সঙ্গে তার স্ত্রী তানিয়া আক্তার বেপরোয়া চলাচল করে। এ বিষয়টি জানার পর তিনি ২১ শে সেপ্টেম্বর সিলেটের কোতোয়ালি থানায় জিডি করেন। জিডির পরও তাদের গোপন সম্পর্কের ইতি ঘটেনি। বরং আরও বেড়ে যায়। তানিয়া ও জয়নাল আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠে। স্বামী দীপুকে জয়নাল ও তানিয়া শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার চেষ্টা চালায়। এ ঘটনায় ১৭ই জানুয়ারি দীপু আরও একটি জিডি করেন।

এজাহারে দীপু আরও উল্লেখ করেন, আসামি জয়নাল তার স্ত্রীকে জোরপূর্ব উঠিয়ে নিয়ে (প্রকাশ অযোগ্য শব্দ) জড়ানোর চেষ্টা করছে। একই সঙ্গে তাকেও মোবাইল ফোনে হুমকি দিচ্ছে। তিন লক্ষ টাকা না দিলে স্ত্রী তানিয়াকে হত্যা করে লাশ গুম করে ফেলারও হুমকি দেয়। সিলেটের কোতোয়ালি থানায় ৩১শে মার্চ মামলা রেকর্ডের পর থেকে জয়নাল ও তানিয়া পলাতক ছিল। এরপর রোববার পুলিশ তাকে উদ্ধার করে আদালতে হাজির করে। আদালত তানিয়ার জবানবন্দি রেকর্ডের পর পিতা আতাউর রহমানের জিম্মায় দিয়েছেন।

তবে, আদালতে তানিয়া জয়নালকে তার প্রেমিক হিসেবে উল্লেখ করলেও দোষ চাপিয়েছে স্বামী দীপুর ওপর। আদালতে জানিয়েছে, দীপুর মাধ্যমেই জয়নালের সঙ্গে তার পরিচয়। এদিকে, গতকাল দীপু জানিয়েছেন, তানিয়া এখনও তার স্ত্রী। জয়নালের সঙ্গে যখন তার গোপন সম্পর্ক হয় তখন বিষয়টি তিনি গোপন রেখেই তানিয়ার সঙ্গে ঘর সংসার করেছিলেন। জয়নালকে সরাতে তিনি পরপর দুটি জিডিও করেন।

কিন্তু জয়নালের সঙ্গে ঘর ছাড়ার পর তানিয়াকে তিনি খোঁজে পাননি। এ কারণেই তিনি প্রথমে কোতোয়ালি থানায় এজাহার করেন। থানায় মামলা রেকর্ড না করায় তিনি আদালতে মামলা করেন। পরে আদালতের নির্দেশেই পুলিশ মামলা রেকর্ড করেছে। তিনি বলেন, এখন তার দায়ের করা মামলার অপর আসামি পলাতক রয়েছে। তাকে গ্রেপ্তার করলেই পুরো ঘটনা খোলাসা হবে। -এমজমিন



মন্তব্য চালু নেই