শুরুর পরই মীর কাসেমের রিভিউ শুনানি মুলতবি

মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত জামায়াতে ইসলামীর নেতা মীর কাসেম আলীর রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) শুনানি মুলতবি করেছেন আদালত।

মীর কাসেমের আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেনের করা সময় আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আগামী রোববার (২৮ আগস্ট) পর্যন্ত শুনানি মুলতবি ঘোষণা করেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এস কে) সিনহার নেতৃত্বাধীন আপিল বেঞ্চ।

বেঞ্চের অন্য বিচারপতিরা হলেন—বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী, বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দার ও বিচারপতি মোহাম্মদ বজলুর রহমান।

শুনানি শুরুর আগে মীর কাসেমের পক্ষে খন্দকার মাহবুব হোসেন আদালতকে বলেন, ‘মাই লর্ড, আমি অসহায়। সব নথি মীর কাসেম ‌আলীর ছেলে ব্যারিস্টার আরমানের কাছে ছিল। কিন্তু তিনি নিখোঁজ রয়েছেন। তাঁর পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তাঁকে বাসা থেকে উঠিয়ে নিয়ে গেছে। যে কারণে আমরা মামলার শুনানি করতে পারছি না।’

এ সময় প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘এটা আলাদা একটা বিষয়। আপিল বিভাগের জাজমেন্ট তো আপনাদের কাছে আছে। আপনাদের কাছে যদি না থাকে, তাহলে আমার কাছ থেকে নিয়ে যান। আজ সাড়ে ১১টায় প্রয়োজনে শুনানির জন্য আসেন। তবু আজকেই শুরু করেন।’

এ সময় খন্দকার মাহবুব বলেন, ‘রিভিউ পরিচালনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য আমাদের কাছে রয়েছে। কিন্তু এটার নথি আমাদের হাতে নেই। এটা ব্যারিস্টার আরমানের কাছেই আছে। তাই শুনানি করতে পারছি না। তাই আমাদের সময় দেওয়া হোক।’

জবাবে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘আপনাদের আমি সম্মান করি। আপনারা সিনিয়র আইনজীবী। আমি কিন্তু অনেক লিবারেল। আপনারা এগুলো কেন করছেন?’

পরে খন্দকার মাহবুব বলেন, ‘আমাদের কাছে নথি না থাকলে আমরা কীভাবে শুনানি করব?’

জবাবে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘এখন শুরু করুন। এরপর রোববার পর্যন্ত শুনানি মুলতবি করব।’

এ সময় খন্দকার মাহবুব মামলার রিভিউর বিষয়ে শুনানি শুরু করলে আদালত রোববার পর্যন্ত তা মুলতবি করেন।

গত ২৫ জুলাই রিভিউ শুনানির জন্য এক মাস সময় দেওয়া হয় মীর কাসেম আলীকে। তাঁর আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন রিভিউ শুনানির জন্য দুই মাসের সময় আবেদন করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে আদালত এক মাসের সময় মঞ্জুর করেন।

ওই দিন শুনানি শেষে ২৪ আগস্ট রিভিউ শুনানির দিন নির্ধারণ করা হয়। তবে রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম সময় আবেদনের বিরোধিতা করেন।

গত ১৯ জুন আপিল বিভাগের দেওয়া মৃত্যুদণ্ডাদেশের রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে আবেদন করেন মীর কাসেম আলী। এতে ১৪টি আইনি যুক্তি তুলে ধরে তাঁকে বেকসুর খালাস দেওয়ার আবেদন জানানো হয়।

জামায়াতে ইসলামীর নির্বাহী পরিষদের সদস্য মীর কাসেম আলীকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দেওয়া মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল রেখে আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ রায় গত ৬ জুন প্রকাশ করা হয়।

মুক্তিযুদ্ধের সময় কিশোর জসিমসহ ছয়জনকে হত্যার দায়ে গত ৮ মার্চ মীর কাসেমের মৃত্যুদণ্ডের রায় বহাল রেখে আদেশ দেন আদালত। পরে ৭ জুন তাঁকে মৃত্যু পরোয়ানা পড়ে শোনানো হয়।



মন্তব্য চালু নেই