অস্ত্র ভান্ডার এখনও মজুদ

শীর্ষ সন্ত্রাসী ও দাপুটে সর্বহারা নেতা নান্নু খাঁ অবশেষে আটক

কল্যান কুমার চন্দ, বরিশাল প্রতিনিধি: বরিশালের উজিরপুর উপজেলার কুখ্যাত শীর্ষ সন্ত্রাসী ও সর্বহারা নেতা নান্নু খাঁ’কে বুধবার মঙ্গলবার গভির রাতে গুঠিয়া এলাকার দোসতিনা গ্রামের একটি বাড়ি থেকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গ্রেফতার করেছে উজিরপুর থানা পুলিশ।

উজিরপুর উপজেলার গুঠিয়া ইউনিয়নের নারায়নপুরের কুখ্যাত সন্ত্রাসী বাদল খান ওরফে কানা বাদলের মৃত্যুর পর তার অস্ত্রভান্ডার ও সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে খুব তোড়-জোর করে মাঠে নেমেছিল তারই ছোট ভাই শীর্ষ সন্ত্রাসী ও সর্বহারা নেতা নান্নু খান। দীর্ঘদিন পুলিশ প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে নান্নু ও তার বাহিনী অস্ত্র ও মাদকের রমরমা ব্যবসা চালাচ্ছিল । এতদিন এলাকার মানুষের মনে শুধু একটাই আতংক বিরাজ করছে আবার সর্বহারা। সেই আতংক কিছু দিনের জন্য হলেও দূর হয়েছে বলে মনে করছে এলাকার সাধারন মানুষ।

মঙ্গলবার গভির রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গুঠিয়া এলাকার দোসতিনা গ্রাম থেকে উজিরপুর মডেল থানার এস.আই গাজী শামীমুর রহমান ও এস.আই আশীষ সরকার তাকে আটক করে। তার বিরুদ্ধে দুটি মামলায় আদালতের গ্রেফতারী পরোয়ানা রয়েছে। এর মধ্যে একটিতে সে ২ বছরের সাজাপ্রাপ্ত। তবে ওয়ান ইলেভেনের সেই দাপুটে সর্বহারা নেতা নান্নুকে গ্রেফতারের খবরে এলাকার মানুষ স্বস্তি প্রকাশ করেছে।

এলাকার একাধিক বিশ্বস্ত সূত্র নিশ্চিত করে জানায়, বাদলের মৃত্যুর পরে তার রেখে যাওয়া অস্ত্র ভান্ডার ও সন্ত্রাসী বাহিনীর দায়িত্ব নেয় নান্নু খাঁ। ২০১৩ সালে প্রথম নান্নু খান নতুন করে যখন সন্ত্রাসী বাহিনী গঠনের উদ্দ্যোগ নেয় তখন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র‌্যাব-৮ সদ্যসরা তার বাড়ীতে অভিযান চালিয়ে ৫ টি আগ্নেয়াস্ত্র সহ তাকে গ্রেফতার করে। এ সময় তার বাড়ীর আঙিনা থেকে ১৫’শ বোতল ফেন্সিডলও উদ্ধার করে।

এছাড়া সন্ত্রাসী নান্নু খা ও তার বাহিনী বছর কয়েক আগে গুঠিয়া এলাকার দোসতিনা গ্রামের সিরাজ হাওলাদারের পুত্র শহীদ হাওলাদারকে নির্মমভাবে হত্যা করে এবং সেই মামলায় নিহত শহীদের পুত্র বায়েজিদ প্রধান স্বাক্ষী হওয়ায় ওই সন্ত্রাসী নান্নু ও তার বাহিনীর হাতে তাকেও প্রান দিতে হয়েছে।

কিন্তু এতকিছরু পরেই সে দীর্ঘদিন উজিরপুর-বরিশালের সর্বহারা জগতে শীর্ষ নেতাদের একজন হিসেবে রাজত্ব কায়েম করেছে। তার নেপথ্যের খুঁটির জোর হচ্ছে সে বর্তমান সরকার দলীয় সমর্থক, রাজনীতিতে তার মত শীর্ষ সন্ত্রাসী ও ক্যাডার অনেক নেতার প্রয়োজন। তবে সে আটকের পরে ক্ষমতাসীন দলীয় বেশ কয়েকটি মহল বেশ উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছিল, এবং তাকে যে কোন শর্তে ছারিয়ে নিতে বুধবার দিনব্যাপী উপজেলা পরিষদের ক্ষমতাশালি এক নেতা বহু চেষ্টা করেও ব্যার্থ হয়েছেন।

স্থানীয় কয়েকটি সূত্রের দাবী, নান্নু খাঁ এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব করে চলছিল,কিন্তু অবলেহিত এই গুঠিয়া ইউনিয়নে এর আগে দীর্ঘদিন ধরে উজিরপুর মডেল থানার পুলিশ সদস্য এ.এস.আই সরোয়ার হোসেন দায়িত্বে ছিলেন। তার সাথে নান্নু খানের গভীর সখ্যতা ছিল। নান্নুর নেতৃত্বে সে এলাকার বিভিন্ন মাদক ব্যবসায়ী ও জুয়ারীদের কাছ থেকে মাসোয়ারা আদায় করতো।

তবে স্থানীয় ওই সূত্রটি এ সকল তথ্যের কোন সু-নিশ্চিত প্রমান দিতে পারেনি। সার্বিক চিত্রপটে নান্নু গ্রেফতারে গতকাল থেকে এলাকার অসহায়,নিরুপায়, খেটে খাওয়া সাধারন মানুষ পুলিশ প্রশাসনকে সাদুবাদ জানিয়ে বিভিন্ন মাধ্যমে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছে।



মন্তব্য চালু নেই