শীতে হৃদরোগের সমস্যা বাড়ে

ঋতু পরিবর্তনের সাথে সাথে চারপাশের আবহাওয়ারও ব্যাপক পরিবর্তন হয়। নতুন আবহাওয়ার সাথে মানিয়ে নিতে অনেক ক্ষেত্রেই সমস্যা তৈরি হয় অনেকের। বিশেষ করে শীতের সময় আমাদের শারীরিক সমস্যা বৃদ্ধি পায় বেশি। ঠাণ্ডাজনিত সমস্যা ছাড়াও হৃদপিণ্ডের অনেক জটিলতা এই সময় দেখা দেয় বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।

ফরটিস এসকর্ট হার্ট ইনস্টিটিউটের হৃদরোগ প্রোগ্রামের পরিচালক ডা: বিশাল রাস্তোগি বলেন, হার্ট ফেইলের প্রধান কারণ হচ্ছে হৃদপিণ্ড যখন ঠিকভাবে কাজ করতে ব্যর্থ হয় বা রক্ত জমাট বেধে যায়। তার মানে হচ্ছে, শরীরে নিরবচ্ছিন্নভাবে রক্ত সরবরাহের জন্য হৃদপিণ্ডকে সঠিকভাবে কাজ করতে হয়।

হার্ট ফেইলের লক্ষ্মণগুলো হচ্ছে, শ্বাসপ্রশ্বাসের ঘাটতি হওয়া, পা ও পায়ের পাতা ফুলে যাওয়া, দ্রুত ক্লান্তিবোধ করা, হৃদস্পন্দন দ্রুত বৃদ্ধি পাওয়া, দুর্বলতা, মাথাঘোরা ইত্যাদি।

ডা: রাস্তোগী আরও বলেন, এই ধরণের লক্ষ্মণ দেখা দিলেই রোগীকে সাথে সাথে হাসপাতালে নেওয়া উচিত। বুক ব্যথা, অ্যারিথিমিয়া, অতিরিক্ত লবণ বা পানি খাওয়া, ব্যথানাশক ওষুধ ও অ্যালকোহল গ্রহণ এবং কিডনির সমস্যা তৈরি হলেও হার্ট ফেইলের ঝুঁকি থাকে। আবহাওয়া যতই শীতল হতে থাকবে হাসপাতাগুলোতে হৃদরোগের রোগীর সংখ্যা বাড়তে থাকে।

কারণ: শীতের সময় ঘন কুয়াশা এবং দূষণের কারণে বুকের সমস্যা ও শ্বাসপ্রশ্বাসের সমস্যা তৈরি হয়।

-শীতে রক্তচাপ বেড়ে যায় এবং পর্যাপ্ত রক্ত সরবরাহের অভাবে ধমনীগুলো সংকুচিত হয়ে যায়।

-শীতে শরীর থেকে ঘাম বের হয় কম। যার কারণে অতিরিক্ত পানি ফুসফুসে জমা হয়। আর এটিই পরবর্তীতে হার্ট ফেইলের কারণ হয়ে দেখা দেয়।

-আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে শ্বাসপ্রশ্বাসের বিভিন্ন সমস্যা তৈরি হয়।

প্রতিরোধ: যাদের হৃদপিণ্ড দুর্বল শীতের সময় তাদের অতিরিক্ত সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত। এ সময় তাদের নিয়মিত ব্যায়াম করা উচিত।

-অতিরিক্ত লবণ ও পানি গ্রহণে সতর্ক হওয়া উচিত।

-নিয়মিত রক্তচাপ মাপা উচিত। যদি উচ্চ রক্তচাপ ধরা পড়ে তাহলে যথাযথ চিকিৎসা নেওয়া উচিত।

-শীত আসার আগেই ইনফ্লুয়েঞ্জা এবং নিউমোনিয়ার টীকা নেওয়া উচিত। যাতে করে বুকের প্রদাহ প্রতিরোধ করা যায়।

-সমস্যা হলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ সেবন করা উচিত।

-একটু ভালবোধ করলেই ওষুধ ছেড়ে দেওয়া উচিত নয়। চিকিৎসকের নির্দেশ মতই ওষুধ সেবন করা উচিত।

-কোনো প্বার্শপ্রতিক্রিয়া দেখা দিলে সাথে সাথে তা চিকিৎসককে জানানো উচিত।

কীভাবে সমস্যা চিহ্নিত করবেন: আপনি ঘরে বসেই আপনার সমস্যা চিহ্নিত করতে পারেন। লক্ষ্য রাখুন, আপনি যে পরিমাণ পানি পান করছেন, সেই অনুযায়ী মূত্রত্যাগ করছেন কি না। যদি মূত্রত্যাগের পরিমাণ কম হয় তাহলে বুঝতে হবে, অতিরিক্ত পানি আপনার ফুসফুসে জমা হচ্ছে। যা পরবর্তীতে হার্ট ফেইলরের কারণ হয়। তাছাড়া, নিয়মিত ওজন মাপলেও বুঝতে পারবেন। তিন দিনে যদি শরীরের ওজন দুই কেজি বৃদ্ধি পায় তাহলে বুঝতে হবে, আপনার শরীরে পানি জমছে। এ অবস্থা হলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হোন।



মন্তব্য চালু নেই