শিশুর জন্মগত ত্রুটি কমাতে পারে এসিস্টেড রিপ্রোডাকশন টেকনোলজি

নতুন এক গবেষণায় জানা যায় যে, ৪০ বছর বা তার চেয়ে বেশি বয়সের নারীদের সন্তান গ্রহণের ক্ষেত্রে এসিস্টেড রিপ্রোডাকশন টেকনোলজি ব্যবহার করলে সন্তানের জন্মগত ত্রুটি কম থাকে একই বয়সের যে নারীরা ন্যাচারালি কনসিভ করেন তাদের চেয়ে।এই গবেষণাটির বিষয়েই বিস্তারিত জেনে নিই চলুন।

অস্ট্রেলিয়ার এডিলেইড ইউনিভার্সিটির রবিনসন রিসার্চ ইনস্টিটিউট এর অধ্যাপক ও প্রধান লেখক মাইকেল ডেভিস বলেন, ‘৪০ বছরের বেশি বয়সের নারীদের মধ্যে যারা সন্তান ধারণের জন্য এসিস্টেড রিপ্রোডাকশন পদ্ধতি ব্যবহার করেন তাদের মধ্যে লক্ষণীয় সাফল্য দেখা যায়”।

ডেভিস আরো বলে, “৪০ বা তার বেশি বয়সের কম উর্বর নারীদের মধ্যে যারা এসিস্টেড রিপ্রোডাকশন ব্যবহার করেন তাদের সন্তানের জন্মগত ত্রুটির হার অর্ধেকের ও কম হয় সমবয়স্ক উর্বর নারীদের তুলনায়, যেখানে কম বয়স্ক নারীদের ঝুঁকি বেশি থাকে”।

গবেষকেরা বিশ্বাস করেন যে, “বয়স্ক নারীদের গর্ভধারণের ক্ষেত্রে অনুকূল জৈবিক অবস্থার উপস্থিতিকে নির্দেশ করতে পারে IVF (In Vitro Fertilization)”।

এই গবেষণা প্রতিবেদনটি অবস্টেট্রিক্স এন্ড গাইনোকোলজি নামক আন্তর্জাতিক জার্নালে প্রকাশিত হয়। এই গবেষণাটি ১৯৮৬-২০০২ সাল পর্যন্ত দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ার লাইভ বার্থ রেকর্ডের ভিত্তিতে করা হয়।

এতে ৩ লক্ষ ১ হাজার জন প্রাকৃতিক ভাবে জন্ম নেয়া, IVF এর মাধ্যমে জন্মগ্রহণ করা ২ হাজার ২ জন এবং প্রায় ১৪০০ জন ICSI (Intracytoplasmic Sperm injection) এর মাধ্যমে জন্ম নেয়া শিশুর তালিকা নিয়ে পর্যবেক্ষণ করা হয়।

প্রাকৃতিকভাবে জন্ম নেয়া শিশুদের মধ্যে গড়ে ৫.৭ শতাংশেরই জন্মগত ত্রুটি থাকে, IVF এর ক্ষেত্রে থাকে ৭.১ শতাংশ এবং ICSI এর ক্ষেত্রে থাকে ৯.৯ শতাংশের জন্মগত ত্রুটির সমস্যা হয় সব বয়সের নারীদের ক্ষেত্রেই।

এসিস্টেড রিপ্রোডাকশনের ক্ষেত্রে ৪০ এবং তার বেশি বয়সের নারীদের মধ্যে যারা IVF ব্যবহার করেন তাদের ৩.৬ শতাংশের সন্তানের জন্মগত ত্রুটি হওয়ার সমস্যা থাকে।

ডেভিস বলেন, “IVF এবং ICSI এর সমন্বয়ে নারীদের চিকিৎসা করা হয়, বয়স সংক্রান্ত জন্মগত ত্রুটি হওয়ার ঝুঁকি ২৯ বা এর কাছাকাছি বয়সের নারীদের মধ্যেই দেখা যায়।“।

তারা পর্যবেক্ষণে বুঝতে পারেন যে, ৩৫ বছর বয়স থেকে নারীদের জন্মগত ত্রুটি হওয়ার ঝুঁকি বৃদ্ধি পেতে থাকে। কিন্তু এর সঠিক কারণ এখন ও জানা যায়নি। হরমোনের উদ্দীপনার ফলে বয়স সংক্রান্ত ডিম্বস্ফোটন নিয়ন্ত্রণের কারণে হতে পারে এমন।

প্রফেসর ডেভিস বলেন, “এই গবেষণায় উন্মোচিত হয়েছে যে, এসিস্টেড রিপ্রোডাকশন চিকিৎসার মধ্যে প্রায় ৭০ শতাংশ ICSI ব্যবহার করেন। পূর্বে গর্ভধারণ করেননি এমন নারীদের ক্ষেত্রে প্রতিকূলতা দেখা যায়, তাদের ক্ষেত্রে জন্মগত ত্রুটির হার ছিল ১১%, আর যারা পূর্বে গর্ভধারণ করেছেন এবং ICSI ব্যবহার করেন তাদের ক্ষেত্রে বার্থ ডিফেক্টের হার ৬.২%”।



মন্তব্য চালু নেই