শিশুদের কাঁধে বইয়ের বোঝা চাপিয়ে দিলে হবে না

লেখাপড়া শেখাতে গিয়ে শিশুদের কাঁধে এক গাদা বইয়ের বোঝা চাপিয়ে না দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বরং তাদের লেখাপড়ার পরিবেশ আনন্দঘন করার কথা বলেছেন তিনি। শেখ হাসিনা বলেছেন, শিশুদের আনন্দঘন পরিবেশে লেখাপড়া করাতে হবে। লেখাপড়া শেখাতে গিয়ে এক গাদা বইয়ের বোঝা তাদের কাঁধে চাপিয়ে দিয়ে সারাক্ষণ পড়ো পড়ো বললে হবে না। বরং তাদের বোঝাতে হবে পড়াটা তাদের দায়িত্ব।

রোববার বাংলাদেশ শিশু একাডেমি মিলনায়তনে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে বাংলাদেশ শিশু একাডেমি আয়োজিত ‘বিশ্ব শিশু দিবস ও শিশু অধিকার সপ্তাহ-২০১৫’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসবকথা বলেন।

শিশুদের মুক্তিযুদ্ধ ও বিজয়ের ইতিহাস সম্পর্কে জানানোর উপরও গুরুত্বারোপ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, দেশ মাথা উঁচু করে চলছে, আগামীতেও চলবে। আর এ জন্য শিক্ষার কোনো বিকল্প নেই। শিশুদের আমাদের মুক্তিযুদ্ধ ও বিজয়ের ইতিহাস সম্পর্কে অবশ্যই জানাতে হবে।

ঢাকায় শিশুদের খেলার জায়গার সঙ্কটের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ঢাকা শহরে এত ফ্ল্যাট বাড়ি হয়েছে যেখানে শিশুদের খেলাধুলার জায়গা রাখা হয় না। এই ফ্লাট বাড়িতে থেকে শিশুরা ফার্মের মুরগির বাচ্চার মতো মানুষ হচ্ছে। আমি সবসময়ই বলতাম আপনারা অন্তত বাচ্চাদের জন্য খেলার জায়গাটা রাখেন। যাতে তারা হাত-পা ছড়াতে পারে।

শেখ হাসিনা

তিনি বলেন, স্কুল তৈরির সময় শিশুদের খেলার জন্য জায়গা রাখতে হবে। শিশু ও বয়োজ্যেষ্ঠদের কথা চিন্তা করে খোলা জায়গা রাখতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের ৩৪ লাখ শিশু নাকি রাস্তার ঘোরে। আমাদের মহিলা ও শিশু মন্ত্রণালয় এবং সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় আছে। এই দুই মন্ত্রণালয়কে আমি নির্দেশ দিচ্ছি, একটি শিশুও রাস্তায় ঘুরবে না। একটি শিশুও এভাবে মানবেতর জীবনযাপন করবে না।

শিশু ও মায়েদের খাদ্য, পুষ্টি, চিকিৎসা নিশ্চিত করার কথাও বলেন তিনি।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- ইউনিসেফ বাংলাদেশের এডওয়ার্ড বেগবেদার ও বাংলাদেশ শিশু একাডেমির চেয়ারম্যান কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন।

মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব নাছিমা বেগম। শিশু বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় পরিচালিত এনাবলিং এনভায়রনমেন্ট ফর চাইল্ড রাইটস প্রকল্পের হাসেম এবং বাংলাদেশ শিশু একাডেমি পরিচালিত শিশু বিকাশ কেন্দ্রের আজিমপুর শাখার সানজিদা আফরোজ স্মৃতি। আলোচনা সভা শেষে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করেন বাংলাদেশ শিশু একাডেমির প্রশিক্ষনার্থী শিশুরা। সানজিদার বক্তব্য ও গান শুনে মুগ্ধ হয়ে তাকে অভিনন্দনও জানান প্রধানমন্ত্রী।

মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে বাংলাদেশ শিশু একাডেমি প্রতি বছরের মতো এবারো ৬৪টি জেলা ও ৬টি উপজেলায় বিশ্ব শিশু দিবস ও শিশু অধিকার সপ্তাহ উদযাপন করছে।

শিশু দিবস ও শিশু অধিকার সপ্তাহের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে শিশু একাডেমির শেখ রাসেল শিশু যাদুঘরও পরিদর্শন করেন প্রধানমন্ত্রী।



মন্তব্য চালু নেই