শিক্ষা-দীক্ষায় বাংলাদেশ আরো উন্নত হবে : প্রধানমন্ত্রী

শিক্ষা-দীক্ষায় বাংলাদেশ আরো উন্নত হবে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলেয়ে আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা উন্নত হচ্ছে। বর্তমান সরকার সমস্ত পাঠ্যপুস্তক সার্বজনীনভাবে তৈরি করছে। ক্ষুদ্র নৃ গোষ্ঠীর শিক্ষার্থীদের জন্য তাদের মাতৃভাষায় বই প্রকাশ করা হয়েছে। আমরা চাই তাদের মাতৃভাষা যেনো বাংলা ভাষার মতই সমুন্নত থাকে। বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুদের মধ্যে সুপ্ত প্রতিভা থাকে। সেই প্রিভা বিকাশে আমরা তাদের উপযোগী বই তুলে দিচ্ছি’।

আগামী ১ জানুয়ারি সারাদেশে ‘জাতীয় পাঠ্যপুস্তক উৎসব’ উদযাপনের অংশ হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ শনিবার আনুষ্ঠানিকভাবে বিনামূল্যে ২০১৭ শিক্ষাবর্ষের পাঠ্যপুস্তক বিতরণ কর্মসূচির উদ্বোধন করে এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন,’আজ আনন্দের দিন। আগামীকাল সারাদেশে বই উৎসব হবে। আমরা বাংলাদেশকে নিরক্ষরমুক্ত করতে চাই। আমাদের উদ্দেশ্য একটাই, দেশকে দারিদ্র মুক্ত করা। এজন্য সবার আগে চাই শিক্ষা। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশ স্বাধীনের পর সংবিধানে প্রাথমিক শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক ও অবৈতিক করায় জোর দিয়েছিলেন। রাষ্ট্র হিসেবে তার জন্যই আমরা দাঁড়াতে পেরেছি। ২০১০ সাল থেকে ২০১৭ সালের শুরু পর্যন্ত ২’শ কোটি ২৫ লাখ ৪৩ হাজার পাঠ্যপুস্তক বিতরণ করেছে সরকার। এতো পাঠ্যপুস্তক প্রকাশ ও বিতরণ বিশ্বের আর কোনো সরকার করেছে কিনা জানি না। নতুন বই বাচ্চাদের মনে সুন্দর অনুভুতি জাগায়, বই পড়ার আগ্রহ জাগায়’।

শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ ১ জানুয়ারি সকাল সাড়ে ৯টায় রাজধানীর আজিমপুর সরকারি বালিকা বিদ্যালয় ও কলেজে কেন্দ্রীয় কর্মসূচি হিসেবে ‘জাতীয় পাঠ্যপুস্তক উৎসব-২০১৭’ উদ্বোধন করবেন।

আজ গণভবনে এই কর্মসূচির উদ্বোধনে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের বই উৎসব বিশ্বের সবচেয়ে বড় পরিসরে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ কর্মসুচি। ইউনেস্কো’র এক সম্মেলনে আমাকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিলো আমরা কিভাবে এটা করতে পারছি। ২০১০ সালে এই চেষ্টা শুরুর প্রথমেই ছাপানো বইয়ে আগুন লাগিয়ে দেয়া হলেও আমরা পাঠ্যপুস্তক বিতরণ কর্মসূচি চালিয়ে যাই। ২০১৬ সালের ১ জানুয়ারিতে ৪ কোটি ৪৪ লাখ ১৬ হাজার শিক্ষার্থীর হাতে আমরা নতুন বই তুলে দিয়েছিলাম। দেশে এখন শিক্ষার্থীদের সংখ্যা বাড়ছে, কমছে ঝরে পড়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা।’

শিক্ষার্থীদের উৎসাহ দেয়া উচিৎ মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘তারা ভালো ফলাফল করছে। তাদের নিরুৎসাহিত করবেন না। শিক্ষার মান বাড়ছে তবে যে মানে আমাদের পৌঁছাতে হবে তা অর্জনে সময় লাগবে। আমাদের নানারকম ত্রুটি আছে। তবুও চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। আশা করি এই ধারা অব্যাহত থাকবে। এই প্রথম দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য ৯ হাজার ৭’শ ৩ টি পাঠ্যপুস্তক প্রকাশ করা হয়েছে। ৫ টি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর শিশুদের হাতেও তাদের মাতৃভাষায় প্রকাশিত বই তুলে দিচ্ছি আমরা।’

অনুষ্ঠানে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার এবং মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধমিক শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. সোহরাব হোসেন, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আলমগীর হোসেন এবং জাতীয় পাঠ্যক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক নারায়ণ চন্দ্র সাহা উপস্থিত ছিলেন। রাজধানীর ৩১টি বিদ্যালয়ের পাঁচ হাজারেরও বেশি শিক্ষার্থী এতে যোগ দেয়।

নতুন বছরে সরকার ২০১৭ শিক্ষাবর্ষে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিনামূল্যে ৩৬ কোটি ২১ লাখ ৮২ হাজার ২৪৫টি পাঠ্যপুস্তক বিতরণ করবে।



মন্তব্য চালু নেই