শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে অচল ঢাকায় চরম ভোগান্তি

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের টিউশন ফির ওপর ভ্যাট আরোপের প্রতিবাদে ও তা প্রত্যাহারের দাবিতে গত বুধবার থেকে আন্দোলন করে আসছেন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। আজ রোববার সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসেও তারা রামপুরা ও ধানমন্ডির মূল সড়কে অবস্থান নিয়ে সেগুলো অবরোধ করে দিয়েছেন। ফলে সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন হাজার হাজার মানুষ।

রোববার ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটি ও আশপাশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বেলা ১১টার দিকে রামপুরার মূল সড়ক প্রগতি সরণীতে অবস্থান নিয়ে যান চলাচল বন্ধ করে দেন। এতে কুড়িল-উত্তরার সঙ্গে রামপুরা দিয়ে মৌচাক-মালীবাগ এলাকার যান চলাচল পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে। তা ছাড়া, রামপুরা দিয়ে গুলশান, বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা, বনানী, লিংক রোড, বনশ্রী, মুগদা, বাড্ডায়ও যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে।

ধানমন্ডি এলাকায় শিক্ষার্থীদের মিরপুর সড়ক অবরোধের কারণেও একই রকম পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।

স্টামফোর্ড, স্টেট, ড্যাফোডিল, বাংলাদেশ ইত্যাদি ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা ধানমন্ডি-২৭ সংলগ্ন মিরপুর সড়কে অবস্থান নিয়ে অবরোধ কর্মসূচি পালন করছেন। এতে ওই সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন হাজার হাজার মানুষ। শ্যামলী, মোহাম্মদপুর, আদাবর, মিরপুর, কল্যাণপুর এবং এদিকে নিউমার্কেট, আজিমপুর, পলাশী ইত্যাদি এলাকার মানুষ যাদের মিরপুর সড়ক ব্যবহারের প্রয়োজন পড়ে, তারা পড়েছেন চরম ভোগান্তিতে। তা ছাড়া, গাবতলী দিয়ে ঢাকায় প্রবেশ করা মানুষরাও ভোগান্তিতে পড়ছেন।

প্রধান দুটি সড়ক মিরপুর সড়ক ও রামপুরা সড়ক বন্ধ হয়ে যাওয়ায় পুরো রাজধানীতে এর চাপ পড়েছে। রাজধানীজুড়ে সৃষ্টি হয়েছে অসহনীয় যানজট। অবরোধ হওয়া সড়কের আশপাশের এলাকায় অফিসগামী মানুষ, শিক্ষার্থী ও অন্যান্য প্রয়োজনে বাসা থেকে বের হওয়া লোকজন পড়েছেন চরম দুর্গতিতে। অনেককে ঘণ্টার পর ঘণ্টা গাড়িতে বসে থাকতে হচ্ছে।

ধানমন্ডিতে একটি আইটি ফার্মে কর্মরত মোহাম্মদ মোকাররম হোসেন বলেন, ‘আমার বাসা মিরপুরে। সকাল সাড়ে ৮টায় অফিসের কাজে মিরপুর থেকে উত্তরা যাই। সেখান থেকে সাড়ে ৯টার দিকে কাজ শেষে করে অফিসের উদ্দেশ্যে রওনা হই। এখন বাজে দুপুর ১টা। এখনো গন্তব্যে পৌঁছতে পারিনি। এতক্ষণে মাত্র আসাদগেট পৌঁছলাম। কখন যে অফিসে পৌঁছাব, বুঝতে পারছি না। শুনেছি শিক্ষার্থীরা রাত ৯টা পর্যন্ত আন্দোলন চালাবে। তার মানে অফিস ৫টায় শেষ হলে বাসায় ফিরতে গেলেও দুর্ভোগে পড়তে হবে।’

এদিকে, রামপুরায় ‘নো ভ্যাট অন এডুকেশন’ এর ব্যানারে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের নেতা সালাহউদ্দিন মিঠু বলেন, শিক্ষার্থী, হজ যাত্রী ও অ্যাম্বুলেন্স এগুলো অবরোধের আওতামুক্ত থাকবে।

জনদুর্ভোগের কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, ‘বৃহত্তর স্বার্থে আমাদের এ আন্দোলন। এজন্য কিছু মানুষের সামান্য কষ্ট হচ্ছে। তারা এটিকে সহজভাবে নেবেন বলে আমাদের বিশ্বাস।’

ধানমন্ডিতে শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ



মন্তব্য চালু নেই