শিক্ষার্থীকে পেটানোর অভিযোগ মানবাধিকার কমিশনে

রাজশাহী কলেজিয়েট স্কুলে এক শিক্ষার্থীকে পিটিয়ে আহত করার ঘটনায় জাতীয় মানবাধিকার কমিশনে অভিযোগ করা হয়েছে শিক্ষার্থীর পিতা।

স্কুলের সপ্তম শ্রেণির গ শাখার শিক্ষার্থী তৌফিক নিশাদকে সহকারী শিক্ষক আবুল হোসাইন শারীরিকভাবে নির্যাতন করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনা পরে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনে অভিযোগ করেছেন তার বাবা তৌহিদুল ইসলাম।

তৌহিদুল ইসলাম জানান, স্কুলের প্রধান শিক্ষক এবং মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা রাজশাহী অঞ্চলের উপপরিচালকের কাছে অভিযোগ করলেও তারা কোনো সাড়া না দেওয়ায় শেষ পর্যন্ত জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের দ্বারস্থ হয়েছেন বলে ।

এদিকে, অভিযোগ পাওয়ার পরে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মিজানুর রহমান বিষয়টি তদন্ত করে রাজশাহীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসককে (শিক্ষা) প্রতিবেদন দাখিলের জন্য নির্দেশ দিয়েছেন।

জাতীয় মানবাধিকার কমিশনে করা অভিযোগে তৌহিদুল ইসলাম উল্লেখ করেন, তার ছেলে তৌফিক নিশাদকে গত ২৪ আগস্ট রাজশাহী কলেজিয়েট স্কুলের সহকারী শিক্ষক আবুল হোসাইন বেত দিয়ে পেটান। বিষয়টির প্রতিকার চেয়ে প্রধান শিক্ষকের কাছে অভিযোগ দিলে তিনি নিশাদকে তার কক্ষে ডেকে নিয়ে খারাপ আচরণ করেন। এমনকি নিশাদকে ছাড়পত্র দিয়ে স্কুল থেকে বের করে দেওয়ার হুমকিও দেন প্রধান শিক্ষক।

এ ঘটনার পর নিশাদের বাবা তৌহিদুল ইসলাম ছেলের লেখাপড়ার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করতে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের রাজশাহী অঞ্চলের উপপরিচালকের কাছে আবেদন করেন। এর অনুলিপি কলেজিয়েট স্কুলের প্রধান শিক্ষকের কাছেও পাঠান তিনি। তবে প্রধান শিক্ষক নূর জাহান বেগম ওই আবেদনের অনুলিপি গ্রহণ করেন নি।

এ অবস্থায় তৌহিদুল ইসলাম জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যানের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। এর অনুলিপি তিনি শিক্ষামন্ত্রী ও শিক্ষা সচিবসহ বিভিন্ন দপ্তরে প্রেরণ করেন।
এদিকে অভিযোগের কপি পাওয়ার পর জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মিজানুর রহমান বিষয়টি রাজশাহীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসককে (শিক্ষা) তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য একটি চিঠি দেন।

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক শিক্ষার দায়িত্বে থাকা আতাউল গনি বলেন, ‘এ ধরনের একটি চিঠি আমরা পেয়েছি। তবে আমি অফিসের বাইরে থাকায় বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত বলতে পারছি না। আর যেহেতু প্রতিবেদন দাখিলের অনেক সময় এখনো হাতে আছে, কাজেই বিষয়টি নিয়ে পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’

নিজের বিরুদ্ধে অভিযোগ সম্পর্কে সহকারী শিক্ষক আবুল হোসাইন বলেন, ‘ক্লাস বাদ দিয়ে তৌফিক নিশাদসহ কয়েকজন শিক্ষার্থী নিজেদের মধ্যে মারামারি করছিল। বিষয়টি নিয়ে নিশাদকে আমি শুধু শাসন করেছি। তাকে মারপিট করা হয়নি। কিন্তু তার বাবা বিষয়টিকে অন্যদিকে নিয়ে গিয়ে আমাকে বিপাকে ফেলতেই এ ধরনের অভিযোগ করছেন।’

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ড. নূর জাহান বেগম বলেন, ‘মারপিটের ঘটনাটি সঠিক নয়। কোনো শিক্ষার্থীই এর প্রমাণ দিতে পারেনি। তাই এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।’



মন্তব্য চালু নেই