শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস, ১৪ জনের জেল

১১তম শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছে। পরে ফাঁস করা প্রশ্নের উত্তর মোবাইল ফোনের মাধ্যমে পরীক্ষার্থীদের হাতে পৌঁছে দেওয়া হয়। বাহির থেকে পাঠানো এমন উত্তর পরীক্ষার হলে মোবাইল থেকে দেখে উত্তর করার সময় ১৪ পরীক্ষার্থীকে আটক করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

শুক্রবার পরীক্ষা শুরুর পর বগুড়া শহরের প্রি-ক্যাডেট কেন্দ্রসহ বেশ কয়েকটি কেন্দ্র থেকে তাদের আটক করে ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাসুদুর রহমান ও ফয়সাল হক বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ডাদেশ দেন।

এদের মধ্যে একজনকে ২ মাস এবং অপর ১৩ জনকে একমাস করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

এদিকে নিবন্ধনের স্কুল শাখার পরীক্ষায় প্রশ্ন ফাঁসের সঙ্গে বগুড়ার সরকারি কলেজের কয়েকজন শিক্ষক, ছাত্র এবং সরকারি দলের ছাত্র সংগঠনের কিছু ছাত্রনেতা জড়িত রয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

সূত্র জানায়, বগুড়ার নামকরা কলেজের কয়েকজন শিক্ষক পরিক্ষার ২-৩ দিন আগে থেকেই তাদের নিয়োজিত দালালদের মাধ্যমে প্রার্থীদের সঙ্গে ১০ হাজার টাকার বিনিময়ে মোবাইল ফোনে প্রশ্নপত্র ও তার উত্তর ফাঁস করে দেয়ার চুক্তি করেন। সে চুক্তি অনুযায়ী শুক্রবার পরীক্ষা শুরুর পরপরই যে কোনো কেন্দ্র থেকে সব ক’টি সেটের ১টি করে প্রশ্নপত্র কেন্দ্রের বাহিরে পাচার করে দেয়া হয়। এরপর কেন্দ্রের আশে পাশে পুর্ব নির্ধারিত বাড়ি অথবা কোচিং সেন্টারে বসে আগে থেকে ঠিক করে রাখা কয়েকজন ছাত্র সব ক’টি সেটের প্রশ্নের উত্তর তৈরি করে তা মোবাইল ফোনের মাধ্যমে প্রার্থীদের সরবরাহ করেন।

সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, প্রশ্নপত্র ফাঁসের এই চক্রটি শুধু বগুড়ায় নয়, তাদের নেটওয়ার্ক পার্শ্ববর্তী জেলাগুলোতেও রয়েছে। কোনো কারণে বগুড়ার কোনো কেন্দ্র থেকে প্রশ্নপত্র পাচার করতে না পারলে পার্শ্ববর্তী জেলা থেকে পাচার হওয়া প্রশ্নপত্র স্ক্যান করে ইন্টারনেট বা মোবাইল ফোনের মাধ্যমে তা চলে আসে বগুড়ায়। আবার অনেক সময় বগুড়া থেকেও মোবাইল ফোনে প্রশ্নপত্র পাঠানো হয় অন্য জেলায়। তৈরি করা প্রশ্নের সঠিক উত্তর মোবাইল ফোনের মাধ্যমে পরীক্ষার্থীদের কাছে সরবরাহ করার পর এ চক্রটি মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করে বিভিন্ন কেন্দ্র সচিবদের সঙ্গে। এরপর কতিপয় অসৎ কক্ষ পরিদর্শকের সহযোগিতায়তায় পরীক্ষার্থীদের কক্ষে মোবাইল ফোন ব্যবহার করে পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ করে দেওয়া হয়।

এ ধরনের অপরাধ করতে গিয়ে হাতেনাতে ধরা পড়ায় শুক্রবার অনুষ্ঠিত পরীক্ষায় ভ্রাম্যমাণ আদালত বগুড়ায় ১৪ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়েছেন।

পুলিশ সূত্র জানায়, বগুড়া শহরের প্রি-ক্যাডেট ছাড়াও কয়েকটি কেন্দ্রে মোবাইল ফোনে পরীক্ষার্থীদের কাছে ফাঁস হওয়া প্রশ্নের উত্তর আসার পর তা পরীক্ষার্থীরা লিখতে শুরু করে। এ সময় ভ্রাম্যমাণ আদালত পুলিশ দিয়ে ১৪ পরীক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করায়।

পরে ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাসুদুর রহমান ও ফয়সাল হক ১৯৮০ সালের পাবলিক পরীক্ষা আইনে জাসুরুল ইসলাম নামের একজনকে ২ মাস এবং অপর ১৩ জনকে একমাস করে কারাদণ্ড দেন।



মন্তব্য চালু নেই