পরীক্ষার হলে হলে উত্তরপত্র দিল ছাত্রলীগ

শিক্ষক নিবন্ধনের প্রশ্নপত্র ফাঁস

বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস করে উত্তরপত্র বিক্রি করা হয়েছে। ছাত্রলীগ নেতারা হলে গিয়ে এসব প্রশ্নপত্র বিক্রি করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

শুক্রবার সকাল সাড়ে ৮ টায় পরীক্ষা শুরুর আগে পটুয়াখালী সরকারি কলেজের সামনে ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের প্রশ্নপত্র বিক্রি করতে দেখা গেছে।

ভূক্তভোগীদের অভিযোগ, পটুয়াখালী সরকারি কলেজ কেন্দ্রকে টার্গেট করে পুরো প্রক্রিয়ার সঙ্গে ওই কলেজ শাখা ছাত্রলীগের কয়েক নেতাসহ কিছু অসাধু শিক্ষক জড়িত রয়েছেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সকাল সাড়ে ৮টায় মাধ্যমিক শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষা শুরু হয় পটুয়াখালী কলেজ কেন্দ্রে। কিন্তু সকাল ৬টার দিকে কলেজ শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক রাসেল চৌকিদারর নেতৃত্বে ১০ থেকে ১২ জনের একটি সংঘবদ্ধ চক্র ফাঁস হওয়া প্রশ্নপত্র ও উত্তরপত্র তৈরি করে কলেজের সামনে অবস্থান নেয়। তারা ৫ হাজার টাকার বিনিময়ে প্রশ্নপত্র বিক্রি করতে থাকে। একপর্যায়ে পরীক্ষা শুরু হলে পরীক্ষার্থীদের স্বজনদের সঙ্গে চুক্তি করে ওই চক্রটি হলে ঢুকে উত্তরপত্র সরবরাহ করে।

এ ঘটনায় ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের মৌখিকভাবে পুলিশ নিষেধ করলেও তারা প্রশ্ন বাণিজ্য অব্যাহত রাখে। শেষে বাধ্য হয়ে পুলিশ লাঠিচার্জ করে তাদের হল থেকে বের করে দেয়।

কলেজের একটি সূত্র জানায়, প্রশ্ন ফাঁসের সঙ্গে কলেজের প্রভাবশালী এক শিক্ষক (ম্যাডাম) জড়িত রয়েছেন। বিষয়টি জেলা প্রশাসক অমিতাভ সরকারকে জানালে তিনি অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে ওই কেন্দ্র পাঠান।

এদিকে অনুষ্ঠিত পরীক্ষার ১ নং সেটের প্রশ্নপত্রের সঙ্গে ছাত্রলীগ নেতাদের বিক্রি করা উত্তরপত্রের পুরোপুরি মিল পাওয়া গেছে বলে পরীক্ষার্থীরা জানিয়েছেন।

অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট খায়রুল হক বলেন, ‘প্রশ্নপত্র ফাঁসের ব্যাপারে আমি কোনো প্রমাণ পাইনি। তবে বাউন্ডারির মধ্যে বহিরাগত কিছু ছেলেপেলে ছিল, তাদের বের করে দেয়া হয়েছে।’

কেন্দ্রের পরীক্ষা কমিটির আহ্বায়ক ও ইতিহাস বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়ার প্রশ্নই আসে না। পরীক্ষা শুরু হয়েছে সকাল সাড়ে ৮টায় এবং কলেজে প্রশ্ন এসেছে সকাল সোয়া ৮টায়। বিষয়টি গুজব।’

অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা রাসেল চৌকিদার বলেন, ‘এটা আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। আমি আজ ক্যম্পাসেই যাই নাই।’

এদিকে, কলেজ শাখা ছাত্রলীগের এক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, সরকারি কলেজে বিভিন্ন নিয়োগ পরীক্ষা ও পাবলিক পরীক্ষায় কলেজ ছাত্রলীগের কিছু নেতারা পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা নিয়ে উত্তরপত্র সরবরাহ করে। এতে কলেজের কিছু অসাধু শিক্ষক তাদের সহযোগিতা করেন।



মন্তব্য চালু নেই