শরীয়তপুরে নির্বাচনী প্রচারনায় সরগরম হয়ে উঠেছে কুচাইপট্টি ইউনিয়ন

রাজিব হোসেন রাজন, শরীয়তপুর প্রতিনিধিঃ নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণায় সরগরম হয়ে উঠেছে জেলার গোসাইরহাট উপজেলার কুচাইপট্টি ইউনিয়ন। রাতের আধার, আকাশের কুয়াশা আর নিশিরকে বৃদ্ধাংগুলি দেখিয়ে ভোটারদের মন জয় করার জন্য তাদের দ্বারে দ্বারে ছুটছেন প্রার্থীরা দিচ্ছেন বিভিন্ন ধরনের প্রতিশ্রুতি।বাড়ির উঠোন থেকে চায়ের দোকানগুলোতে চলছে একই আলোচনা কে হবেন ভবিষ্যত চেয়ারম্যান।

এবার কুচাইপট্টি ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন ৩ জন প্রার্থী। এরা হলেন আওয়ামীলীগের নৌকা প্রতিক নিয়ে আলহাজ্ব আবুল বাশার মুন্সি , বিএনপির ধানের শীষ প্রতিক নিয়ে মোঃ আলমগীর হোসেন বেপারী এবং আওয়ামীলীগের মনোনয়ন চেয়ে না পেয়ে নাছির উদ্দিন স্বপন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করছেন।

ইউনিয়নের সাধারন ভোটাররা মনে করেন বিএনপির প্রার্থী মাঠে থাকলেও লড়াই হবে মূলত আওয়ামীলীগ প্রার্থী ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর মধ্যে।
নির্বাচনী এলাকা ঘুরে জানা যায়, বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ থেকে এবার নাছির উদ্দিন স্বপনকে মনোনয়ন না দিয়ে উপজেলা চেয়ারম্যানের সৈয়দ নাছির উদ্দিনের শশুর বর্তমান চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আবুল বাশার মুন্সি ওয়েট প্রার্থী হিসেবে মননোয়ন দিয়েছে দলটি। উপজেলার চেয়ারম্যানের শশুর হবার সুবাদে এলাকার তরুন ভোটাররা তারে দিকেই ঝুকছে।

অন্যদিকে নাছির উদ্দিন স্বপনকে মননোয়ন না দেয়ায় ক্ষুদ্ধ তার কর্মী সমর্থকরা। কর্মী-সমর্থকদের ইচ্ছায়ই তিনি দলীয় সিদ্ধান্তের বাহিরে গিয়ে স্বতন্ত্রপ্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করছেন। তার নির্বাচনের কারনে নৌকা প্রতিকের প্রার্থীর সাময়িক সমস্যা হলেও তিনি তা কাটিয়ে উঠতে পেরেছেন বলে মনে করেন। এদিকে বিএনপির কর্মীরা তাদের প্রার্থীর পক্ষে প্রচারনা চালিয়ে যাচ্ছেন অনেকটা নিরবে।

এ দিকে ইউপি সদস্য প্রার্থী,মোঃ হাকিজল গাজী,আব্দুর রহিম হাওলাদার,মোঃ এনামুল হক বাচ্চু হাওলাদার, এমরান কাদের হাওলার এরা বলেন,আমরা ইউপি সদস্য প্রার্থী আমরা চাই এলাকায় একটি অবাধ সুষ্টো একটা নির্বাচন হোক যাতে জনগনের ভোট জনগন সঠিক ভাবে প্রয়োগ করতে পারে।আমরা নির্বাচন করতেছি পাসফেল বড় কথা নয়, নির্বাচন করতেছি এটাই বড় কথা।আমাদের কাছে মনে হইতেছে এই নির্বাচন ঈদের মতই একটা আনন্দ, আমরা দীর্ঘ ১৪ বছর পর নির্বাচন পাইছি,আমরা সরকারের কাছে আকুল আবেদন জানাই আমাদের ভোটাধিকার যেন,কেউ হরন করতে পারে না ।

ইউনিয়নের সাধারন ভোটারদের সাথে আলাপ করে জানা যায়, স্বতন্ত্র প্রার্থী নাছির উদ্দিন স্বপন এলাকার মানুষের জন্য অনেক উন্নয়ন ও গঠনমূলক কাজ করেছে।সব চেয়ে বড় কথা হল এই কুচাইপট্টি বরিশালের ভিতর দীর্ঘ দিন ছিল,এটা বিভিন্ন সময় মামলা মোকাদ্দমা করে,তিনি প্রয়াত নেতা আব্দুর রাজ্জাক ও শাহজাদা মিয়ার ভূমিষ্ট সহযোগিতায় পূনরায় শরীয়তপুরের অর্ন্তভূক্ত করতে সক্ষম হন। ইউনিয়নে প্রায় ৭০ শতাংশ ভোটার নৌকার সমর্থক হলেও এর বেশীর ভাগ ভোটারই নাছির উদ্দিন স্বপনের পক্ষে কাজ করছেন। যা নৌকা প্রতিক বর্তমান চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আবুল বাশার মুন্সির জন্য বড় হুমকি হয়ে দাড়িয়েছে।

স্বতন্ত্রপ্রার্থী নাছির উদ্দিন স্বপনের সাথে কথা বললে তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, দলের কাছে আমি মননোয়ন চেয়েছিলাম কিন্তু দল আমাকে মননোয়ন দেয়নি। তাই এবার আমি নির্বাচন করবো না বলে স্বিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম, কিন্তু ইউনিয়নের জনগনের চাপে পরে আমি স্বতন্ত্রপ্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করছি। ইউনিয়নের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে জনগন আমাকেই ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবে বলে আমি বিশ্বাস করি।

আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী আলহাজ্ব আবুল বাশার মুন্সি সাথে কথা বললে তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, চেয়ারম্যান থাকাকালীন সময়ে এলাকার অনেক উন্নয়ন করেছেন একারনে ইউনিয়নে তার যথেষ্ট সুনাম আছে। আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে কুচাইপট্টি ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে মনোনয়ন দিয়েছেন। আমি দলের সিদ্ধান্ত মেনে নির্বাচন করছি। এবার দল আমাকে মনোনয়ন দিয়েছে তার উচিৎ দলের সিদ্ধান্ত মেনে নিয়ে আমার পক্ষে কাজ করা। কিন্তু তিনি তা করছেন না। জনগন যদি ভোট দিয়ে আমাকে পূনরায় নির্বাচিত করে তাহলে আমি প্রথমে এলাকার বেকার যুবকদের কর্মসংস্থানের ব্যাবস্থা করবো। এলাকার যে সকল কাজ অসমাপ্ত রয়েছে তা সমাপ্ত করার পাশাপাশি গরীব দুঃস্থ্য মহিলাদের পাশে দাড়াব। সর্বোপরি আমার ইউনিয়নকে একটি আধুনিক মডেল ইউনিয়নে পরিনত করবো।



মন্তব্য চালু নেই