শরণার্থীকে ল্যাং মারা সেই সাংবাদিকের জেল

যুদ্ধ বিধ্বস্ত বিভিন্ন দেশ থেকে ভিটে-মাটি ছেড়ে পালিয়ে আসা শরণার্থীরা যখন পুলিশের বেষ্টনি ভেঙে বুদাপেস্টের দিকে ছুটতে লাগালো; এসময় শিশু কোলে ছুটতে থাকা এক বৃদ্ধ হুড়োহুড়ির মধ্যে সাংবাদিক পেত্রা পাসলোর সামনে পড়ে যান। ছুটতে থাকা শরণার্থীদের ছবি ধারণ করতে করতেই হঠাৎ দুই শিশুকে লাথি মারেন পেত্রা। পরে পা বাড়িয়ে ছুটন্ত ওই বৃদ্ধকে তিনি ফেলে দেন। পরে আবার সেই দৃশ্য ক্যামেরায় ধারণ করেন।

এ সময় পড়ে যাওয়া বৃদ্ধকে পেত্রার সঙ্গে তর্ক করতে এবং শিশুটিকে কাঁদতে দেখা যায়।

বছর দেড়েক আগে খবর সংগ্রহের মধ্যেই এক শরণার্থীকে লাথি ও ল্যাং মেরে সমালোচিত হওয়া হাঙ্গেরির ওই নারী সংবাদকর্মীকে তিন বছরের সাজা দিয়েছে দেশটির একটি আদালত।

সেজেডে ডিস্ট্রিক্ট কোর্ট শুক্রবার পেত্রা লাসলোর বিরুদ্ধে এ রায় দেয় বলে বিবিসির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।

২০১৫ সালের সেপ্টেম্বরে হাঙ্গেরি-সার্বিয়ার রোসকি সীমান্তে দুই শিশুকে পেত্রার লাথি ও এক বৃদ্ধকে ল্যাং মারার দৃশ্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায়।

ওই সীমান্তে শরণার্থীদের ঢল ঠেকাতে পুলিশি তৎপরতার মধ্যে আরও অনেকের সঙ্গে খবর ও ছবি সংগ্রহের দায়িত্বে ছিলেন ক্যামেরাপারসন পেত্রা।

শরণার্থীদের প্রতি এ অমানবিক আচরণের জন্য নিজের দেশ ও আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েন পেত্রা। ঘটনার কয়েকদিনের মধ্যে ডানপন্থি টেলিভিশন চ্যানেল এনওয়ানটিভি থেকে চাকরিও হারান তিনি।

তবে সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন পেত্রা। তার দাবি, নিজেকে বাঁচাতেই শরণার্থীদের সঙ্গে ওই আচরণ করেছিলেন তিনি।

‘আমি ঘুরে দাঁড়াতেই দেখি কয়েকশ মানুষ আমার দিকে তেড়ে আসছে; যা ছিল অবিশ্বাস্য ও ভয়ানক।’ আদালতে আত্মপক্ষ সমর্থনের সময় এসব কথা বলেন পেত্রা।

ওই ঘটনার পর নানা সময় মৃত্যুর হুমকিও পেয়েছেন বলে দাবি করেন পেত্রা।

তার দাবি নাকচ করে দিয়ে বিচারক ইলেস নানাসি বলেন, পেত্রার ব্যবহার ছিল ‘সামাজিক মূল্যবোধের পরিপন্থি’।

বিবিসি জানিয়েছে, তিন বছরের সাজার সময় পেত্রাকে জেলে কাটাতে হবে না। তবে তাকে কিছু শর্ত মেনে নজরদারির মধ্যে থাকতে হবে। যদিও এর বিরুদ্ধে আপিলের ঘোষণা দিয়েছেন পেত্রা।

রায় ঘোষণার সময় পেত্রা আদালতে উপস্থিত ছিলেন না। ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে তিনি শুনানিতে অংশ নেন। সূত্র : বিবিসি।



মন্তব্য চালু নেই