কারখানার বয়লার বিস্ফোরণ

লাশ না পাওয়ায় কষ্ট বাড়ছে স্বজনদের

গাজীপুরের টঙ্গীতে টাম্পাকো ফয়লস লিমিটেড কারখানায় আগুনের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ২৬ জনের মৃত্যুর তথ্য পাওয়া গেছে। আহত অবস্থায় অর্ধশতাধিক শ্রমিক ও পথচারীকে টঙ্গী ৫০ শয্যা বিশিষ্ট সরকারি হাসপাতাল ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।

টঙ্গী ৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে নিখোঁজ শ্রমিকদের সন্ধানে ভিড় করেছে স্বজনরা। লাশ না পেয়ে পাগলপ্রায় স্বজনরা এদিক-ওদিক ছোটাছুটি করছে। সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে লাশ না পেয়ে কষ্ট বাড়ছে স্বজনদের। হাসপাতালের দোতলা ভবনটির নিচতলার এক পাশে গেট আটকানো অবস্থায় মেঝেতে পড়ে আছে বেশ কয়েকটি পোড়া মরদেহ। আর গেটের বাইরে লাশের সন্ধানে ছোটাছুটি করতে দেখা গেছে স্বজনদের।

মেঝেতে পড়ে থাকা মরদেহগুলো পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। দেখে বোঝার উপায় নেই লাশটি কার? মরদেহের ওপরে ছোট কাগজে শনাক্ত হওয়া কয়েকজনের নাম-ঠিকানা ও ছবি সেঁটে দেয়া হয়েছে।

শনিবার বিকালে হাসপাতালের বারান্দায় আনুমানিক ২৫-৩০ বছরের একটি অজ্ঞাত লাশ পড়ে থাকতে দেখা যায়। পরে স্বজনরা এসে লাশটির নাম হোসাইন বলে নিশ্চিত করেন।

হাসপাতালের বাইরে বেশ কয়েকজনকে বিলাপ করতে দেখা যায়। কথা হয় রাজেস বাবু নামের এক স্বজনের সঙ্গে। তিনি জানান, তার ভাই সজীব ওই কারখানায় ১০ হাজার টাকা বেতনে ক্লিনার হিসেবে কাজ করত। নাইট শিফটে কাজ করছিল সজীব। এখন পর্যন্ত খোঁজ মেলেনি তার। ছয় মাস আগে বিয়ে করে সজীব। সন্তানসম্ভবা স্ত্রী বন্যাকে নিয়ে পরিবারের সঙ্গে কেরানিরটেক এলাকায় ভাড়া থাকত সজীব।

আগুনের খবর পেয়ে শনিবার দুপুরে সিলেট থেকে টঙ্গী সরকারি হাসপাতালে স্বজনের খোঁজে আসেন জয়নাল। তার ভাতিজা ওই কারখানায় নাইট শিফটে কাজ করছিল বলে দাবি করেন তিনি। হাসপাতাল ও কারখানায় অনেক খোঁজাখুঁজির পরও নিজের ভাতিজাকে খুঁজে পাননি জয়নাল।

রাজেস ও জয়নালের মতো আরও অনেকে স্বজনদের খোঁজে হাসপাতাল চত্বরে ভিড় করছেন।

শনিবার ভোরে টাম্পাকো ফয়েলস লিমিটেডের কারখানায় বয়লার বিস্ফোরণ ঘটে। বিস্ফোরণের পর কারখানাটিতে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। ২৪ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও আগুন এখনো পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসেনি।



মন্তব্য চালু নেই