লাল মাংসেরও আছে স্বাস্থ্য উপকারিতা

গত দুই দশকে হৃদরোগ থেকে শুরু করে ক্যান্সার পর্যন্ত সকল রোগের জন্যই দোষারোপ করা হচ্ছে লাল মাংসকে। কিন্তু নিরপেক্ষ পর্যালোচনায় প্রমাণিত হয়েছে যে, লাল মাংস ও একটি স্বাস্থ্যকর খাবার। যেকোন খাবারই বেশি খাওয়া ভালো নয় তেমনি লাল মাংসের জন্যও এটি প্রযোজ্য। আপনার শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান সরবরাহ করে লাল মাংস। তাই কিছু পরিমাণে লাল মাংস খাওয়াই যায়। আর কোরবানীর ঈদেতো খাওয়াই হয় লাল মাংস। লাল মাংসের স্বাস্থ্য উপকারিতার কথাই জেনে নিই চলুন।

১। বি ভিটামিন

লাল মাংস ভিটামিন বি ১২ এর চমৎকার উৎস। আর ভিটামিন বি ১২ শরীরের প্রতিটা তন্ত্রের সঠিক কাজের জন্যই অত্যাবশ্যকীয় একটি উপাদান। ভিটামিন বি ১২ এর ঘাটতি হলে বয়স বৃদ্ধি, স্নায়বিক রোগ, মানসিক অসুস্থতা, ক্যান্সার, কার্ডিওভাস্কুলার রোগ এবং বন্ধ্যাত্বের সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে। লাল মাংসে অন্যান্য বি ভিটামিন ও থাকে যেমন- থায়ামিন, রিবোফ্লাভিন, পেন্টোথেনিক এসিড, নায়াসিন, ফোলেট এবং ভিটামিন বি ৬ থাকে। একক কোন খাদ্য থেকে এই ভিটামিন পাওয়া বেশ কঠিন। লাল মাংসের মাধ্যমে এই ভিটামিন পাওয়া সম্ভব।

২। ভিটামিন ডি

যারা প্রচুর তৈলাক্ত মাছ খায়না তাদের জন্য লাল মাংস ভিটামিন ডি এর ঘাটতি পূরণে সাহায্য করে। এছাড়াও লাল মাংসে ভিটামিন ডি মেটাবোলাইট থাকে যাকে ২৫-হাইড্রোক্সিকোলেক্যালসিফেরল বলে। এটি ভিটামিন ডি এর অন্য গঠনের থেকে সহজে ও দ্রুত হজম হয়। ভিটামিন ডি এর ঘাটতির ফলে রিকেটস রোগ হয়ে থাকে। মজার বিষয় হচ্ছে দুধ পান করলেও ভিটামিন ডি এর একই পরিমাণ মাত্রা পাওয়া যায়না। অর্থাৎ মাংসের ভিটামিন ডি মানুষের দেহের জন্য শোষণযোগ্য এবং দরকারি।

৩। আয়রন

লাল মাংসে হেম আয়রন থাকে খুব সহজেই শোষিত হয় এবং এর কার্যকারিতা উদ্ভিদের নন-হেম আয়রনের চেয়ে বেশি। উপরন্তু অল্প পরিমাণে মাংস নন-হেম আয়রনের শোষণেও সাহায্য করে। যাদের আয়রনাধিক্যের জন্য হেরেডিটারি হেমোক্রোমাটোসিস এর সমস্যা আছে তাদের লাল মাংসের মতো উচ্চমাত্রার আয়রনযুক্ত খাবার সীমিত পরিমাণে খাওয়া উচিৎ। কিন্তু যাদের আয়রনের ঘাটতি জনিত সমস্যা অ্যানেমিয়া আছে তাদের জন্য লাল মাংস খাওয়া উপকারী। গর্ভবতী নারীদের জন্য লাল মাংস খাওয়া উপকারী। কারণ গর্ভজাত ভ্রূণের বৃদ্ধি ও উন্নয়নে সাহায্য করে লাল মাংসের আয়রন।

৪। অন্যান্য খনিজ উপাদান

লাল মাংস জিংকের ও চমৎকার উৎস। জিংক এমন একটি খনিজ উপাদান যা শারীরবৃত্তীয় বিভিন্ন কাজের জন্য অপরিহার্য। জিংক ছাড়াও ম্যাগনেসিয়াম, কপার, কোবাল্ট, ফসফরাস, ক্রোমিয়াম, নিকেল এবং সেলেনিয়াম ও থাকে লাল মাংসে।

৫। প্রোটিন

লাল মাংস হচ্ছে প্রোটিনের চমৎকার উৎস। লাল মাংসে সব কয়টি অ্যামাইনো এসিড থাকে যা পেশীর গঠনে ও মেরামতে সাহায্য করে। প্রোটিন দীর্ঘক্ষণ পেট ভরা রাখতেও সাহায্য করে।



মন্তব্য চালু নেই