লতিফের বিষয়ে আশরাফকে ইসির চিঠি

আবদুল লতিফ সিদ্দিকীর সংসদ সদস্য পদ বাতিলের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে তার বিষয়ে দল হিসেবে আওয়ামী লীগের বক্তব্য চেয়ে চিঠি পাঠিয়েছে নির্বাচন কমিশন।

বৃহস্পতিবার আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের পাশাপাশি লতিফ সিদ্দিকীর বক্তব্য চেয়েও চিঠি গেছে ইসির।

দল ও মন্ত্রিসভা থেকে বহিষ্কৃত লতিফ সিদ্দিকীর সংসদ সদস্য পদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর চিঠি পাওয়ার পর এটাই সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটির প্রথম পদক্ষেপ।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইসি সচিব মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, “কমিশনের অনুমোদন সাপেক্ষে দুজনের বক্তব্য নিতেই এ চিঠি পাঠানো হয়েছে।”

বিশেষ বাহক মারফত পাঠানো চিঠির জবাব পাওয়ার পর সৈয়দ আশরাফ ও লতিফ সিদ্দিকীকে নিয়ে শুনানি করবে ইসি।

ইসির আইন শাখার কর্মকর্তারা জানান, দুজনকে দুই সপ্তাহের মধ্যে নিজেদের বক্তব্য লিখিত আকারে কমিশন সচিবের কাছে পাঠাতে বলা হয়েছে।

লতিফ সিদ্দিকীর ঢাকা ও টাঙ্গাইলের বাসার ঠিকানায় এবং আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদকের চিঠি দলীয় ঠিকানায় পাঠানো হয়েছে।

সংসদ সদস্য (বিরোধ নিষ্পত্তি) আইন অনুযায়ী, স্পিকার কোনো সংসদ সদস্যের আসন শূন্য ঘোষণার বিষয়ে ইসিকে চিঠি দিলে পরবর্তী ১৪ দিনের মধ্যে তা বিরোধ উপস্থাপনকারী ও যার বিরুদ্ধে বিরোধ উপস্থাপন হয়েছে, উভয়পক্ষকে জানানো হয়।

তাদের কোনো বক্তব্য থাকলে তা জানতে ইসি নির্ধারিত সময় বেঁধে দেয়। এরপর উভয় পক্ষের শুনানি করা হবে। পরে সবকিছু পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত দেবে ইসি।

আওয়ামী লীগ সংসদ সদস্য লতিফ সিদ্দিকী ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী ছিলেন। গত সেপ্টেম্বরে হজ নিয়ে করা এক মন্তব্য নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হলে তাকে দল থেকে বহিষ্কার এবং মন্ত্রিসভা থেকে বাদ দেওয়া হয়।

লতিফ সিদ্দিকীকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে স্পিকারকে জানানো হলে তিনি এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে গত সোমবার সিইসিকে চিঠি পাঠান।

৬ পৃষ্ঠার ওই চিঠিতে লতিফ সিদ্দিকীর সদস্য পদ বাতিলের বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের চিঠিও যুক্ত করেন স্পিকার।

সৈয়দ আশরাফের ওই চিঠিতে বলা হয়, ২০১৪ সালে ২৪ অক্টোবর আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সভায় দলের গঠনতন্ত্র অনুসারে লতিফ সিদ্দিকীকে চূড়ান্তভাবে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত হয়।

যেহেতু লতিফ সিদ্দিকীর আওয়ামী লীগের প্রাথমিক সদস্যপদ নেই, সেহেতু তাকে জাতীয় সংসদ সদস্য পদেও বহাল রাখা সমীচীন হবে না, বলা হয় ওই চিঠিতে।

সংবিধানের ৬৬ (৪) দফা ও জাতীয় সংসদের কার্যপ্রণালী বিধির ১৭৮ বিধি অনুযায়ী টাঙ্গাইল-৪ আসনের নির্বাচিত সংসদ সদস্য লতিফ সিদ্দিকীর সদস্য পদের বিরোধ নিষ্পত্তি করার উদ্যোগ নেন স্পিকার।

ইসি কর্মকর্তারা জানান, অষ্টম সংসদে কিশোরগঞ্জের বিএনপি সাংসদ আখতারুজ্জামানেরও একই রকম অবস্থা হয়েছিল। ওই নজিরকে সামনে রেখে কমিশন আইন-বিধি পর্যা‌লোচনা করছে।

২০০০ সালে অষ্টম সংসদে বিএনপি থেকে নির্বাচিত কিশোরগঞ্জ-২ আসনের তৎকালীন এমপি মো. আখতারুজ্জামানকে শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিলো।

তখন ওই আসনটি শূন্য ঘোষণার জন্য স্পিকার হুমায়ুন রশীদ চৌধুরীকে অনুরোধ করেছিলেন তৎকালীন বিরোধীদলীয় প্রধান হুইপ খোন্দকার দেলোয়ার হোসেন।

তখনও সিইসির কাছে চিঠি পাঠিয়েছিলেন তৎকালীন স্পিকার। এরপর শুনানি করেই আখতারুজ্জামানের সংসদ সদস্য পদ শূন্য ঘোষণা করে ইসি।

ইসি সচিব সিরাজুল ইসলাম বলেন, “প্রাথমিকভাবে জবাব দেওয়ার জন্য চিঠি পাঠানো হল। ঈদের পরে পরবর্তী কার্যক্রম নেওয়া হবে।”



মন্তব্য চালু নেই