লতা-পাতা খেয়ে বেঁচে আছে মাদায়ার লোকজন

সিরিয়ার অবরুদ্ধ মাদায়া শহরের প্রায় ৪০ হাজার লোক ঘাস, লতা-পাতা খেয়ে বেঁচে আছে। ক্ষুধার্ত মানুষের হাত থেকে রেহাই পায়নি শহরের সব কুকুর-বিড়ালও। লেবানন সীমান্ত সংলগ্ন শহরটিতে ইতিমধ্যে অনাহারে ২৩ জন লোক মারা গেছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ।

রাজধানী দামেস্ক থেকে ২৫ কিলোমিটার উত্তর পশ্চিমে এবং লেবানন সীমান্তের মাত্র ১১ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত মাদায়া শহরটি বেশ কয়েক মাস ধরেই সরকারি বাহিনী এবং হিজবুল্লাহ’র নিয়ন্ত্রণে। শহরটিতে সর্বশেষ গত অক্টোবরে ত্রান সহায়তা পাঠানো হয়েছিল। অবরুদ্ধ শহরটির পরিস্থিতি বর্তমানে ভয়াবহ বলে জানাচ্ছে আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থাগুলো।

জাতিসংঘ বলছে সিরিয়ার মাদায়া শহরে মানবিক সহায়তা সরবরাহে সম্মত হয়েছে দেশটির সরকার।

আব্দুল ওয়াহাব আহমেদ নামে মাদায়ার একজন বাসিন্দা জানান, না খেতে পেরে দু`জন লোক বৃহস্পতিবার সেখানে মারা গেছে। সরকারী বাহিনী ও হিজবুল্লাহ যোদ্ধারা শহরটিতে অবরোধ আরোপের পর থেকে এ পর্যন্ত অন্তত ৬০ জন মানুষ মারা গেছে।

তিনি বলেন, ‘দু`শো দিন ধরে মাদায়া অবরুদ্ধ হয়ে আছে। আজ দু`জন মারা গেছে। এখানকার লোকজন এখন মাটি-ঘাস-গাছের পাতা খাচ্ছে কারণ খাবার আর কিছু নাই। শীতের কারণে পরিস্থিতিও ভয়াবহ আকার নিয়েছে। ঘাস-পাতাও শুকিয়ে যাচ্ছে।’

আব্দুল রহমান নামে শহরের আরেক বাসিন্দা জানিয়েছেন, শহরে কোনো কুকুর-বিড়াল জীবিত নেই। এমনকি গাছের যেসব লতা-পাতা খাওয়া হচ্ছে তাতেও সংকট দেখা দিয়েছে।

যদিও সেখানকার কত মানুষ না খেতে পেয়ে মারা গেছে সে বিষয়ে নিশ্চিত তথ্য জানা যাচ্ছে না । তবে যুক্তরাজ্যভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস জানিয়েছেন, অবরোধের কারণে শহরের ২৩ জন মানুষ মারা গেছে। এদের মধ্যে শিশুও রয়েছে।

আন্তর্জাতিক দাতব্য সংস্থা সেভ দা চিলড্রেন জানিয়েছে, মাদায়ায় যদি জরুরী ভিত্তিতে খাবার, চিকিৎসা সামগ্রী, জ্বালানীসহ জরুরী সামগ্রী পৌঁছানো না যায় তাহলে আরও শিশু মৃত্যুর ঘটনা ঘটবে সামনে।

এদিকে বৃহস্পতিবার জাতিসংঘ জানিয়েছে, সিরিয়ার সরকার মাদায়ায় মানবিক সাহায্য পৌঁছাতে রাজী হয়েছে। কোনো ঝামেলা না হলে সোমবারের মধ্যে সেখানে সাহায্য সামগ্রী নিয়ে ট্রাক পৌঁছাতে পারবে।



মন্তব্য চালু নেই