রোহিঙ্গা নির্যাতনের ভিডিও : অভিযুক্ত একাধিক পুলিশ গ্রেফতার

মিয়ানমারে রোহিঙ্গা মুসলিমদের ব্যাপক নির্যাতনের একটি ভিডিও প্রকাশিত হওয়ার পর অভিযুক্ত কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সোমবার দেশটির সরকার এ তথ্য জানিয়েছে।

সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা নির্যাতনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক সমালোচনা ও প্রতিবাদ হলেও এই প্রথম সেদেশের সরকার সন্দেহভাজন অভিযুক্তদের গ্রেফতার করলো।

গত বছরের অক্টোবরের শুরুতে রাখাইনে সীমান্তরক্ষী বাহিনীর পোস্টে সন্ত্রাসী হামলার পর সন্দেহভাজনদের ধরতে নিরাপত্তা বাহিনী অভিযান শুরু করে। এর পর ব্যাপক নির্যাতনের মুখে হাজার হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে।

বাংলাদেশ বলছে, গত দুই মাসে অন্তত ৫০ হাজার রোহিঙ্গা সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে ঢুকেছে। এদের অনেকেই মিয়ানমার নিরাপত্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে ধর্ষণ, হত্যা, বাড়ি-ঘর পুড়িয়ে দেয়ার অভিযোগ এনেছে। রোহিঙ্গা নির্যাতনের জেরে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।

এ ছাড়া রোহিঙ্গা নির্যাতনের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ না নেয়ায় মিয়ানমারের নেত্রী ও দেশটির ক্ষমতাসীন দল এনএলডির প্রধান অং সান সু চির বিরুদ্ধে বিক্ষোভও হয়েছে।

সু চির সরকার বলছে, সীমান্তের পুলিশ পোস্টে প্রাণঘাতী হামলাকারীদের ধরতে সেনাবাহিনী অভিযান চালাচ্ছে। একই সঙ্গে নৃশংস নির্যাতনের অভিযোগ নাকচ করে দিলেও সোমবার বিরল পদক্ষেপ নিয়েছে দেশটির সরকার। গত ৫ নভেম্বর কোটানকক গ্রামে ‌‌‘ক্লিয়ারেন্স অপারেশনস’ চালানোর সময় রোহিঙ্গা নির্যাতনে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার অঙ্গীকার করেছে কর্তৃপক্ষ। এ ঘটনার একটি ভিডিও প্রকাশের পর অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানায় মিয়ানমার সরকার।

সু চির অফিস থেকে অভিযুক্ত চার পুলিশ কর্মকর্তার নাম প্রকাশ করা হয়েছে। এদের মধ্যে জও মিও এইচটিকে নামের এক পুলিশ কনস্টেবল রয়েছেন; যিনি রোহিঙ্গাদের নির্যাতনের ‘সেলফি ভিডিও’ করেছেন।

এক বিবৃতিতে সু চির অফিস বলছে, প্রাথমিকভাবে সনাক্তদের গ্রেফতার করা হয়েছে। ওই গ্রামে অভিযান চালানোর সময় রোহিঙ্গাদের মারধরকারী অন্যান্য পুলিশ কর্মকর্তাদের পরিচয় জানতে তদন্ত শুরু হয়েছে।

অক্টোবরে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীর নৃশংস নির্যাতনের এক ডজনেরও বেশি ভিডিও প্রকাশিত হয়েছে। কিন্তু এই প্রথম দেশটির সরকার অভিযুক্ত নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানালো।

সূত্র : চ্যানেল নিউজ এশিয়া।



মন্তব্য চালু নেই