রোহিঙ্গাদের ত্রাণবাহী জাহাজ মিয়ানমারে, বৌদ্ধদের বিক্ষোভ

রোহিঙ্গা মুসলিমদের সহায়তা দিতে ত্রাণবাহী মালয়েশিয়ার একটি জাহাজ মিয়ানমারের ইয়াঙ্গুনে পৌঁছেছে। ত্রাণবাহী জাহাজ বন্দরে নোঙর করলে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা প্রতিবাদ জানিয়েছে। তবে মিয়ানমার সরকারের সমাজকল্যাণ মন্ত্রী ত্রাণবাহী জাহাজকে স্বাগত জানিয়েছেন।

৯ ফেব্রুয়ারি মিয়ানমারের বাণিজ্যিক রাজধানী থিলাওয়া আন্তর্জাতিক বন্দরে নোঙর করে মালয়েশিয়ার ত্রাণবাহী জাহাজ নটিক্যাল আলিয়া।

মালয়েশিয়ার ওই জাহাজে রোহিঙ্গাদের জন্য ৩৫৮ টন খাবার, ওষুধ ও পোশাক রয়েছে। দেশটির সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নেতৃত্বাধীন একটি প্রতিনিধিদল জাহাজে মালয়শিয়ান কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। মালয়েশিয়া সরকারের উপ-পররাষ্ট্র মন্ত্রী রিজাল মার্শা ন্যায়না ত্রাণবাহী জাহাজের নেতৃত্ব দিয়েছেন। তিনি বলেন, এই উদ্যোগ আসিয়ান দেশগুলোর মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়নে কাজ করবে।

এ সময় বন্দর এলাকায় ৭০ জন বৌদ্ধ সন্ন্যাসী ও স্থানীয়রা প্রতিবাদ জানিয়ে স্লোগান দেয়। অনেকের হাতে রোহিঙ্গাবিরোধী পোস্টারও দেখা যায়। মিয়ানমারের ভিক্ষু ইউনিয়নের নেতা থুসেইট্টা বার্তাসংস্থা এএফপিকে বলেন, আমরা তাদেরকে বলতে চাই যে, আমাদের এখানে কোনো রোহিঙ্গা নেই। অবশ্য মিয়ানমার সরকার ঘোষণা দিয়েছে, ত্রাণগুলো রাখাইন রাজ্যে বিতরণ করা হবে।

রাখাইন রাজ্যে বসবাস করে আসলেও লাখ লাখ রোহিঙ্গা মুসলিমকে নাগরিকত্ব দেয়নি মিয়ানমার। দেশটির কট্টরপন্থী বৌদ্ধরা বিভিন্ন সময়ে তাদের ওপর নারকিয় নির্যাতন চালিয়ে আসছে।

গত বছরের অক্টোবরে মিয়ানমার সীমান্তে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীর চেকপোস্টে সন্ত্রাসী হামলায় ৯ পুলিশ সদস্যের মৃত্যুর পর রোহিঙ্গাবিরোধী অভিযান শুরু করে সেনাবাহিনী। জাতিসংঘ রাখাইনে সেনাবাহিনীর অভিযানকে রোহিঙ্গা নিধনের চেষ্টা বলে সতর্ক করে দিয়েছে। মিয়ানমার সেনাবাহিনীর কঠোর অভিযানের মুখে কয়েক লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছেন। রোহিঙ্গারা বলছেন, তারা রাখাইনে সেনাবাহিনীর বর্বর নির্যাতন, ধর্ষণ ও গণহত্যার শিকার হচ্ছেন।

রাখাইনে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে মিয়ানমারের অভিযানের তীব্র প্রতিবাদ দেখা গেছে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক জোট এশিয়ানভূক্ত দেশগুলোর মধ্যে। মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাক মিয়ানমার সেনাবাহিনীর অভিযানের কেঠোর সমালোচনা করছেন। মালয়েশিয়ার ত্রাণবাহী জাহাজকে রাখাইনের রাজধানী সিট্টওয়ে’তে প্রাথমিকভাবে নোঙ্গর করতে দেয়নি মিয়ানমার। পরে সেটি ইয়াঙ্গুনে পৌঁছেছে।

আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা, আনান কমিশন, জাতিসংঘ ও ঢাকাস্থ বিদেশি কূটনীতিকরা একমত হয়েছেন যে, রাখাইন রাজ্যে গণহত্যার মতো কিছু হয়েছে। এটা গনহত্যার সামিল।



মন্তব্য চালু নেই