রোবট জন্ম দেবে রোবট!

রোবটের একটি আধুনিক সংস্করণ তৈরি করেছেন একদল বিজ্ঞানী। এই রোবট নতুন রোবট জন্ম দিতে পারবে। এছাড়া মানুষের সাহায্য ছাড়াই এটি তার নিজের দক্ষতা এবং কর্মক্ষমতা আরও বাড়াতে পারবে এবং নিজের চেষ্টাতেই খাপ খাইয়ে নিতে পারবে চারপাশের পরিবেশের সঙ্গে।

শুনতে সায়েন্স ফিকশন মনে হলেও বাস্তবে এমনই এক ‘মাদার রোবট’ তৈরি করা হয়েছে। ক্যামব্রিজ এবং জুরিখের একদল প্রকৌশলী এবং বিজ্ঞানীদের সম্মিলিত প্রচেষ্টার ফসল হচ্ছে নতুন এই রোবটটি। সম্প্রতি ‘পিএলওস ওয়ান’ নামের এক জার্নালে প্রকাশিত গবেষণা নিবন্ধ থেকে এ খবর জানা গেছে।

প্রকৌশলীদের তৈরি এই নতুন রোবট ক্রমশ নিজেই নিজের বুদ্ধিমত্তা বাড়াতে পারে। তবে বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী থেকে যারা ধারণা করছেন যে এরকম রোবট একদিন মানুষকে পরাস্ত করে পৃথিবীর দখল নিয়ে নেবে, তাদের আশ্বস্ত করেছেন বিজ্ঞানীরা। তারা বলছেন, কিভাবে মানুষের সাহায্য ছাড়াই রোবট তার চারপাশের পরিবেশের সঙ্গে নিজেকে খাপ খাইয়ে নিতে পারে এটিই হচ্ছে এই গবেষণা প্রকল্পটির মূল লক্ষ্য।

বিজ্ঞানীদের তৈরি করা মাদার রোবট আপাতত যে শিশু রোবট তৈরি করছে তা আসলে প্লাস্টিকের কিছু কিউব ছাড়া আর কিছু নয়। এর ভেতরে আছে একটা মোটর। মাদার রোবট এই বেবি রোবট কতটা নড়াচড়া করে তা পর্যবেক্ষণ করে। এরপর সেই অনুযায়ী পরের প্রজন্মের রোবট তৈরি করে যা আগেরটির চেয়ে একধাপ উন্নত। এভাবে ধাপে ধাপে এপর্যন্ত দশ প্রজন্ম পর্যন্ত নতুন রোবট তৈরি করেছে মাদার রোবট। যাদের প্রত্যেকটি কর্মক্ষমতার দিক দিয়ে আগেরটিকে ছাড়িয়ে গেছে।

robot2ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ডক্টর ফুমিয়া লিডা বলেছেন, জীববিজ্ঞানের সবচেয়ে বড় রহস্য হচ্ছে কিভাবে বুদ্ধির বিকাশ ঘটেছে। এই গবেষণার একটা লক্ষ্য সেই রহস্য ভেদ করা। তিনি বলেন, ‘রোবট মূলত একই কাজ বার বার করতে পারে। কিন্তু তারা পরিবর্তিত পরিস্থিতির সঙ্গে নিজেদের খাপ খাওয়াতে পারে না। কিন্তু আমরা যে রোবট তৈরি করতে চাই, তার থাকবে একই সঙ্গে উদ্ভাবনী ক্ষমতা এবং সৃজনশীলতা।’

উদাহরণ দিতে গিয়ে তিনি বলেছেন,‘যেমন ধরুণ, আমাদের রোবট প্রথমে একটা কারখানায় তৈরি হওয়া গাড়ীর খুঁত খুঁজে বের করবে। তারপর নিজে নিজেই সেই ত্রুটি সারিয়ে তুলবে সে।’ উন্নত জাতের ফসল উৎপাদনেও ব্যবহার করা যাবে এই রোবটকে।

লিডা আরো বলেছেন, ‘আমাদের এখন এ বিষয়ে নিশ্চিত হতে হবে আমরা সাইন্স ফিকশন ছবিগুলোতে দেখানো রোবট তৈরি করব কিনা। আমরা এখনো সে রকম রোবট তৈরি করতে পারিনা। কিন্তু আমরা চাইলে আগামী ৩০ বছরের মধ্যে ওইসব আধুনিক রোবট তৈরি করতে পারব।’ লিডা নিজেও কিন্তু কল্প কাহিনীতে দেখানো রোবট থেকেই অনুপ্রেরণা খুঁজে পান।



মন্তব্য চালু নেই