রোকেয়া বিশবিদ্যালয়ে হল, ক্যাফেটেরিয়া সহ চার দফা দাবিতে বিক্ষোভ-সমাবেশ

রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবি) চলমান আন্দোলনের অংশ হিসেবে মানববন্ধন-বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে একাংশ। ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষা গ্রহণ,হল,ক্যাফেটোরয়া এবং শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরিয়ে আনার দাবিতে আজ রবিবার বেলা ১১ টা থেকে ১ টা পর্যন্ত ২ ঘন্টা ব্যাপী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।।

সমাবেশ শেষে বিক্ষোভ মিছিলটি কবি হেয়াত মামুদ ভবনের সামনে থেকে উপাচার্যের বাসভবনের দিকে গিয়ে প্রশাসনিক ভবনের উত্তর গেইট সংলগ্ন প্রধানমন্ত্রীর নামফলকে এসে শেষ হয়।এতে কয়েকশত শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে।এ সময় বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা বক্তব্য পেশ করেন।

বিক্ষোভ মিছিল অপসারণ সমাবেশ থেকে সাধারণ শিক্ষার্থীরা দ্রুত উপাচার্যকে অপসারণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরিয়ে আনার দাবি জানান। শিক্ষার্থীরা বলেন, যে উপাচার্য ক্যাম্পাসে উপস্থিত না থেকে উদ্ভুত সমস্যা সমাধান না করে দিনের পর দিন ঢাকায় অবস্থান কওে বিশ্ববিদ্যালয় স্বাভাবিক আছে বলে মন্তব্য করেন তাঁর ক্যাম্পাসে থাকার কোনো যোগ্যতা নেই। যে উপাচার্য সন্ত্রাসী দিয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের উপর হামলা চালাতে পারে তাঁর মতো নির্লজ্জ উপাচার্য আমরা চাইনা।

সমাবেশে বক্তারা আরো বলেন, ২০১৪-১৫ ইং শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত না হওয়ার জন্য এককভাবে উপাচার্যই দায়ী। তিনি শিক্ষকদের সাথে কোনো ধরনের আলোচনা ছাড়াই একক সিদ্ধান্তে ভর্তি পরীক্ষা স্থগিত করেছেন। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় সহ দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা হয়ে গেলেও এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা এখনো অনিশ্চিত।শুধু উপাচার্যের উদাসীনতার কারনেই বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগে সৃষ্টি হয়েছে প্রায় এক বছরের সেশনজট সহ অচলাবস্থার।

ছাত্রদের আবাসিক হল,ক্যাফেটেরিয়া ও মসজিদ নির্মান কাজ (প্রকল্প শেষ হয়েছে ৩০-০৬-২০১৪)শেষ হলেও অজ্ঞাত কারনে শিক্ষার্থীদের জন্য সেগুলো খুলে দেওয়া হচ্ছেনা। উপাচার্য এককভাবে বিশ্ববিদ্যালয়কে জিম্মি করে শিক্ষার্থীদের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে পারেনা বলেও সমাবেশে শিক্ষার্থীরা এ সব কথা বলেন।

সমাবেশে শিক্ষার্থীরা বলেন,উপাচার্য নূর-উন নবী কে রেখে বিশ্ববিদ্যালয়ে চলমান সমস্যা সমাধান করা সম্ভব নয়। এই উপাচার্য থাকা পর্যন্ত ক্যাম্পাসে কোনো কাজ সুষ্ঠুভাবে হবেনা। উপাচার্য এককভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ে হাজার হাজার শিক্ষার্থীকে জিম্মি করে রাখতে পারেনা। একই সঙ্গে ভর্তিচ্ছুক ৯০ হাজারের বেশি শিক্ষার্থীর জীবন নিয়ে তিনি খেলতে পারেন না।তাঁকে অতিদ্রুত অপসারণ করে বিশ্ববিদ্যালয় সচল করা হোক।
মহামান্য রাষ্ট্রপতি,প্রধানমন্ত্রী,শিক্ষামন্ত্রী এবং সরকারের উচ্চ পর্যায়ে আলোচনা করে দ্রুত সমস্যা সমাধানে ব্যাবস্থা নেওয়ার জন্য অনুরোধ জানায় শিক্ষার্থীরা। এ বিষয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিয়ে উপাচার্য নূর-উন নবী কে অপসারন করে একজন যোগ্য, দক্ষ এবং সৎ ব্যাক্তিকে নিয়োগের মাধ্যমে চলমান সমস্যা নিরসনে ব্যাবস্থা নিতে অনুরোধও করেন শিক্ষার্থীরা।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার সমাবেশে বক্তারা সাধারণ শিক্ষার্থীদের ২০১৪-১৫ইং শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষা গ্রহণ, হল ,ক্যাফেটেরিয়া ,শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ এই চার দফা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তালা না খোলার সিদ্ধান্তে আন্দোলন চালিয়ে যাবার ঘোষণা দেন।কেউ তালা খোলার চেষ্টা করলে তার সমুচিত জবাব দেওয়ারও ঘোষণা দেন বক্তারা।

বক্তারা বলেন, ২টি হল,ক্যাফেটেরিয়া নির্মান সম্পন্ন হলেও তা খুলে দেওয়া হচ্ছেনা।আমাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তালা খুলতে দিবনা।
৮ই মার্চ পার্কের মোড়ে এলাকাবাসীর উদ্যোগে আয়েজিত গণ সমাবেশ থেকে ৫ দিনের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের তালা ভেঙে বিশ্ববিদ্যালয় সচল রাখার হুমকি দেওয়া হয়েছিল।তারই পরিপ্রেক্ষিতে গত বৃহস্পতিবার এই বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দেয় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের একাংশ।

গত ২৬ জানুয়ারি ২০১৪-১৫ ইং শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষা গহণ,হল,ক্যাফেটেরিয়া, শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ এই চার দফা দাবি আদায়ে উপাচার্যের নিকট স্মারকলিপি দেয় সাধারণ শিক্ষার্থীদের একাংশ। পরে দাবিগুলো আদায় না হলে ২ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সবকটি একাডেমিক ভবনে তালা লাগিয়ে অনির্দিষ্টকালের সর্বাত্মক ছাত্র ধর্মঘটের ডাক দেয়া হয় যা ৪২ দিনের মতো আজো চলছে।

এছাড়াও ৫ মার্চ থেকে ১১ দিন ধরে চলছে শিক্ষক-শিক্ষার্থী,কর্মকর্তা-কর্মচারিদের সমন্বয়ে গঠিত ‘সমন্বিত অধিকার বাস্তবায়ন পরিষদ’ এর পুলিশ ফাঁড়ির সামনে গণ অবস্থান ।



মন্তব্য চালু নেই