রোকেয়া পদক প্রদান করলেন প্রধানমন্ত্রী

ফ্যাশন ডিজাইনার বিবি রাসেল ও কবি তাইবুন নাহার রশীদকে (মরণোত্তর) বেগম রোকেয়া পদক দেওয়া হয়েছে। বুধবার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে তাদের এ পদক দেওয়া হয়।

প্রয়াত তাইবুন নাহারের পক্ষে তার ছেলে আলী আজগর খুরশীদ পদক গ্রহণ ক‌রেন। পরে প্রধানমন্ত্রী বিবি রাসেলের গলায় পরিয়ে দেন রোকেয়া পদক। প্রত্যেকে এক লাখ টাকা, ১৮ ক্যারেট মানের ২৫ গ্রাম ওজনের একটি স্বর্ণপদক এবং একটি সম্মাননাপত্র পান। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ পুরস্কার প্রদান করেন।

অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ বিশ্বে একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে সফল হয়েছে। আজ নারীরা তাদের অবস্থান করে নিতে পেরেছে। যা ছিল বেগম রোকেয়ার স্বপ্ন। সে সময় এমন অবস্থা ছিল কোনো নারী পড়া-লেখা করছে এটা জানা-জানি হলে বাবা-মাকে পর্যন্ত হেয় প্রতিপন্ন হতে হতো।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা আমাদের পথ দেখিয়ে গেছেন। স্বাধীনতার পর জাতির পিতা নারীদের জন্য সংরক্ষিত আসনের ব্যবস্থা করেন। চাকরির ক্ষেত্রে তিনি মেয়েদের জন্য কোটার ব্যবস্থা করেছিলেন। সব সময় তিনি একটি কথা বলতেন, ‘একটা মেয়ে যখন টাকা আয় করে বাড়িতে ফেরে তখন তার কথার একটা দাম থাকে’। আজ সেই অবস্থা সৃষ্টি করার সুযোগ এসেছে।

এর আগে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় মঙ্গলবার রোকেয়া পদকের জন্য বিবি রাসেল ও তাইবুন নাহারের নাম ঘোষণা করে। নারীর উন্নয়ন ও ক্ষমতায়নসহ দ‌রিদ্র ও অসহায় নারী সমা‌জের উন্নয়‌নে গুরুত্বপূর্ণ অবদা‌ন এবং সমাজ‌সেবায় গঠনমূলক ভূ‌মিকা রাখার জন্য এবছর এই পদক পেলেন তাইবুন নাহার রশীদ। আর দেশীয় উপাদা‌নে পোশাকের নান্দনিক নকশায় অবদানের স্বীকৃ‌তি হিসাবে বি‌বি রা‌সেল এ পুরষ্কারে ভূষিত হন।

বিবি রাসেল ১৯৫০ সালে চট্টগ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম মোখলেসুর রহমান সিধু এবং মাতা সামসুন নাহার রহমান। তিনি ১৯৬৭ সালে গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজ থেকে এইচএসসি এবং ১৯৭৫ সালে ফ্যাশন ডিজাইনে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। বিবি রাসেল বাংলাদেশের পোশাকশিল্পের উন্নয়ন, ঐতিহ্যবাহী তাঁতশিল্প ও তাঁতীদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে কাজ করার জন্য খ্যাতি অর্জন করেছেন। দেশীয় উপাদানে নান্দনিক পোশাক ডিজাইনের অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ২০০৯ সালে বাংলা একাডেমি তাকে সম্মানসূচক ফেলোশিপ দেয়। এছাড়া দেশি বিদেশি বিভিন্ন সংস্থা-প্রতিষ্ঠান থেকে ফেলোশিপ ও সম্মাননা পেয়েছেন। পরিচ্ছদ ডিজাইনের জন্য বিবি রাসেল ২০১০ সালে বাংলাদেশ জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান।

তাইবুন নাহার রশীদ ১৯১৯ সালের ৫ মে ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি দেশ-বিদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ও উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন করেন।১৯৪৭ সালে জলপাইগুড়ি মুসলিম মহিলা সমিতির প্রতিষ্ঠাতা ও কর্মসচিব হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তিনি ১৯৫২-এর ভাষা আন্দোলন, ১৯৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান ও ১৯৯০-এর স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। তাইবুন নাহার ১৯৯৫ হতে ২০০০ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ মহিলা সমিতির সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। এ ছাড়া তিনি ২০০৩-০৫ পর্যন্ত ডিওএইচএস মহিলা সমিতি, ক্যান্টনমেন্টের সভাপতি এবং শতদল লায়ন ক্লাব, ঢাকার সভাপতি ছিলেন।



মন্তব্য চালু নেই